সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করল ইসলামিক স্টেট (ISIS)। তালিবানকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে ভবিষ্যতেও যে আফগানিস্তান আরও রক্তাক্ত হবে সেই ইঙ্গিতই দিল ইসলামিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটি।
২৫ মে পরপর তিনটি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বালখ প্রদেশের রাজধানী মাজার-ই-শরিফ। তিনটি বাসে বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। ওই হামলায় মৃত্যু হয় ন’জনের। আহত হন কমপক্ষে ১৫ জন। ওই অঞ্চলের তালিবান কমান্ডার মহম্মদ আসিফ ওয়াজারি রয়টার্সকে জানায়, মৃত ও আহতরা প্রায় সকলেই আফগানিস্তানে সংখ্যালঘু মুসলিম শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত। এবং শিয়াদেরই নিশানা করেছিল জঙ্গিরা। মনে করা হচ্ছিল, বিস্ফোরণগুলির নেপথ্যে সুন্নি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের হাত থাকতে পারে। সেই আশঙ্কা সত্যি করে নিজেদের সংবাদ সংস্থা আমাক-এ হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট। ওইদিনই কাবুলের হজরত জাকারিয়া মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটে। মৃত্যু হয় অন্তত ৩০ জনের।
[আরও পড়ুন: জাতির উদ্দেশে ভাষণে পাক প্রধানমন্ত্রীর মুখে কাশ্মীর প্রসঙ্গ, ‘শান্তির দায় ভারতের’, মন্তব্য শাহবাজের]
এদিকে, বালখ ও কাবুলের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে আমেরিকা। আফগানিস্তানে নিযুক্ত আমেরিকার বিশেষ মানবাধিকার দূত রিনা আমিরি তালিবানের কাছে আম নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আরজি জানিয়েছেন। তার আগে আফগানিস্তানে সংগঠিত হিংসার নিন্দা করেন রাষ্ট্রসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস।
উল্লেখ্য, , ২০২১ সালের আগস্ট মাসে কাবুল দখল করে তালিবান (Taliban)। মার্কিন ফৌজ বিদায় নিলেও আখুন্দজাদার সংগঠনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠে আইএস। মার্কিন ফৌজ সরে যাওয়ার পর কাবুল বিমানবন্দর-সহ একাধিক তালিবান নেতার উপর হামলা চালায় খোরাসানের জঙ্গিরা।
তালিবান ও আইএস দুটোই সুন্নি জেহাদি সংগঠন। তবে ইসলামের ব্যাখ্যা ও মতবাদ নিয়ে দুই দলের মধ্যে বিবাদ তুঙ্গে। আইএসের দাবি, তালিবান আমেরিকার ‘মোল্লা ব্র্যাডলি’ প্রকল্পের অঙ্গ। ওই মৌলবাদীদের মতে, ওই প্রকল্পে জেহাদি সংগঠনের একাংশকে নিজেদের দিকে টেনে সেগুলিকে দুর্বল করে দেয় আমেরিকা। বিশেষত, ২০১৫ সালে আফগানিস্তানের নানগরহার প্রদেশে আইএসের খোরাসান শাখা তৈরি হওয়ার পরেই বিরোধ বাড়ে। দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় দু’পক্ষের নানা গোষ্ঠীর। কূটনীতিকদের মতে, আইএসের মোকাবিলা করতেই তালিবানকে সমর্থন শুরু করে রাশিয়া। পরে নানগরহর প্রদেশে আমেরিকান অভিযানের ফলে আইএস বড় ধাক্কা খায়। কিন্তু ফের শক্তি সংগ্রহ করছে তারা।