সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'আত্মনির্ভর ভারত'-এর স্বপ্ন দেখেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই স্বপ্নের বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান। প্রত্যাশা ছিল বাজেটে এই বিষয়ে দিশা দেবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। যদিও সাদামাটা বাজেটে আশা মেটেনি বহু ক্ষেত্রে। 'নেই মামার' সেই বাজারে 'কানা মামা' হিসাবে নির্মলার ঘোষণা, চর্মজাত পণ্যের ক্ষেত্রে ২২ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে।
শনিবার নির্মলা জানান, জুতো এবং অন্যান্য চর্মজাত পণ্যের (ব্যাগ, বেল্ট ইত্যাদি) ব্যবসার দিকে এবার বিশেষ ভাবে নজর দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। লক্ষ হল এই ক্ষেত্রে ২২ লক্ষ কর্মসংস্থান, বছরে ৪ লক্ষ কোটি টাকার টার্নওভার, ১.১ লক্ষ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি। অন্য দিকে দেশের বাজারে চিনা খেলনার দাপট রুখতে পরিবেশ বান্ধব খেলনার ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারতে পরিবেশবান্ধব খেলনা উৎপদনের হাব তৈরি করবে মোদি সরকার। যেখান থেকে কয়েক লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। দেশের বাজারের পাশাপাশি বিদেশেও ভারতে তৈরি খেলনা রপ্তানির লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি প্রতিবারের মতোই চলতি বাজেটে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কৃষি, মহিলা এবং যুবসমাজকে। এই বিষয়ে ভাষণের শুরুতেই ঘোষণা দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। এমনিতে পাঞ্জাব সীমান্তে লাগাতার কৃষক আন্দোলন নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছে মোদি সরকার। এই অবস্থায় নজরে ছিল এবারের বাজেটে কৃষিক্ষেত্রে কী বড় ঘোষণা হয়। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ পিএম ধনধান্য কৃষি যোজনার ঘোষণা দিলেন।
নির্মলা জানিয়েছেন, মোট ১০০টি জেলার ১ কোটি ৭০ লক্ষ কৃষক এই প্রকল্পে উপকৃত হবেন। রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে মিলে ওই ১০০টি জেলায় কৃষি উন্নয়নে কাজ করবে কেন্দ্র। নির্মলার ব্যাখ্যা, মোট ১০০টি এমন জেলাকে চিহ্নিত করা হবে যে জেলায় উৎপাদনের হার কম। ওই জেলাগুলির পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে আলাদা আলাদা ফসল চিহ্নিত করা হবে। কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ফসল বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে। প্রক্রিয়াকরণও হবে ওই জেলাগুলিতেই। অর্থমন্ত্রীর দাবি, ১.৭ কোটি কৃষকের জীবন বদলে যাবে এই প্রকল্পে।
এর বাইরে কৃষিক্ষেত্রে অন্য ঘোষণা বলতে, কিষাণ ক্রেডিট কার্ডে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ৩ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করা হল। ডেয়ারি এবং ফিশারি শিল্পের জন্য ৫ লক্ষ পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। তুলো চাষিদের জন্য আলাদা তুলো উৎপাদন মিশন, মৎস্যজীবীদের জন্য স্পেশাল ইকোনমিক জোন তৈরির কথাও ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। নির্মলা সীতারমণ এদিন জানিয়েছেন, ডাল উৎপাদনে আগামী ৬ বছরে আত্মনির্ভর হবে ভারত। আত্মনির্ভরতার এই সংকল্পই মোদি সরকারের কর্মসংস্থানের মূলগত পদ্ধতি। অন্তত তেমনটাই দাবি গেরুয়া সরকারের। যদিও কেন্দ্রীয় বাজেটে কর্মসংস্থান নিয়ে আশার আলো দেখছেন না বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
