shono
Advertisement

‘কোনও শব্দ করা যেত না, ৪০ মাস নরকযন্ত্রণা ভোগ করেছি’

আইএস ডেরায় বন্দিদশার অভিজ্ঞতা জানালেন জাপানি সাংবাদিক৷ The post ‘কোনও শব্দ করা যেত না, ৪০ মাস নরকযন্ত্রণা ভোগ করেছি’ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 12:28 PM Oct 27, 2018Updated: 12:28 PM Oct 27, 2018

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেশায় সাংবাদিক। কাজের তাগিদে গিয়েছিলেন সিরিয়ায়। কিন্তু ভাগ্যবিড়ম্বনায় আইএস জঙ্গিদের হাতে ধরা পড়ে হয়ে গেলেন পণবন্দি। তাও দু-এক মাস নয়, দীর্ঘ ৪০ মাস! সেই দুঃসহ যন্ত্রণার ভয়ংকর বর্ণনা দিয়েছেন সদ্যমুক্ত জাপানি সাংবাদিক জাম্পেই ইয়াসুদা। বৃহস্পতিবার ঘরে ফিরে সিরিয়ায় আটক থাকার দিনগুলিকে ‘নরক’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। শারীরিক ও মানসিক, উভয় ক্ষেত্রেই তাঁকে কার্যত ‘নরকযন্ত্রণা’ ভোগ করতে হয়েছে। ‘চর’ সন্দেহে তাঁর উপর অবর্ণনীয় অত্যাচার চালিয়েছে জঙ্গিরা। জাপানি দৈনিক আশাই সিমবুম’কে দেওয়া সাক্ষ্যাৎকারে এমনই বিবরণ দিলেন জাম্পেই।

Advertisement

[‘সিরিয়া নয়, মানবতার জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক সন্ত্রাসবাদী পাকিস্তান’]

কীরকম সেই অভিজ্ঞতা? কোনও রকম শব্দ করা ছিল একেবারেই নিষেধ। তা সে ঘুমের মধ্যে হোক বা জেগে থাকা অবস্থায়। ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা যাবে না বলে ফতোয়া দিয়েছিল আইএস। রোজই রক্ষীরা তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিত। কিন্তু সেই দিনটা আর আসত না। কখনও খাবার দেওয়া হত না। কখনও ক্যানবন্দি খাবার পৌঁছত তাঁর কাছে। কিন্তু দেওয়া হত না ক্যান খোলার ‘ওপেনার’। মাত্র ১.৫ মিটার লম্বা ও ১ মিটার চওড়া জায়গায় বন্দি করে রাখা হয়েছিল আট মাস। ছিল না স্নান করা, কাপড় ধোওয়া, এমনকী নড়াচড়া বা শব্দ করার অনুমতিও। “স্নান করতে পারতাম না বলে মাথা চুলকাত। কিন্তু তা করতে গেলে শব্দ হত। ব্যস, ছুটে আসত রক্ষীরা। নাক ডাকা, কার্যত নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়া, আঙুল মটকানো, এমনকী ঘুমের মধ্যে এপাশ-ওপাশ করাও ছিল বারণ,” স্মৃতির ঝাঁপি খুলে যন্ত্রণাকাতর কণ্ঠে বলেছেন ইয়াসুদা।

সময় সময় দৈনন্দিন জীবন আরও কণ্টকিত হয়ে উঠত। আড়মোড়া ভাঙতে গিয়ে শব্দ করায় তাঁর বিরুদ্ধে আড়ি পাতার অভিযোগ এনে নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করেছিল জঙ্গিরা। যাতে কোনও নড়াচড়া বা শব্দ না হয়, একটা পর্যায়ে ইয়াসুদা টানা ২০ দিন দাঁতে একটা কুটোও কাটেননি। চেহারা কঙ্কালসার হয়ে গিয়েছিল। সারাক্ষণ পেটে যন্ত্রণা হত। এভাবে কিছুদিন চললে মৃত্যু ছিল নিশ্চিত। তবে ভাগ্য ভাল। কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁকে অন্য জায়গায় সরানো হয়। মুক্তি পাওয়ার সপ্তাহ খানেক আগে পুরনো সেই নরক যন্ত্রণার জীবনে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। পরে একটি ‘সেল’-এ। যা আদতে ছিল একটি ছোট বাড়ি। পরের দিন গাড়িতে চাপিয়ে তাঁকে তুরস্ক সীমান্তে নিয়ে আসা হয়। অসুস্থ, ক্ষয়াটে চেহারা।

[আদালতের রায়ে পাকিস্তানে আর নিষিদ্ধ নয় হাফিজের জঙ্গি সংগঠন]

মুখভর্তি দাড়ি-গোঁফের জঙ্গল নিয়ে জাপানে পৌঁছে ইয়াসুদা সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে কষ্ট করে হেসেছেন ঠিকই। কিন্তু কিছু বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। পরে তাঁর স্ত্রী জানান, পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও চিকিৎসার পর ইয়াসুদা প্রকাশ্যে এসে কথা বলবেন। তবে দেশে ফেরার আগে ইস্তানবুল বিমানবন্দরে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে ইয়াসুদা বলেছেন, “শেষ পর্যন্ত যে জাপানে ফিরতে পারছি, সে জন্য খুবই খুশি। তবে এরপর কী হবে, কী করব, কিছুই জানি না।” ইয়াসুদাকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য কাতার ও তুরস্ককে ধন্যবাদ জানিয়েছে জাপান সরকার। তবে কোনও মুক্তিপণ দেওয়ার কথা তাঁরা অস্বীকার করেছে।

The post ‘কোনও শব্দ করা যেত না, ৪০ মাস নরকযন্ত্রণা ভোগ করেছি’ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার