সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর। নৃশংস ঘটনার সাক্ষী থেকেছিল গোটা দেশ। রাজধানী দিল্লির (Delhi) বুকে নির্মম গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন নির্ভয়া (Nirbhaya)। এরপর তেরো দিন বাঁচার জন্য আপ্রাণ লড়াই করে মৃত্যুর কাছে হার মেনেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরই অবশ্য গোটা দেশ গর্জে উঠেছিল। রাজধানী সাক্ষী হয়েছিল ঐতিহাসিক বিক্ষোভের৷
এরপর নির্ভয়াকে ঘিরে আবেগের কথা মাথায় রেখেই ২০১৩ সালে তৎকালীন UPA সরকার শুরু করেছিল ‘নির্ভয়া ফান্ড’ (Nirbhaya Fund)৷ বরাদ্দ হয়েছিল ১০০০ কোটি টাকা৷ ঠিক হয়েছিল নারী ও শিশুকন্যাদের নিরাপত্তার জন্য খরচ করা হবে এই টাকা৷ কিন্তু জানেন কি যে উদ্দেশে এটি গঠন করা হয়েছিল, সেই খাতে খরচই করা হয়নি এই টাকা। অধিকাংশ টাকাই খরচ হয়েছে রাস্তা নির্মাণ-সহ অন্যান্য প্রকল্পে। এমনকী কিছু ক্ষেত্রে আধিকারিকদের কাছেও এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট ধারণা নেই। সম্প্রতি অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার রিপোর্টে এই তথ্যই সামনে এসেছে।
[আরও পড়ুন: প্যাংগং হ্রদ থেকে সেনা সরাচ্ছে ভারত-চিন, সংসদে জানালেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং]
চলতি ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত ওই রিপোর্টে সংস্থার দাবি, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের বাজেটে নির্ভয়া তহবিলে ৪৩৫৭.৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। কিন্তু ওই বরাদ্দের ৭৩ শতাংশ অর্থ গিয়েছে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হাতে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ছাড়াও কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ, তথ্যপ্রযুক্তি, রেল, সড়ক ও পরিবহণের মতো মন্ত্রকেও নির্ভয়া তহবিলের টাকা দেওয়া হয়েছিল। রিপোর্টের দাবি, অধিকাংশ মন্ত্রকই সেই টাকা খরচ করেনি। কিংবা খরচ করলেও তা সিসিটিভি, পথে আলোর সংখ্যা বাড়ানো অথবা রাস্তা তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়েছে।
অক্সফ্যামের তরফে অমৃতা পিত্রে এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ওই টাকায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর উন্নয়ন, ফরেনসিক ল্যাবের উন্নয়ন এবং সাইবার অপরাধ মোকাবিলার পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয়েছে। ফলে মহিলারা সরাসরি উপকৃত হননি। এর পাশাপাশি ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, নির্ভয়া তহবিল খাতে সাম্প্রতিক বাজেটে বরাদ্দও পর্যাপ্ত নয়। এছাড়া দেশের মূলত পাঁচটি রাজ্য দিল্লি, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক এবং মহারাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে বেশি টাকা এই তহবিল থেকে বরাদ্দ করা হয়েছে। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ-সহ অধিকাংশ রাজ্যেই আবার নির্ভয়া তহবিলের টাকা অনেকটাই কম খরচ করেছে। এমন অভিযোগও তোলা হয়েছে ওই রিপোর্টে। এছাড়া বাকি ২৭ শতাংশ টাকা খরচই হয়নি।