সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক দিন পরেই ২০ বছরে পা দিতেন তিনি। তার আগেই ইরানের নামী শেফ মেহরশাদ শাহিদিকে ‘পিটিয়ে খুন’ করল ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড ফোর্স। দারুণ জনপ্রিয় হয়েছিলেন শাহিদি। তাঁকে ‘ইরানের জেমি অলিভার’ বলা হত।
হিজাব বিদ্রোহে সমর্থন দেওয়ায় ইরানের নীতি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ২২ বছরের তরুণী মাহসা আমিনি। হেফাজতে চলা পুলিশি অত্যাচারে জেরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। সেই থেকে প্রতিবাদের আগুন জ্বলছে ইরানে। সেই হিজাব-বিরোধী আন্দালনে যোগ দেওয়ায় ২৫ অক্টোবর শাহিদিকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। হেফাজতে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, খুলিতে আঘাতের কারণে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। শাহিদির পরিবারের দাবি, তাদের ছেলের হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে বলার জন্য চাপ দিচ্ছে প্রশাসন।
[আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে হারাতে না পারার ‘শাস্তি’, রুশ প্রেসিডেন্টের পথ থেকে সরানো হচ্ছে পুতিনকে!]
এদিকে, ইরানের প্রধান বিচারপতি আবদোলমেহদি মৌসাভি অবশ্য জানিয়েছেন, শাহিদির দেহে হাত, পা বা খুলি ভাঙার কোনও চিহ্ন মেলেনি। শাহিদির মৃত্যু নিয়ে ইরানে নতুন করে অশান্তির আগুন জ্বলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২৯ অক্টোবর তাঁর শেষকৃত্যের পর বিক্ষোভ মিছিলে পা মিলিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনায় ইরানের মোল্লাতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আরও জোড়াল হয়ে উঠবে। দেশটির বর্তমান সুপ্রিম লিডার আয়াতল্লা আলি খামেনেই ও প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রবল দাবি উঠছে।
উল্লেখ্য, ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশের মারে মৃত্যু হয় তরুণী মাহসা আমিনির। তারপর থেকেই দেশজুড়ে চলছে প্রতিবাদী মিছিল। স্বৈরশাসকের বিরোধিতায় ইটালির বুকে তৈরি হওয়া ‘বেলা চাও’ গানটি গেয়ে ইরানের (Iran) রাস্তায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন আরব দুনিয়ার মেয়েরা। হিজাব বিরোধী (Anti-Hijab) সেই আন্দোলনে শামিল পুরুষদের একাংশও। কিন্তু বেকায়দায় পড়লেও কিন্তু অবস্থান বদলে নারাজ ইরানের সরকার। তেহরানের দাবি, এই বিক্ষোভে আসলে ষড়যন্ত্র এতে হাত রয়েছে আমেরিকার। একইসঙ্গে সরকারের আরও দাবি, এই আন্দোলনকে মদত দিচ্ছে ‘কোমলা’ বলে ইরানের একটি বামপন্থী সংগঠন এবং বেশ কয়েকটি জঙ্গি গোষ্ঠী।