shono
Advertisement
Royal Bengal Rawhoshyo review

শীতের জঙ্গলে ফেলুদার 'রয়েল বেঙ্গল রহস্য' উন্মোচন কেমন হল? পড়ুন রিভিউ

এবারের সিরিজের 'ম্যান অফ দ্য ম্যাচ' খেতাব প্রাপ্য চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর।
Published By: Sandipta BhanjaPosted: 07:39 PM Dec 29, 2025Updated: 08:54 PM Dec 29, 2025

সন্দীপ্তা ভঞ্জ: সাহিত্যেপ্রমী বাঙালিদের বোধহয় বোধোদয়ের আঁতুরঘর থেকেই গোয়েন্দা, রহস্যপ্রীতি রয়েছে। তাই তাঁর মগজাস্ত্রের জড়িপ নিতে গোয়েন্দাপ্রেমী দর্শকদের কৌতুহলী মন স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় থাকে, তাই নয় কি? শীতের শহরে হইচই-এর হাত ধরে আবারও 'ফেলু মিত্তিরে'র প্রত্যাবর্তন। এবার পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে 'রয়েল বেঙ্গল রহস্য' উন্মোচনে প্রদোষ মিত্র অ্যান্ড কোং।

Advertisement

গল্পের ছক গোয়েন্দাপ্রেমী দর্শকদের কম-বেশি সকলেরই জানা। এর আগে বড়পর্দায় ফেলুদার 'রয়েল বেঙ্গল রহস্য' দেখার সুযোগ পেয়েছে দর্শকমহল। তবে এবার বড়দিন, বর্ষশেষের আবহে নতুন মোড়কে ফেলু মিত্তিরের রহস্য উন্মোচনের কাহিনি নিয়ে এলেন কমলেশ্বর। এর আগে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে প্রদোষ মিত্রের ভূমিকায় নজর কেড়েছেন টোটা রায়চৌধুরী। এবার পরিচালক বদল হলেও তার অন্যথা হয়নি। মোট সাত পর্বের সিরিজে 'ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি' তুলে ধরা হয়েছে। গল্প অনুযায়ী এবার ফেলুদার অভিযান উত্তরবঙ্গে। খানিকটা সিকিম ঘেঁষে। জমিদার মহীতোষ সিংহ রায়ের আমন্ত্রণে বন্ধু জটায়ু আর তোপসেকে নিয়ে এক হেঁয়ালির সমাধান করতে গিয়েছেন তিনি। তার সঙ্গেই রহস্য রোমাঞ্চ হিসেবে উপরি পাওনা 'রয়েল বেঙ্গল রহস্য'। কীরকম?

বংশ পরম্পরায় 'শিকারী' মহীতোষ সিংহ রায়ের গড়ে এক রক্তপিপাসু, নরখাদক বাঘের কর্মকাণ্ডকে ঘিরে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এমন আবহে 'থ্রি মাস্কেটিয়ার্স' পৌঁছন সেখানে। কালবুনির গভীর জঙ্গল তখন সেখানকার আদিবাসীদের কাছে 'অভিশাপ'। প্রথম রাতেই অশনি সংকেত পান ফেলুদা। হেঁয়ালি সমাধান করার মাঝেই ফেলু মিত্তির অসঙ্গতি খুঁজে পান সিংহ রায় পরিবারে। এসবের মাঝে রহস্যমৃত্যু ঘটে মহীতোষের সেক্রেটারি তড়িৎ বাবুর। প্রথমটায় ঘাতক বাঘের দিকে নিশানা থাকলেও সিরিজ এগনোর সঙ্গে সঙ্গে জানা যায়, কীভাবে তড়িতের 'অতি লোভে তাঁতি নষ্ট' হয়েছে। মগজাস্ত্রে শান দিয়ে হেঁয়ালি নির্ভর জঙ্গুলে পথ ধরে সে গুপ্তধনের সন্ধান পেয়ে গিয়েছিল। আর সেখানেই চরম পরিণতি ঘটে তড়িতের। কীভাবে? সেই গল্প অবশ্য সকলেরই জানা, তবে এই পরিসরে 'ফেলুদা' টোটা রায়চৌধুরীর পারফরম্যান্সের প্রশংসা না করলেই নয়।

বিগত দুটো সিরিজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই এবারেও পারফরম্যান্সে বাজিমাত করেছেন তিনি। তবে এবারের সিরিজের বড়প্রাপ্তি মহীতোষ সিংহ রায়ের ভূমিকায় চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। ধূসর চরিত্রেও 'কামাল' করেছেন তিনি। কোনও কোনও দৃশ্যে ফেলু মিত্তির টোটার পারফরম্যান্সকে ছাপিয়ে গিয়েছেন, বললেও অত্যুক্তি হয় না। তোপসের চরিত্রে কল্পন মিত্র এবং লালমোহন গাঙ্গুলির চরিত্রে অনির্বাণ চক্রবর্তীকে যথাযথ মনে হয়েছে। তবে চিত্রনাট্যে লালমোহনবাবুর কমিক টাইমিং আরেকটু পোক্ত হলে মন্দ হত না। অন্য়দিকে কমলেশ্বরের হাত ধরে এবার 'তোপসে' কল্পনকে কিন্তু অনেকটা পরিণত মনে হল। তাঁর স্ক্রিন প্রেজেন্স বেশ ভালো লাগে। অনির্বাণকে বরাবর অভিনেতা হিসেবে জলের মতো মনে হয়। যে পাত্রে রাখা হবে, তাতেই ফিট! দর্শকরা 'একেনবাবু' আর 'জটায়ু'কে গুলিয়ে ফেললেও তিনি কিন্তু দুই চরিত্রে স্বতন্ত্র বজায় রাখতে জানেন। আরেকজনের কথা না বললেই নয়! দীপঙ্কর দত্তের মতো দক্ষ অভিনেতাকে দীর্ঘদিন বাদে দারুণ কাজে লাগালেন পরিচালক কমলেশ্বর। প্রতীক দত্ত এবং শঙ্কর দেবনাথও যথাযথ। সিরিজের সিনেম্যাটোগ্রাফিও প্রশংসার দাবিদার। উত্তরের কুয়াশামাখা জঙ্গল, চা বাগান, জঙ্গলের বুক চিরে সরু রাস্তা বেশ দক্ষতার সঙ্গেই ক্যামেরায় ধরেছেন রম্যদীপ সাহা। এই সিরিজ যদি এখনও না দেখে থাকেন, তাহলে বর্ষবরণের আবহে 'বিঞ্জ ওয়াচ' হিসেবে কিন্তু মন্দ নয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে 'রয়েল বেঙ্গল রহস্য' উন্মোচনে প্রদোষ মিত্র অ্যান্ড কোং।
  • বিগত দুটো সিরিজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই এবারেও পারফরম্যান্সে বাজিমাত করেছেন টোটা রায়চৌধুরী।
  • সিরিজের 'ম্যান অফ দ্য ম্যাচ' খেতাব প্রাপ্য চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর।
Advertisement