সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার ভ্যাকসিন (COVID vaccine) দেশের মাটিতেই উৎপাদন করার পর এবার হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস মোকাবিলায় টিকা আনতে চলেছে সেরাম ইনস্টিটিউট। সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার সিইও আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তাঁদের সবুজ সংকেত দিয়েছে ডিসিজিআই। বিশ্বে আপাত নিরীহ কিন্তু ভয়াবহ প্রাণঘাতী ক্যানসারের (Cancer) অন্যতম সারভাইক্যাল ক্যানসার। এবং এখনও পর্যন্ত এই ক্যানসারের ক্ষেত্রেই কার্যকর হয়েছে টিকার প্রয়োগ। কারণ এই ক্যানসারের সঙ্গেই সরাসরি ভাইরাসের যোগ মিলেছে। ভাইরাসটি হল হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস।
সাধারণভাবে কৈশোরে যৌনসংসর্গে লিপ্ত হওয়ার আগেই এই ভ্যাকসিনের তিনটি ডোজ দেওয়া গেলে সারভাইক্যাল ক্যানসার প্রতিরোধে তা অনেকাংশে কার্যকর হয়। এতদিন পর্যন্ত দেশের বাজারে প্রাপ্ত ক্যানসারের দুটি টিকা সার্ভারিক্স এবং গার্ডাসিল এইচপিভি-র দু’টি স্ট্রেনের সঙ্গে মোকাবিলায় উপযোগী। কিন্তু তা আনতে হত বিদেশ থেকেই। আর সেরাম ইনস্টিটিউট যে ভ্যাকসিনটি আনতে চলেছে তা চারটি স্ট্রেনের মোকাবিলায় উপযুক্ত।
পুনাওয়ালা বলেছেন, “এই প্রথম ভারতে এইচপিভি-র টিকা আসতে চলেছে। এই বছরের শেষের দিকেই এটি বাজারে এসে যাবে বলে আমরা আশা করছি।” অনুমোদন দেওয়ায় ডিসিজিআই এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশেষজ্ঞ কমিটির অনুমোদন এবং সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের সুপারিশ মতো সেরামের এই টিকাকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালও সম্পূর্ণ করা হয়েছে বলে সেরামের তরফে জানানো হয়েছে।
সারভাইক্যাল ক্যানসারের নতুন টিকা বিষয়ে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ড. এস এম রহমান জানান, এটি অত্যন্ত ভাল খবর। কারণ পকেটসই দামে এই টিকার ব্যবহারে ক্যানসারের মতো মারণ রোগ আটকানো সম্ভব হয়। ড. রহমান বলেন, “যৌনজীবন শুরু হলে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস সব মহিলার শরীরেই প্রবেশ করে। তবে শরীর নিজে থেকেই সেটিকে নষ্ট করতে থাকে। সে ক্ষেত্রে টিকা নিশ্চিতভাবেই সুরক্ষা দেয়। এমন একটি রোগের নতুন টিকা বাজারে আসা নিঃসন্দেহ সুসংবাদ। মানুষের মধ্যে সচেতনতাও বৃদ্ধি পাওয়াটাও জরুরি।”
বিশেষ করে যেহেতু চারটি স্ট্রেনের বিরুদ্ধে সেরামের এই টিকা কার্যকর হবে ফলে তা ঝুঁকিও কমাবে বেশি সংখ্যায়। ১৫ থেকে ৪৪ বছরের বয়সি মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে ক্যানসারের প্রবণতা দেখা যায় তার মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সারভাইক্যাল ক্যানসার।