নিরুফা খাতুন: বৈশাখ শেষের মুখে সুখবর শোনাল আবহাওয়া দপ্তর। বর্ষা এল বলে! সক্রিয় হচ্ছে মৌসুমী বায়ু, পরিস্থিতিও অনুকূল। আর কয়েকদিনের মধ্যেই দেশে বর্ষার প্রবেশ ঘটতে চলেছে। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর হয়ে বঙ্গে বৃষ্টি শুরু হতে পারে বলে পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের। মনে করা হচ্ছে, আগামী চার থেকে পাঁচদিনের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু দক্ষিণ আরব সাগর এবং দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের আরও বেশি এলাকায় প্রভাব বিস্তার করবে। এই সময়ের মধ্যেই মধ্যেই বঙ্গোপসাগরে পৌঁছে যেতে পারে বর্ষা। আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টায়। উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা। প্রবল বর্ষণের সঙ্গে ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় গতিবেগে দমকা ঝোড়ো বাতাস বইবে।
ভারী বৃষ্টি হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের সব রাজ্যে। অরুণাচল প্রদেশ আসাম মেঘালয় মনিপুর মিজোরাম নাগাল্যান্ড এবং ত্রিপুরাতে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা। তবে আপাতত তাপপ্রবাহের হাত থেকে নিস্তার নেই বঙ্গবাসীর। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তীব্র দহনজ্বালা থাকবে দক্ষিণবঙ্গে। সন্ধ্যার দিকে ঝড়বৃষ্টি অবশ্য কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে।
উত্তরপূর্ব অসমে সক্রিয় একটি ঘূর্ণাবর্ত। উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিম রাজস্থানে আরও একটি ঘূর্ণাবর্তের অবস্থান। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা চলছে উত্তর পশ্চিম ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে। এছাড়া নিম্নচাপ অক্ষরেখার দাপট রয়েছে বিহার থেকে দক্ষিণ ঝাড়খণ্ড পর্যন্ত। আরও একটি অক্ষরেখা রয়েছে সৌরাষ্ট্র থেকে উত্তরপূর্ব আরব সাগর পর্যন্ত। এই ত্রিফলায় বঙ্গে উষ্ণতা বাড়ছে বই কমছে না। দক্ষিণবঙ্গে আরও ২ দিন তাপপ্রবাহ চলবে। বৃহস্পতিবার থেকে ঝড়বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে।
মঙ্গলবার তাপপ্রবাহ থাকবে দক্ষিণবঙ্গের ছটি জেলা- পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে। বুধবারও একই পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার তাপপ্রবাহ থাকবে পাঁচ জেলা - পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূম জেলাতে। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গরম এবং অস্বস্তি বজায় থাকবে। তবে তার মাঝেই ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায়। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত দমকা ঝোড়ো বাতাস বইতে পারে। বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি এবং বজ্রপাতের আশঙ্কা।
উত্তরবঙ্গের সমতলের জেলাগুলিতে শুষ্ক আবহাওয়া। তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি দুই জেলা - মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। ভারী বৃষ্টি হতে পারে পার্বত্য পাঁচ জেলায়। বৃহস্পতিবারের পর ঝড়বৃষ্টি হতে পারে সব জেলাতেই। তাপমাত্রার পারদ হবে নিম্নমুখী। দার্জিলিং থেকে মালদহ - সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত দমকা ঝোড়ো বাতাস বইবে। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলাতে।
কলকাতা সকালের দিকে মনোরম আবহাওয়া থাকলেও বেলা বাড়লে গরম বাড়বে। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া। শুষ্ক হাওয়ায় উষ্ণতার ছোঁয়া থাকবে বুধবার পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে। মঙ্গলবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৩.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। সোমবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৬ ডিগ্রি। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বা আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৩৫ থেকে ৯৮ শতাংশ।
