সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চলতি মাসের ১৫ ও ১৬ তারিখ পাকিস্তানের পৌরোহিত্য অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এসসিও সামিট। আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের আসর বসছে সেদেশের রাজধানী ইসলামাবাদে। তাই কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা শহর। ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছতে শুরু করেছেন এই জোটের সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। ফলে আরও আঁটসাঁট করা হচ্ছে নিরাপত্তা। সম্মেলনের আগে বা অনুষ্ঠান চলাকালীন যাতে কোনও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত বাহিনী। এই এসসিও সামিট ঘিরে এখন পাকিস্তানে তুঙ্গে তৎপরতা।
ভারত এবং পাকিস্তান ছাড়াও চিন, রাশিয়া, তাজাকিস্তান, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান-সহ বেশ কয়েকটি দেশ এই সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (SCO) সদস্য। এসসিও দেশগুলো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শীর্ষ বৈঠকের আয়োজন করে থাকে। এই বছর ১৫ এবং ১৬ অক্টোবর ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হবে সদস্য দেশগুলোর সরকার প্রধানদের ২৩তম সম্মেলন। প্রথামাফিক পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সব সদস্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদেরই আমন্ত্রণ জানান। গত আগস্ট মাসে আমন্ত্রণপত্র আসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছেও। কিন্তু দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রেক্ষিতে প্রশ্ন ওঠে, মোদি কি এই সম্মেলনে যোগ দিতে পাকিস্তান যাবেন? নানা জল্পনার পর অবশেষে বিবৃতি দিয়ে বিদেশমন্ত্রক জানায় এসসিও সামিটে যোগ দিতে পাকিস্তানে যাবেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।
তবে সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, জয়শংকর এখনও পাকিস্তানে পৌঁছননি। আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার বিকালে তিনি পা রাখবেন ইসলামাবাদে। বুধবার সম্মেলনের মূল অনুষ্ঠান। সেখানে যোগ দেবেন জয়শংকর। কিন্তু সামিটের ফাঁকে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ কিংবা বিদেশমন্ত্রী ইশাক দারের সঙ্গে কোনও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা নেই বলেই এখনও পর্যন্ত খবর। তবে এদিন সম্মেলনের পর শাহবাজের আমন্ত্রণে নৈশ্যভোজে যোগ দেবেন জয়শংকর। সেখানে দ্বিপাক্ষিক কোনও বিষয় আলোচনা হলেও হতে পারে তাঁদের মধ্যে। জানা গিয়েছে, জয়শংকর না পৌঁছলেও ইসলামাবাদে পৌঁছে গিয়েছেন নয়াদিল্লির ৪ জন প্রতিনিধি। পৌঁছেছেন চিনের ১৫ জন, কিরঘিজস্তানের ৪ ও ইরানের ২ জন উচ্চপদস্থ আধিকারিক। তাই অনুষ্ঠানস্থল থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, হোটেলগুলোর বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এনিয়ে এক বিবৃতি দিয়ে ইসলামাবাদের আইজিপি নাসির আলি রিজভি জানিয়েছেন, "এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষ্যে আমরা নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিষয়ে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। অনুষ্ঠানস্থল ও তার আশপাশের অঞ্চলে এবং যে হোটেলগুলোয় অতিথিরা থাকবেন সেখানকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিশেষ বাহিনী। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। ট্রাফিক ব্যবস্থায় বদল আনা হয়েছে। অতিথিদের পাশাপাশি নাগরিকদের সুরক্ষার বিষয়টিও নজরে রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৯ হাজারের উপর পুলিশ আধিকারিক দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।" পাশাপাশি এই দুদিন ইসলামাবাদে যেকোনও ধরনের মিটিং-প্রতিবাদ মিছিলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পাক সরকার। ফলে নির্বিঘ্নে এসসিও সামিট সম্পন্ন করাই এখন শাহবাজ সরকারের প্রধান লক্ষ্য।