কলকাতার ‘হিং’-এর গন্ধ পৌঁছয় না ঢাকায়। এপারের নায়িকাদের ‘ঈর্ষা’ নিয়ে তাই বিচলিত নন। শহরে ঝোড়ো সফরের মধ্যে জয়া এহসান এমনটাই দাবি করলেন ইন্দ্রনীল রায়ের কাছে।
আপনি কি জানেন কলকাতায় না থাকলেও বেশ কিছু হিরোইন আপনার ফেসবুকে লক্ষ্য রাখেন, আপনি ঢাকা না কলকাতা? তাঁদের নজর এতই তীক্ষ্ণ যে কলকাতায় থাকলে তো মনে হয় তাঁরা লুকিয়ে আপনার লোকেশন শেয়ারিংও হ্যাক করে নিয়েছেন।
জয়া: (হাসি) দেখুন কলকাতায় থাকলে আমাকে ট্র্যাক করা খুব সহজ। আমি দক্ষিণ কলকাতায় থাকি। হয় বাড়ি থেকে স্টুডিও, নয় বাড়ি থেকে কোনও মিটিং করতে কোনও প্রোডাকশন হাউসের অফিস। এই তো আমার গতিবিধি। এর বাইরে কোথাও যাই না। তাই ট্র্যাক করা সহজ (হাসি)।
কিন্তু শোনা যায় দক্ষিণ কলকাতার এক অঞ্চলে আপনার গাড়ি দেখে নাকি এক টপ হিরোইন হোয়াটসঅ্যাপ করেছিলেন, ‘কী রে ওই ডিরেক্টরের বাড়ি যাচ্ছিস?’
জয়া: সেই খবরও পেয়ে গেছেন আপনারা? (হাসি)
এ বার ফ্লাইট ল্যান্ড করা থেকে তো শুধুই ছুটছেন। একটু সময় নিয়ে আসতে পারতেন তো?
জয়া: আর বলবেন না। সত্যি এ বারে বড্ড কম সময়ের জন্য এসেছি। আসলে বাংলাদেশে কিছু কাজ আছে তাই ফিরে যেতে হচ্ছে। শিগগিরি টাইম নিয়ে এসে একটু বেশি দিন থাকব কলকাতায়। বলুন বলুন… শুরু করি ইন্টারভিউ।
আজ সকালেই একটা আলোচনা হচ্ছিল। যেখানে সম্ভাব্য ছবির কাস্টিং নিয়ে ডিসকাস করতে গিয়ে নায়কের চয়েস নিয়ে অনেকেই ভিন্ন মত পোষণ করলেন। কিন্তু হিরোইন হিসেবে সবার কমন চয়েস- জয়া এহসান।
জয়া: কী বলছেন? আরে থ্যাঙ্কস থ্যাঙ্কস। (অনেকক্ষণ চুপ) কাস্টিং নিয়ে যেটা বললেন সেটা কি সত্যি?
[ ‘সেফ খেলিনি’, ‘অব্যক্ত’ নিয়ে অকপট পরিচালক অর্জুন ]
একদম সত্যি। যাঁদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল তাঁরা সবাই আপনার খুব পরিচিত। রেকর্ডার বন্ধ হলে নামগুলো বলে দেব। সবার কমপ্লেন শুধু একটাই- জয়ার ডেট পাওয়া যায় না।
জয়া: (হাসি) কাস্টিংয়ের সময় আমার কথা যে এখানকার মানুষ বিবেচনা করছেন, করেছেন তার জন্য আমি কলকাতা ফিল্ম ফ্র্যাটার্নিটির কাছে অসম্ভব কৃতজ্ঞ। একজন আর্টিস্ট হিসেবে সেটাই তো আরাধ্য। অভিনয় অনেকেই করেন কিন্তু যে ভাবে এখানকার ইন্ডাস্ট্রি, এখানকার দর্শক আমাকে অ্যাকসেপ্ট করেছেন, যে ভালবাসা আমি পেয়েছি… সত্যি ভাগ্যবান! আমি অসম্ভব স্বচ্ছন্দ্য বোধ করি কলকাতায়।
কিন্তু জয়ার ডেটস কি পাওয়া যায়?
জয়া: না না, এটা ঠিক নয়। আমি আসলে একটু ধীরেসুস্থে কাজ করার পক্ষপাতী। একটা ছবির শুটিং শেষ হয়েই আবার গায়ে গায়ে আর একটা ছবির শুটিংয়ের ব্যাপারটা আমার ভাল লাগে না। আর ভাল না লাগার পাশাপাশি আর একটা কারণও আছে। আমি অত মেধাবী নই।
বিনয় আবার কোথা থেকে এসে পড়ল?
জয়া: না না বিনয় বা হিউমিলিটি নয় ইন্দ্রনীলদা। এটাই সত্যি। যেটা আগে বললাম, ‘এক যে ছিল রাজা’-র মৃন্ময়ী করে তাই আমার একটু সময় লেগেছিল সেটা থেকে বেরিয়ে আসতে। ওটা থেকে বেরিয়ে আমি কিছু দিন জয়া এহসান হিসেবে থাকি। তার কিছু দিন পরে আমি ‘বিজয়া’-র ‘পদ্মা’ হয়ে উঠি। আই নিড দ্যাট টাইম। যারা মেধাবী তারা এই চেঞ্জটা চট করে করতে পারে। আমি পারি না।
হয়তো চট করে যাঁরা এই চেঞ্জ করতে পারেন তাঁরা অত ভাবেন না চরিত্র নিয়ে। তাঁদের কাছে ব্যাপারটা সুইচ অন-সুইচ অফ।
জয়া: দেখুন এটা তাঁরা ভাল বলতে পারবেন। আমি এটুকু জানি, পৃথিবীতে দু’রকম মানুষ হয়। কেউ কেউ বর্ন ট্যালেন্টেড। কেউ আবার পরিশ্রম করে নিজের রাস্তা তৈরি করে। আমি পড়ি দ্বিতীয় বিভাগে। আমি তাই ধীরেসুস্থে এগোই। যে দুটো গুণ আমার সত্যিই আছে সেটা হল ধৈর্য আর পরিশ্রম। এই দুটো গুণের কথা কিন্তু আমি নিজমুখেই বলছি। কোনও হিউমিলিটি বা বিনয় নেই (হাসি)।
থাকা উচিতও নয় এই মুহূর্তে। গত অক্টোবরে সৃজিতের ছবিতে নায়িকা ছিলেন আপনি। সামনে দু’দুটো ছবি। ২০১৯ জানুয়ারির শুরুর দিকে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের। পরের দিকে শিবপ্রসাদের।
জয়া: (হাসি) শুনুন শুনুন। জানেন না এক মাঘে শীত যায় না? পরের বছরও যদি এমন ছবির লাইন-আপ থাকে তখন এই প্রশ্নটা ভ্যালিড হবে। আর তা ছাড়া শুধু আমি কেন, সবাই কত ভাল ভাল কাজ করছে। হয়তো পরপর এই তিনজন এত বড় পরিচালকের ছবি আসছে বলে আপনাদের মনে হচ্ছে। তবে হ্যাঁ, এটা সত্যি, ‘পদ্মা’ শুধুমাত্র কৌশিকদাই লিখতে পারেন। শিবুদা ‘কণ্ঠ’ ছবিতে যে চরিত্রটা আমাকে দিয়েছেন সেটা সত্যি অতুলনীয়। ‘এক যে ছিল রাজা’-তে আমার কাজ শুনেছি মানুষের ভাল লেগেছে। যদিও আমার ছবিটা এখনও দেখা হয়নি।
সে কি, আপনি দেখেননি এখনও?
জয়া: না, এখনও দেখিনি। তবে ছবিটা যে মানুষের ভাল লেগেছে, আমার কাজ যে ভাল লেগেছে সমালোচকদের সেটা সৃজিত আমাকে জানিয়েছেন হোয়াটসঅ্যাপে।
আজকাল সৃজিতকে কি ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করেন নাকি?
জয়া: এটা সম্মানের জায়গা থেকে। সৃজিত মুখোপাধ্যায় কাজের জায়গায় আমার পরিচালক। আমার তো ‘আপনি’ বলেই সম্বোধন করা উচিত, তাই না? কাল কাজের জায়গায় যদি কোনও অভিনেত্রী থাকে যার কাজের অভিজ্ঞতা আমার থেকে বেশি , তাকেও আমি ‘আপনি’ বলেই সম্বোধন করব। গুণী মানুষদের ব্যাপারে কথা বলতে গেলে এ ভাবেই তো বলা উচিত। সেটাই শিখেছি।
এ বার একটু কাজের জায়গায় ফিরি। আমরা তো অনেক নায়িকার সঙ্গেই কথা বলি। প্রথম দিকে জয়া এহসান নিয়ে তাঁদের বেশি মাথা ঘামাতে দেখিনি। তার পর যখন আপনি একটার পর একটা বড় প্রোজেক্ট পেতে শুরু করলেন, যখন কলকাতা মিডিয়ায় আপনাকে নিয়ে লেখালিখি শুরু হল, দেখলাম তাঁদের মনোভাবটা বদলাতে শুরু করেছে।
জয়া: (হাসি) তাই? বলুন বলুন কী রকম?
মানে, ফোন করলেই দেখছি আজকে তাঁরা জানতে চান আপনি কী কী ছবি করছেন। বেশ একটা হিংয়ের গন্ধ পাই তাঁদের কথাবার্তায়।
জয়া: (একটু থেমে) কীসের গন্ধ… আমি না ঠিক এই রেফারেন্সটা ধরতে পারছি না।
হিংয়ের গন্ধ। ফিগার অফ স্পিচ। মানে একটু হিংসে… জেলাসি।
জয়া: (অট্টহাসি) বুঝেছি বুঝেছি। শুনুন শুনুন, ওই মশলাটা না ঢাকায় খুব বেশি ব্যবহার হয় না।
কী বলছেন?
জয়া: একদম সত্যি বলছি। ঢাকার মানুষ অত হিং খায় না। আমি কৌটো করে হিং কলকাতা থেকে নিয়েও গেছি ঢাকায়। একে তো টেস্টটা কিছু দিনের মধ্যেই উবে যায়। তা ছাড়া আমি খাবারেও হিংয়ের টেস্ট পাই না।
[ এক চুমুকেই তৃপ্তি, কলকাতার এসব চায়ের দোকানে ঢুঁ মেরেছেন? ]
হিংয়ের কচুরিতেও পান না হিংয়ের গন্ধ?
জয়া: সত্যি বলছি পাই না। তাই কারও কথায় যদি হিংয়ের গন্ধ থাকেও, সেটা আমাকে এফেক্ট করে না। আর ওই যে বললাম, আমার দুটো জিনিস আছে- ধৈর্য আর পরিশ্রম। আমাকে যে এখানকার মানুষ ভালবেসেছেন সেটা তো আমার কাজের জন্যই। হয়তো কোথাও তাঁরা আমার পরিশ্রমটাও দেখতে পেয়েছেন। সত্যি কেউ খাতির করে তো কোনও দিন কাজ দেয়নি। আমাকেও পরীক্ষা দিতে হয়েছে অভিনয়ের। তাই যত দিন আমার পরিশ্রম আর ধৈর্যটা আমার সঙ্গে আছে, হিংয়ের গন্ধ নিয়ে আমি ভাবতে চাই না। ওগুলো নেগেটিভিটি আনে মনে আর আমি যে কোনও রকমের নেগেটিভিটি থেকে দূরে থাকি।
নেগেটিভিটি যখন নেই, তা হলে পাঁচজন হিরোইনের নাম বলছি। সোহিনী। মিমি। নুসরত। প্রিয়াঙ্কা। ঋতুপর্ণা। এঁদের প্রত্যেককে বন্ধুত্বের নিরিখে আপনি দশে কত দেবেন?
জয়া: এটা কী করে সম্ভব…
বলুন না। বন্ধুত্বের বিচারে সোহিনীকে কত দেবেন?
জয়া: বন্ধুত্বের কি র্যাঙ্কিং করা যায় বলুন? আমি সবার সঙ্গে ভীষণ আন্তরিক ভাবে মিশেছি। তারাও আমার সঙ্গে সে ভাবেই মিশেছে। মিমি, নুসরত, প্রিয়াঙ্কা সবার ব্যবহার অসম্ভব ভাল। তবে যার সঙ্গে আমি সত্যিই খুব সাবলীল সেটা সোহিনী। ও আমার দারুণ বন্ধু।
আর ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত?
জয়া: দেখুন, ঋতুদি তো সবার প্রিয়। তিনি আমাদের সবার ছায়াস্থানীয়। সবাইকে কোল দেন।
বুঝলাম। এ বার একটু আপনার প্রযোজিত ছবি ‘দেবী’ প্রসঙ্গে যাই। শোনা যাচ্ছে আজ অবধি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বক্স অফিস কালেকশন করেছে।
জয়া: (হাসি) এটা আমার কাছে একটা বিরাট পাওনা। আমি খুব চেয়েছিলাম প্রোডিউসার হিসেবে নিজের একটা আলাদা আইডেন্টিটি তৈরি করতে। এবং সেটা আমি করতে পেরেছি। এই আইডেন্টিটি কিন্তু অভিনেত্রী জয়া এহসানের থেকে একেবারে ভিন্ন। আর সত্যি যে ছবিটা বাংলাদেশের ছবির ইতিহাসে হায়েস্ট গ্রসার হয়ে উঠবে সেটা কিন্তু আমরা কেউ ভাবিনি। আরও ভাবিনি কারণ আমরা মোটেই নিরাপদ ছবি বানাইনি।
সে দিন আবির চট্টোপাধ্যায় একটা আড্ডায় বলছিলেন ‘দেবী’ ছবিটা নাকি অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাপক ব্যবসা করেছে?
জয়া: শুধু অস্ট্রেলিয়া? আমেরিকায় আজ অবধি সবচেয়ে বেশি শো পেয়েছে ছবিটা। এগুলো কিন্তু প্রপার শো। কোনও প্রদর্শনী শো নয়। সেখানে ‘ঠাগস অফ হিন্দোস্তান’-এর মতো ছবির সঙ্গে একই মাল্টিপ্লেক্সে রিলিজ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় হায়েস্ট নাম্বার অফ রিলিজ। এই প্রথম বাংলা ছবি দেখানো হল নিউজিল্যান্ড, সুইডেন আর তাসমানিয়ায়। সত্যি ‘দেবী’ জাস্ট আর একটা ছবি হয়ে থাকল না, মানুষজন পজেস করতে শুরু করল ছবিটা। ‘দেবী’ আজকে একটা মুভমেন্ট। তবে তার জন্য বিশাল ক্রেডিট প্রাপ্য আমাদের মার্কেটিং টিমের, আমার মার্কেটিং কনসালট্যান্ট রুমমান রশিদ খানের। আমরা দিন-রাত এক করে এই ছবির প্রচার করেছি।
বাবা। নায়িকা জয়া এহসান এত সব শিখলেন কবে? মার্কেটিং, স্ট্র্যাটেজি, অ্যাকাউন্টস। এ তো আপনার নতুন আপডেটেড ভার্সন। জয়া এহসান 2.0।
জয়া: (হাসি) এটা কিন্তু দারুণ নাম। জয়া এহসান 2.0।
এত যে মার্কেটিং শিখলেন, সে সব টিপস এ বার এখানে দেবেন আপনার পরিচালক-প্রযোজকদের? কৌশিক, সৃজিত, শিবু, শ্রীকান্ত, সূপর্ণ…
জয়া: তিনটে জিনিস বলব। এক, ‘দেবী’ ছবিতে যেটা আমার সুবিধে হয়েছিল, তা হল গল্পটা ছিল হুমায়ুন আহমেদের। ওঁর নাম থাকা মানে আপনি পাঁচ পা এমনিই এগিয়ে গেলেন। সেটা ছিল বড় অ্যাডভান্টেজ। দ্বিতীয়ত, আমি যা মার্কেটিং শিখেছি তা তো এপার বাংলার মানুষের কাছেই শিখেছি। সৃজিত, শ্রীকান্তদা, কৌশিকদা, এঁরা খুব ভাল করে জানেন নিজের ছবির কী রকম মার্কেটিং হওয়া উচিত। আর তৃতীয়ত, এই যে পুরো বিশ্বে ছবিটা এত ভাল করল তার একটা বড় কারণ কলকাতায় আমার এই কাজগুলো। কলকাতার মানুষের এ ভাবে আমাকে অ্যাকসেপ্ট করা, এটা আমাকে ভীষণ হেল্প করেছে গোটা বিশ্বে। ইট হ্যাজ বিন আ হিউজ অ্যাডভান্টেজ।
[ মোবাইলের মোহ কাটাতে বন্ধু তৈরি করুন ]
তা হলে আর হিরোইনদের দোষ কী বলুন? একে সব ভাল প্রোজেক্টে আপনি। সঙ্গে এখন নামী প্রোডিউসার। বাংলাদেশের দিক থেকে কলকাতায় ধেয়ে আসা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়ের নাম আর কিছু দিন পরে ‘জয়া’ রাখা হবে।
জয়া: হাহাহাহাহাহা।
একটা কথা কি জানেন? এখানকার হিরোইনরা আপনার জনপ্রিয়তার আরও একটা কারণ খুঁজে বার করেছেন।
জয়া: হিংয়ের গন্ধ ছাড়া আরও কারণ আছে?
অবশ্যই আছে। হিরোইনদের বক্তব্য, ঢাকা থেকে কলকাতা এলে নাকি পাঁচজন পরিচালকের জন্য আপনি আলাদা আলাদা হাঁড়িতে বিরিয়ানি আর ভুনা আনেন। কারও কারও জন্য ইলিশ মাছ। সিরিয়াসলি, তাঁরা এটা আমাকে বলেছেন। আমার ধারণা, বাকি অনেক সাংবাদিককেই তাঁরা বলেছেন।
জয়া: (হাসি) হা হা হা হা। সিনটা ভাবুন। দমদম এয়ারপোর্টে নামছি পাঁচ হাঁড়ি বিরিয়ানি আর ভুনা নিয়ে। কী বলব!
কিছু তো বলুন?
জয়া: (ভেবে) বিরিয়ানি আর ভুনা দিয়ে কি কাজ পাওয়া যায়? আর এখানে তো কাজ করেছি আমি পাঁচ-ছ’জন পরিচালকের সঙ্গে। আরও কত পরিচালক রয়েছেন যাঁদের সঙ্গে আমার কাজ করা হয়নি। তা হলে পরের বার তাঁদের জন্য বিরিয়ানি, ভুনার সঙ্গে আমি ইলিশ মাছও আনব। তা হলে যদি তাঁরাও আমাকে কাজ দেন। একটা কথা বলি, কৌশিকদা, সৃজিতদা, শিবুদা, অরিন্দমদা যে মাপের পরিচালক, তাঁদের কাছে অভিনয় ছাড়া আর কিছু ম্যাটার করে না। কিচ্ছু না। ওটাই প্রথম শর্ত, ওটাই শেষ।
অবাকই হলাম অরিন্দম শীলের নাম নিলেন দেখে। গত সোমবারের কফিহাউসে অরিন্দম আপনার ব্যাপারে বলেছেন, আপনার এখনকার চেহারা নাকি আগের চেহারা থেকে বদলে গেছে। টু কোট হিম, “জয়া বোধহয় কিছু একটা করেছে ওর মুখে।” পরিষ্কার ইঙ্গিত প্লাস্টিক সার্জারির।
জয়া: (গম্ভীর) হ্যাঁ আমি পড়েছি ইন্টারভিউটা।
কী বলবেন?
জয়া: এই ইন্ডাস্ট্রিতে উনি আমার প্রথম ডিরেক্টর। ছবির নাম ছিল ‘আবর্ত’। যে রুচিশীল মানুষটার হাত ধরে আমি এই ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলাম, সেই মানুষটার রুচির সঙ্গে এই কথাগুলো যিনি বলেছেন তাঁকে আমি মেলাতে পারছি না। আমার ‘বিজয়া’ ছবিটা জানুয়ারি মাসে মুক্তি পাবে। আমি চাইব উনি ছবিটা দেখুন। আশা করি তার পর উনি নিজের বিবৃতিটা পালটাবেন। উনি ‘এক যে ছিল রাজা’ ছবিটাও এর মধ্যে দেখে নিতে পারেন। যদি এই দুটো ছবি দেখে উনি ওঁর স্টেটমেন্টটা চেঞ্জ করেন, তা হলে আমি সম্মানিত বোধ করব। আর একটা জিনিস বলব। দেখলাম উনি আরও দু’জন অভিনেত্রীর ব্যাপারেও একই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তাঁদের নাম উনি নেননি। এটা আমার আশ্চর্য লাগল।
সত্যি আপনাকে নিয়ে গসিপ শেষ হওয়ার নয়।
জয়া: আর কী গসিপ?
জানি না আপনি কী ভাবে রিঅ্যাক্ট করবেন কিন্তু লাস্ট তিন মাসে ইন্ডাস্ট্রির একটা অংশ এটা বারবার করে বলছে, এই মুহূর্তে আপনি গণেশ মণ্ডলের ‘খুব প্রিয়’?
জয়া: (হাসি) গণেশ মণ্ডল মানে কৌশিকদা তো? (হাসি) আমি আর কী বলব? শুনুন, কৌশিকদা আমার কাছে নমস্য একজন মানুষ। শুধু তাই নয়, উনি একজন অসামান্য পরিচালক। আর্টিস্ট এবং মানুষ কৌশিক গাঙ্গুলিকে আমি অসম্ভব শ্রদ্ধা করি।
তা হলে ‘বিসর্জন’-এর পর এ বার ‘বিজয়া’-তে কী হবে? গণেশ মণ্ডল কি এ বারও নাসের আলিকে হারিয়ে দেবে?
জয়া: নাসের আলি এ বার দারুণ। অসাধারণ অভিনয় করেছে আবির। হি ইজ ভেরি গুড। খুব প্রশংসা হবে আবিরের।
থ্যাঙ্ক ইউ জয়া।
জয়া: থ্যাঙ্ক ইউ ইন্দ্রনীলদা। আচ্ছা শুনুন না, এ বারে আনা হয়নি, পরের বার আপনাকে পটানোর জন্য আমি বিরিয়ানি, ভুনা আর ইলিশ আনব। টোটাল ছ’হাঁড়ি নিয়ে এয়ারপোর্টে নামব। (অট্টহাসি) প্লিজ ভাল করে লিখবেন আমার ইন্টারভিউটা।
[ শীতে পোষ্যের যত্ন নিন, রইল কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস ]
The post ‘মানুষটার রুচির সঙ্গে কথাগুলো মেলাতে পারছি না’, অরিন্দম প্রসঙ্গে বিস্ফোরক জয়া appeared first on Sangbad Pratidin.