ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: আমেরিকা বা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পথে হেঁটে ভারতেও করোনার (Coronavirus) নিভৃতবাসের (Isolation) সময়সীমা কমানো হল। এবার তা হল সাত দিনের। নয়া নির্দেশিকায় এমনটাই জানাল ICMR। ঠিক দু’বছর আগে সংক্রমণের শুরুতে ভারতে কোভিড রোগীদের ১৪ দিন নিভৃতবাসের নিদান দেয় আইসিএমআর। নতুন রোগ। তাই সংক্রমণের তীব্রতা বুঝতেই এই নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
কী জানানো হয়েছিল নয়া নির্দেশিকায়? বলা হয়েছে মৃদু উপসর্গ কিংবা উপসর্গহীন হলে ৭ দিন আইসোলেশনে থাকলেই হবে। সেই সঙ্গে দেখতে হবে পরপর ৩ দিন যেন জ্বর না আসে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকলে মাস্ক পরে থাকবে। এছাড়া সংক্রমিত ব্যক্তির এঁটো বাসন ইত্যাদি আলাদা করে রাখতে হবে। এই ধরনের উপসর্গহীনতা কিংবা মৃদু উপসর্গের ক্ষেত্রে আইসোলেশনে থাকার পরে নতুন করে কোভিড পরীক্ষা করানো জরুরি নয়। তবে কেউ চাইলে করিয়ে নিতেই পারেন।
কোভিডের দ্বিতীয় ধাক্কার সময় ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো অস্ত্র অর্থাৎ ভ্যাকসিন চলে এসেছে। প্রথম সংক্রমণ হওয়ার পর ভারতের বিরাট সংখ্যক জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। এর সঙ্গে ছিল ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ। ফলত সংক্রমিত হলেও আক্রন্ত ব্যক্তির শারীরিক উপসর্গ অনেকটাই কম। তাই সেই সময়ে ১০ দিনের হোম আইসলেশন বা নিভৃতবাসের গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়।
[আরও পড়ুন: কাশ্মীরে জঙ্গিদমনে বড় সাফল্য যৌথ বাহিনীর, খতম জইশের ৩ জেহাদি]
এবার তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে দাঁড়িয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকদের হোম আইসলেশন বা বাড়িতে নিভৃতবাসের সময়ও ১০ দিন করেছে। অর্থাৎ এক বছর আগের নিয়ম মেনে চলছে। যে চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী কোভিড পজিটিভ হচ্ছেন তাঁদের আইসোলেশন সময়সীমা ১০দিন করেছে। তবে নতুন বছরের শুরুতে করোনা সংক্রমণ বাড়লেও দ্রুত সুস্থ হচ্ছে বলে আইসিএমআরের পর্যবেক্ষণ।
আগেই আইসিএমআরের সহ অধিকর্তা ডা সমীরন পান্ডা জানিয়েছিলেন, “নিভৃতবাসের সময় ১০ দিন থেকে কমিয়ে এক সপ্তাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে। কারণ সংক্রমণ দ্রুত ছড়ালেও ভাইরাসের মারণ ক্ষমতা ক্রমশ কমছে। বলা যায় মানব সভ্যতার কাছে ভাইরাস ক্রমশ পরাজিত হচ্ছে। তাই হোম আইসলেশন এক সপ্তাহের মধ্যে রেখে দেওয়া যায় কি না তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। তবে হাসপাতালে ভরতি বা কোমর্বিডিটি থাকলে এই নিয়ম খাটবে না তা বলাই বাহুল্য।”
[আরও পড়ুন: Coronavirus Update: একদিনে দেশে করোনা সংক্রমণ ৫৮ হাজার পার, কবে কমতে পারে ওমিক্রন দাপট? জানাল ICMR]
একই সঙ্গে নতুন কোভিড প্রোটোকল প্রকাশের ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন তিনি। যেখানে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ এবং কাশির ওষুধ প্রোটোকল থেকে বাদ দেওয়া হবে। যুক্ত করা হবে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ এবং ইনহেলার। তবে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও ঘোষণা হয়নি।
এর আগে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তীও জানিয়েছিলেন, ”দেখা যাচ্ছে সংক্রমণ শুরু হওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যেই রোগী সুস্থ হতে শুরু করেন। অর্থাৎ ভাইরাসের ক্ষমতা কমতে থাকে। বাকি পাঁচদিনের মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে রোগী। তাই চিকিৎসকদের ১৪ দিনের বদলে ১০ দিন নিভৃতবাসের কথা বলা হয়েছে।”