সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের সবচেয়ে বড় অস্ত্রের জোগানদাতা রাশিয়া। সোভিয়েত জমানার মিগ যুদ্ধবিমান থেকে আধুনিক রুশ টি-৯০ ট্যাঙ্ক ভারতীয় সেনাবাহিনীর শক্তি। কিন্তু, এনিয়ে প্রবল অসন্তোষ রয়েছে আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে। নয়াদিল্লির উপর চাপও বাড়িয়েছে তারা। কিন্তু কোনও চাপের মুখে ভারত যে নিজের অবস্থান থেকে নড়বে না, অত্যন্ত চাঁচাছোলা ভাষায় সেই বার্তাই দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।
সোমবার অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রী পেনি ওয়াং-য়ের সঙ্গে ১৩ তম ‘ফরেন মিনিস্টার্স ফ্রেমওয়ার্ক ডায়ালগ’-এ অংশ নেন জয়শংকর (Jaishankar)। সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক পুরনো। এবং এই সম্পর্কের ফলে আমরা অনেক লাভবান হয়েছি। আমাদের কার্যসিদ্ধি হয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পরে রাশিয়ার তৈরি অনেক অস্ত্রই আমরা ব্যবহার করি। এবং এমনটা করার যথেষ্ট কারণ আছে। কয়েক দশক পশ্চিমের দেশগুলি ভারতকে অস্ত্র দেয়নি। আমাদের পড়শি দেশের (পড়ুন পাকিস্তান) সেনাশাসকদেরই তাদের বেশি পছন্দ ছিল।” বলে রাখা ভাল, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানের পাশেই দাঁড়িয়েছিল আমেরিকা ও ইউরোপের অধিকাংশ দেশ। কিন্তু সেই সময় ভারতের সমর্থনে এগিয়ে আসে সোভিয়েত ইউনিয়ন। আজও সেই সম্পর্ক মজবুত রয়েছে।
[আরও পড়ুন: নজরে চিন, এবার ভারতের হাতে আসতে চলেছে দূরপাল্লার বোমারু রুশ বিমান!]
এদিন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় জয়শংকরকে। এই বিষয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে বিদেশমন্ত্রী বলেন, “আমরা বরাবরই সংঘাতের বিরুদ্ধে। লড়াইয়ের মাধ্যমে কারও স্বার্থওসিদ্ধি হতে পারে না বলেই ভারত মনে করে। এই যুদ্ধের ফলে কম আয়ের দেশগুলি কতটা প্রভাবিত হয়েছে তা স্পষ্ট। সমরকন্দে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেইছেন যে এটা যুদ্ধের সময় নয়।” তবে ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতিই যে মোদি সরকারের অবিষ্ঠান তা স্পষ্ট করে জয়শংকর বলেন, “আন্তর্জাতিক রাজনীতি বা কুটনীতিতে আমরা যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি তা জাতীয় স্বার্থ, বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নেওয়া হয়।”
উল্লেখ্য, রুশ মিসাইল সিস্টেম নিয়ে তুঙ্গে পৌঁছেছে ভারত-আমেরিকার টানাপোড়েন। সম্প্রতি ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা মিসাইল সিস্টেম ‘এস- ৪০০ ট্রায়াম্ফ’ ভারতে পাঠানো শুরু করেছে রাশিয়া। এদিকে, এই বিষয়কে খুব বেশি আমল দিতে নারাজ বিশেষজ্ঞ মহল। তাঁদের দাবি, রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক চুক্তি বাতিল করবে না ভারত। মস্কোর সঙ্গে পরীক্ষিত বন্ধুত্ব বজায় রেখেই আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করেছে নয়াদিল্লি। বাইডেন প্রশাসনকেও সেই কথা মাথায় রাখতে হবে। তাছাড়া, কৌশলগত কারণে এশিয়া মহাদেশে চিনকে রুখতে ভারতের উপরই ভরসা রাখতে হবে ওয়াশিংটনকে।