সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উন্নাওয়ের ধর্ষণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হওয়া বিজেপির বহিষ্কৃত বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারের সাজা স্থগিত ও জামিনে মুক্তির নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল সিবিআই। সেই মামলায় দিল্লি হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করেছে শীর্ষ আদালত। অর্থাৎ, এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না কুলদীপ। পাশাপাশিই চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে হলফনামা জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এই মামলায় সিবিআইয়ের পক্ষে সওয়াল করেছেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। শুনানিতে তিনি গোটা ঘটনাকে 'ভয়াবহ' আখ্যা দিয়েছেন। কুলদীপের জামিনের বিরোধিতা করে তুষার আদালতে বলেছেন, "নির্যাতিতার কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়।" দিল্লি হাইকোর্ট রায়ে বলেছিল, আইন অনুযায়ী কুলদীপ সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাবাসের সাজা কাটিয়ে ফেলেছেন। এই যুক্তিরও বিরোধিতা করেছে সিবিআই। তুষার বলেন, "কুলদীপ সেঙ্গার যে অপরাধ করেছেন, তাতে তার সর্বনিম্ন সাজাও ২০ বছরের হওয়া উচিত।"
সব শুনে সোমবার প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “উন্নাওয়ে নাবালিকা ধর্ষণ (Unnao Rape Case) মামলায় দুই পক্ষের মতামত শোনা হয়েছে। সাধারণত কোনও অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি জেল থেকে বেরিয়ে গেলে তার জামিন বাতিল করে না আদালত। কিন্তু এক্ষেত্রে পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। এই ক্ষেত্রে মুক্তি পাওয়া ব্যক্তি অন্য এক অভিযোগেও দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। সেকথা মাথায় রেখেই ২৩ ডিসেম্বর দিল্লি হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছিল সেটা স্থগিত করা হচ্ছে। অর্থাৎ কুলদীপ সিং সেঙ্গারকে এখনই মুক্তি দেওয়া হবে না।”
প্রসঙ্গত, উন্নাওয়ে গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়ার পরেও দিল্লি হাই কোর্ট সম্প্রতি কুলদীপের সাজা স্থগিত রেখে তাঁকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে। এই ঘটনায় দেশ জুড়ে ক্ষোভ ছড়ায়। নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছিলেন, তাঁরা দিল্লি হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। বুধবার সন্ধ্যায় দশ জনপথে গিয়ে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ও সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের লোকজন বড় কোনও আইনজীবীর সাহায্য চেয়েছিলেন। এর পর সিবিআই-ই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।
সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপেই স্বস্তির বদলে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন নির্যাতিতা ও তাঁর আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার উন্নাওয়ের নির্যাতিতা প্রশ্ন তুলেছিলেন, “এতদিন সিবিআই কী করছিল? সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার দোষী কুলদীপ সেঙ্গারের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেছিলেন। আমাদের সুপ্রিম কোর্টে আরও সতর্ক থাকতে হবে।”
