সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেখতে দেখতে কেটে গেল একটা বছর। জীবনের ভয়ংকর ঘটনার সাক্ষীর এক বছর কাটিয়ে দিয়েছেন ঋষভ পন্থ (Rishabh Pant)। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বরের সকাল। বড়সড় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিলেন তিনি। দাবানলের মতো খবরটা ছড়িয়ে পড়েছিল। টিম ইন্ডিয়ার (Team India) তারকা উইকেটকিপারের দুর্ঘটনার খবর জানাজানি হওয়ার পর দিল্লি ক্যাপিটালস (Delhi Capitals) শিবিরের মানসিক অবস্থা কেমন ছিল? সেই প্রসঙ্গে X হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। সেই ভিডিওতেই নিজেদের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেছেন অক্ষর প্যাটেল (Axar Patel)। দিল্লি শিবির ঋষভকে কতটা মিস করছিল? মুখ খুললেন দলের হেড কোচ রিকি পন্টিং (Ricky Ponting) ও ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে অক্ষর বলছিলেন, ‘সেদিন সকালের দিকে প্রতিমা দিদি-র ফোন (পড়ুন, ইশান্ত শর্মার স্ত্রী) এসেছিল। প্রথমে আমাকে জিজ্ঞেস করল, ‘তোর সঙ্গে ঋষভের গতকাল কথা হয়েছে?’ আমি বলেছিলাম, ‘ফোন করার কথা ছিল। কিন্তু ব্যস্ত থাকার জন্য ঋষভকে ফোন করতে পারিনি। কেন, কী হয়েছে?’ দিদি আমাকে আবার বললো, ‘ঋষভের মায়ের ফোন নম্বর দে। ওর অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে।’
[আরও পড়ুন: ‘কামব্যাকেও বক্স অফিস কাঁপাবে পন্থ’, দাবি ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়কের]
সেই খবর পেয়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন ভারতের অলরাউন্ডার। তাঁর মাথায় কী ভাবনাচিন্তা হচ্ছিল? অক্ষর ফের যোগ করেন, “খারাপ খবরটা শুনে আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল, ও কি তাহলে মারা গেল! খবর শোনার পর থেকে বিসিসিআইয়ের তরফ থেকে আমার কাছে ফোন এসেছিল। এমনকি জাতীয় দলের একাধিক ক্রিকেটার আমাকে ফোন করতে শুরু করেছিল। তবে মেজাজে না হারিয়ে আমি ঋষভকেই ফোন করে বসেছিলাম। ওকেই জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘কেমন আছিস তুই’। ঋষভ আমাকে জানায়, ‘ভাই আমি ঠিক আছি। তবে মাথা, বুক, পা ও হাঁটুতে কতটা চোট লেগেছে সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়। সেটা শোনার পর মন ভালো হয়ে গিয়েছিল। এবং আমি জানতাম আমার বন্ধু কামব্যাক করবেই। কারণ ও খুব লড়াকু মানসিকতার ছেলে।”
পন্টিং বলছিলেন, “প্রথমে দিল্লির হোয়াটস্যাপ গ্রুপে খবরটা পেয়েছিলাম। বিশ্বাস করতে পারিনি। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যাপারটা সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।” সৌরভ বলেন, “ঋষভ আগামী আইপিএলে আমাদের অধিনায়ক। আশাকরি ও খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে।”
উত্তরাখণ্ডে বাড়ি যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ঋষভ। স্থানীয় মানুষজন উদ্ধার করে প্রথমে তাঁকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। স্বভাবতই সেই ঘটনার পর তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ার অনিশ্চিত হয়ে যায়। শরীরে একাধিক জায়গায় অস্ত্রোপচার করাতে হয়। প্রথমে দেরাদুনের হাসপাতালে থাকার পর মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে চলে তাঁর চিকিৎসা। গত কয়েক মাসের রিহ্যাব পর্ব শেষে এখন অনেকটাই ফিট ভারতীয় দলের তারকা। প্রথম দিকে ক্র্যাচের ভর করে হাঁটতে হলেও বর্তমানে পায়ের শক্তি ফিরে পেয়েছেন। নিয়মিত অনুশীলনও করছেন।
তবে ১০০ শতাংশ ফিট হতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে তাঁর। কারণ হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের পর তাঁর হাঁটু এবং গোঁড়ালি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। তবে পুরো ফিট না হলেও, বিশ্বকাপ চলার সময় কলকাতায় আয়োজিত দিল্লির ক্যাম্পে এসেছিলেন তিনি। এমনকি গত ১৯ ডিসেম্বর আইপিএলের মিনি নিলামেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। এখন শুধু তাঁর মাঠে নামার অপেক্ষা। এমন প্রেক্ষাপটে ঋষভ কি সরাসরি আইপিএল খেলতে নামবেন নাকি এর আগে তাঁকে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে দেখা যাবে? সেটাই এখন দেখার।