সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবে জাপান! এই জল্পনাই উসকে দিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত টোকিওর দূত ইতো নাওকি। বাংলাদেশ যখন মায়ানমার থেকে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের চাপে হিমশিম খাচ্ছে তখন জাপানি রাষ্ট্রদূতের এহেন মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
বুধবার ঢাকা ছাড়ার আগে জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, কিছু রোহিঙ্গা (Rohingya) শরণার্থীকে পুনর্বাসন দেওয়ার কথা ভাবছে টোকিও। বাংলাদেশ যখন মায়ানমার থেকে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে আসা ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীর চাপ কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছে তখনই রাষ্ট্রদূত এ কথা জানালেন। বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আরও জানান, বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে রোহিঙ্গাদের তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের অনুরোধ পেয়েছে জাপান। এ ছাড়া রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদ রোহিঙ্গাদের জাপানে পুনর্বাসনের সম্ভাবনার বিষয় বিবেচনার পরামর্শ দিচ্ছে।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পাক হানাদারদের হাতে নিহত বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন হাসিনার]
রাষ্ট্রদূত ইতো জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই টোকিও থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তরে একটি শহরে ৩০০ রোহিঙ্গা বাস করছে। কিন্তু সাধারণ নীতি অনুসারে জাপান বিদেশি শরণার্থীদের বিষয়ে কিছুটা সতর্ক ছিল। ঢাকা ত্যাগের আগে রাষ্ট্রদূত ইতো বলেন, “জাপানে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের একটি বেস রয়েছে। তবে এই মুহূর্তে এ নিয়ে আমরা এখনও কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা জানি প্রত্যাবাসনই এই সমস্যার একমাত্র সমাধান এবং মায়ানমারই একমাত্র দেশ যেটি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণভাবে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে।”
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরব হন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট জানান, বাংলাদেশ সবসময় মানবাধিকার রক্ষা করে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের বোঝা আর বহন করা সম্ভব নয়। এদিকে, মায়ানমারের ফের সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলিতে উত্তেজনা রয়েছে। একাধিক গোলা বাংলাদেশের জমিতেও আছড়ে পড়েছে। ঢাকা এনিয়ে কমপক্ষে চারবার প্রতিবাদও জানিয়েছে মায়ানমারের কাছে। এই লড়াইয়ের জেরে আবারও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা।