নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস ইস্যুতে ধীরে চলো নীতি নিয়ে চলতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। ডুপ্লিকেট এপিক কার্ড বা ভুয়ো ভোটারে বিষয়টিই তৃণমূলের কাছে বর্তমানে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। আগামী বছর রাজ্যের বিধানসভা ভোট। তার আগে চলতি বছরের মধ্যেই ভুয়ো ভোটারের সমস্যা সমাধান করাতেই রাজ্যের শাসকদল অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
সম্প্রতি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দেশের কয়েকজন অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী ও প্রাত্তন মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাসের বিষয়টিতে সতর্ক করেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন। আগামী ২২ মার্চ চেন্নাইতে এই ইস্যুতে বৈঠকে তৃণমূল নেত্রীকে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন তিনি। মমমতার অবশ্য সেই সময়ে লন্ডন সফর রয়েছে, তাই তিনি নিজে চেন্নাইয়ের বৈঠকে থাকতে পারবেন না। পরিবর্তে তৃণমূলের কোনও উচ্চপর্যায়ের নেতাকে তিনি সেই বৈঠকে পাঠাতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
স্ট্যালিনের আমন্ত্রণে সৌজন্য রক্ষায় প্রতিনিধি পাঠানো হলেও আসন পুনর্বিন্যাস ইস্যু নিয়ে এখনই তৃণমূল মাঠে নামতে চাইছে না। এ প্রসঙ্গে দলের এক বর্ষীয়ান সাংসদ বলেন, "আগামী বছর বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ডুপ্লিকেট এপিক কার্ডের বিষয়টিই আমাদের কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। একই এপিক নম্বরে বাংলার ভোটার ও ভিন রাজ্যের ভোটারদের নাম রয়েছে। এমনকী, বাংলার আলাদা আলাদা জেলাতেও একই এপিক নম্বরে একাধিক ভোটার রয়েছে। এই সংখ্যা কত সেটা নির্বাচন কমিশন আমাদের এখনও জানাতে পারেনি। কবে জানাবে সেটাও স্পষ্ট করেনি। তিন মাসের মধ্যে এই বিষয়টির সমাধান করবে বলে কমিশন বলেছে ঠিকই, কিন্তু কাজটা কত বড় সেটা না জেনেই কীভাবে সময়সীমার কথা কমিশন বলছে সেটাও বড় প্রশ্ন। বিধানসভা ভোটের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা তৈরির আগেই ডুপ্লিকেট এপিক কার্ডের বিষয়টির সমাধান করাই আমাদের এখন প্রধান কাজ।" আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে তৃণমূলের ভাবনাচিন্তা রয়েছে, তবে তাতে দেরি রয়েছে বলে এখনই তৃণমূল এ বিষয়ে তড়িঘড়ি কিছু করবে না বলেও জানিয়েছেন বর্ষীয়ান সাংসদ।
মমতাকে লেখা চিঠিতে সীমানা পুনর্বিন্যাসের ফলে বিরোধীশাসিত রাজ্যগুলির লোকসভার আসন কমতে পারে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্ট্যালিন। তিনি লিখেছেন, ২০২৬ সালের পরে যদি কেবল জনসংখ্যার পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে সংসদীয় আসন বণ্টন করা হয় তবে তামিলনাড়ু, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, কর্নাটক, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং পাঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলি প্রতিকূলভাবে প্রভাবিত হতে পারে। বিরোধী রাজ্যগুলিকে প্রতিরোধের আহবান জানিয়েছেন স্ট্যালিন।