সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় ১১ মাস ধরে পূর্ব লাদাখে (Eastern Ladakh) মুখোমুখি ভারত ও চিনের সেনাবাহিনী। গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি সবচেয়ে জটিল হয়ে ওঠে প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন ফিঙ্গার এলাকাগুলিতে। সেখানেই অল্পের জন্য যুদ্ধের হাত থেকে রক্ষা পায় পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ। তবে লাগাতার আলোচনার মাধ্যমে ফেব্রুয়ারি মাসে প্যাংগং থেকে ফৌজ সরিয়ে নিয়েছে দুই দেশ। এবার গোটা পূর্ব লাদাখ জুড়ে সেন প্রত্যাহারের উদ্দেশ্যে চিনা প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক সারলেন ভারতের রাষ্ট্রদূর বিক্রম মিশ্রি।
[আরও পড়ুন: সামরিক বুটের তলায় পিষ্ট গণতন্ত্র, মায়ানমারের উপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা চাপাল আমেরিকা]
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, শুক্রবার বেজিংয়ে চিনা ভাইস ফরেন মিনিস্টার লউ ঝাওহুইয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মিশ্রি। পূর্ব লাদাখে সংঘাতের সমস্ত কেন্দ্রবিন্দু থেকে ফৌজ সরানো নিয়ে আলোচনা হয় দুই পক্ষের মধ্যে। ফলে মনে করা হচ্ছে এবার গোগরা-হটস্প্রিং ও দেপসাং সমতলের একাংশ থেকেও সরে যেতে পারে লালফৌজ। প্যাংগং হ্রদ নিয়ে দীর্ঘদিন বিবাদ চলে ভারত-চিনের। দু’দেশের মধ্যে ৯ দফা আলোচনার পর গত মাসে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে দু’দেশ। ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’ তাদের বিপুল সংখ্যক সেনা, শয়ে শয়ে ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া গাড়ি, হাউৎজার সরিয়ে নিয়েছে। প্যাংগং হ্রদ লাগোয়া আট নম্বর ফিঙ্গার পয়েন্টের কাছে সরানো হয়েছে চিনের সব ট্যাঙ্ক, হাউৎজার কামান। তবে পরিস্থিতির উপর প্রতি মুহূর্তে কড়া নজর রাখছে ভারতীয় সেনার উপরমহল। সেই মতো পদক্ষেপ ও কৌশল বদলাচ্ছেন তাঁরাও। আর প্যাংগংয়ের পরই এবার অন্যান্য বিবদমান এলাকা নিয়ে আলোচনায় বসতে চলেছে দু’দেশ।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, চিনের সঙ্গে দর কষাকষিতে ভারতের তুরুপের তাস ছিল প্যাংগং। কারণ, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে ওই হ্রদের দক্ষিণে কৈলাস রেঞ্জে গুরুত্বপূর্ণ পাহাড় চূড়া দখল করে নেয় ভারতীয় ফৌজ। ফলে চুশুল সেক্টরে রীতিমতো বেকায়দায় পড়ে যায় লালফৌজ। এই অবস্থান কাজে লাগিয়ে দেপসাংয়ে নিজের অবস্থান মজবুত করতে পারত নয়াদিল্লি। কিন্তু তেমনটা করা হয়নি। ফলে প্যাংগং থেকে ভারতীয় ফৌজকে সরিয়ে দেওয়ার পর এবার নিজেদের অবস্থান থেকে কিছুতেই সরবে না চিনা বাহিনী। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।