সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি ইরানের নারী স্বাধীনতা আন্দোলনের মুখ। যে ‘দোষে’ জেলবন্দি, সেই গুণের কারণেই পেয়েছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার (Nobel Peace Prize)। আগেই জানা গিয়েছিল, মৌলবাদী শাসকের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে নোবেল পুরস্কার মঞ্চে ভাষণ দেবেন নার্গিস সাফি মহাম্মদি। ঠিক তাই ঘটল এদিন। কিন্তু কীভাবে? নোবেল মঞ্চে নার্গিসের ঐতিহাসিক ভাষণ পাঠ করলেন তাঁর যমজ সন্তান আলি ও কিয়ানি। আরও একবার “অত্যাচারী, নারী বিরোধী” মৌলবাদী সরকারের নিন্দা করলেন নার্গিস। বিশ্বমঞ্চে মুখ পুড়ল ইরানের।
বার বার গ্রেপ্তারি, দিনের পর দিন জেলবন্দি রেখে, নির্যাতন করে নার্গিসকে ঠিক যতখানি অসম্মান করছে ইরান সরকার, ঠিক ততখানি কিংবা তারও বেশি সম্মান দেখালো নোবেল কমিটি। নরওয়ের ওসলো শহরে নোবলের মঞ্চে ছিল ইরানের হিজাব বিরোধী আন্দোলনের মুখ নার্গিসের পোর্ট্রেট। সমাজকর্মীকে কুর্নিশ জানাতে ফাঁকা রাখা হয়েছিল একটি চেয়ার। এর পরই সন্তানদের কণ্ঠ মারফৎ গোটে বিশ্বকে নারীর অধিকার নিয়ে বার্তা দিলেন নোবেলজয়ী।
[আরও পড়ুন: আবদুল্লা থেকে মুফতি, ৩৭০ ধারা নিয়ে সুপ্রিম রায়ে কী বলছেন কাশ্মীরের নেতারা?]
‘কারাগারের উঁচু, ঠান্ডা দেয়ালের আড়াল থেকে’ শিরোনামে নিজের বক্তব্যে নার্গিস বলেন, “আমি মধ্যপ্রাচ্যের মেয়ে। বিরাট ঐতিহ্যশালী এক সভত্যার প্রতিনিধি। আজ যে অঞ্চল যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ আর মৌলবাদের ফাঁদে পড়েছে।” আরও বলেন, “ইরানের নারী হিসেবে আমি গর্বিত। যদিও বর্তমানে সেই দেশ এক স্বৈরাচারী মৌলবাদী সরকারের তীব্র নিপীড়নের মুখে।” তবে তিনি আশাবাদী, ইরানের মানুষ যাবতীয় প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করবেই। ইরানের বেগম রোকেয়া তিনি। নার্গিস সাফি মহাম্মদির দেখানো পথে আলোর সন্ধানে ইরানের অসংখ্য মেয়েরা। সকলেই তো আর প্রকাশ্য প্রতিবাদে অংশ নিতে পারেন না।
[আরও পড়ুন: ঠিক যেন সিনেমা! খুনের দায়ে জেলে, আইন পড়ে নিজের মুক্তি আদায় যুবকের]
প্রসঙ্গত, ৫১ বছর বয়সি এই সমাজকর্মীকে একাধিকবার হেনস্তা করেছে ইরানের প্রশাসন। সব মিলিয়ে মোট ১৩ বার গ্রেপ্তার হয়েছেন নার্গিস। পাঁচটি অভিযোগে ইতিমধ্যেই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ইরানের আদালত। এখনও ১৫৪টি অভিযোগ রয়েছে নার্গিসের বিরুদ্ধে। আপাতত ৩১ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন তিনি।