সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হঠাৎ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়লেন বিপ্লব দেব (Biplab Kumar Deb)। শনিবার দুপুরে রাজ্যপালের কাছে নিজের ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। তবে ঠিক কী কারণে ইস্তফা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। নিজের ইস্তফাপত্রে পদত্যাগের কোনও কারণও তিনি উল্লেখ করেননি। এক লাইনের ইস্তফাপত্রে বিপ্লব দেব আজ থেকেই তাঁর ইস্তফা গ্রাহ্য করতে অনুরোধ করেছেন।
ইস্তফার পর বিপ্লব দেব জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মার্গদর্শন অনুযায়ী এতদিন কাজ করে চলেছেন। তবে এবার দল তাঁকে সংগঠনের কাজে লাগাতে চায়। ত্রিপুরার (Tripura) বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “দল চাইছে ২০২৩ নির্বাচনের আগে সংগঠনের শক্তি বাড়াতে। দীর্ঘ সময় সরকারে থাকার জন্য সংগঠনের শক্তি বাড়ানোর দরকার। সংগঠন থাকলে তবেই সরকার থাকবে। তাই দল আমাকে সংগঠনে কাজে লাগাতে চাইছে।” বিপ্লবের কথায় এদিন কোথাও যেন আক্ষেপের সুর শোনা গেল। তিনি বললেন, “এতদিন প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে আমি কাজ করে এসেছি। আমি ত্রিপুরায় ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছি। এবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ইচ্ছাতেই সংগঠনের কাজ করব।”
[আরও পড়ুন: কাশীপুর কাণ্ড: জুয়ায় টাকা খুইয়েই অবসাদ, অর্জুনের ঝুলন্ত দেহের পকেটে ছিল মাত্র ৫০০ টাকা]
বিজেপি (BJP) সূত্রের খবর, প্রকাশ্যে কিছু না হলেও ত্রিপুরা বিজেপির অন্দরে দীর্ঘদিন ধরেই দক্ষযজ্ঞ চলছিল। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, সুদীপ রায় বর্মণ-সহ কয়েকজন বিধায়কের দলত্যাগ এবং প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া বিপ্লবের বিরুদ্ধে ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করেছে। শুক্রবার থেকেই অবশ্য ত্রিপুরায় বিপ্লবের ‘অপসারণে’র প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শুক্রবারই অমিত শাহর (Amit Shah) সঙ্গে দেখা করেছেন বিপ্লব। তারপর ত্রিপুরায় কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক ভুপেন্দ্র যাদব-সহ সহ পর্যবেক্ষকরা ত্রিপুরায় পৌঁছে গিয়েছেন। শনিবারই নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা হয়ে যেতে পারে।
[আরও পড়ুন: ‘বামপন্থা ফিরে আসুক, রাজ্যের মানুষ চাইছে না’, ফের তৃণমূলের সঙ্গে জোটের পক্ষে সওয়াল লিবারেশনের!]
২০২৩ সালে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন (Tripura Assembly Election)। তার ঠিক আগে আগে বিপ্লবের ইস্তফা বিজেপির ভাবমূর্তিকে কিছুটা হলেও ধাক্কা দিল। অনেকেই মনে করছেন বিপ্লবের ইস্তফার নেপথ্যে রয়েছে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বিশ্লেষকদের মতে, বিপ্লবের বিরুদ্ধে গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ জমা হচ্ছিল, তাতে তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরাগভাজন হচ্ছিলেন। তাছাড়া, প্রশাসনের বিভিন্ন প্যারামিটারেও বিপ্লবের ত্রিপুরা সরকার ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছিল। মাত্র ৪ বছরেই ত্রিপুরা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছিল। সম্ভবত সেকারণেই বিধানসভা ভোটের আগে মুখ বদল করল গেরুয়া শিবির।