শেখর চন্দ্র, আসানসোল: জেরার নামে চৈতালি তেওয়ারিকে (Chaitali Tiwari) মানসিক হেনস্তা করছে পুলিশ। এমনই দাবি বিজেপি কাউন্সিলরের স্বামী তথা গেরুয়া শিবিরের নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারির (Jitendra Tiwari)। তাঁর আরও দাবি, তৃণমূলকে খুশি করতেই এসব করছেন পুলিশ কর্মীরা। আসানসোলের কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনজনের পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় শনিবার টানা ২ ঘণ্টা চৈতালিকে জেরা করে পুলিশ। তদন্তকারীরা ফিরে যেতেই সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তাঁর স্বামী জিতেন্দ্র।
এদিন সকাল দশটায় চৈতালি তেওয়ারিকে জেরা করতে ঘনশ্যাম অ্যাপার্টমেন্টে ঢোকেন পুলিশ কর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেই সময় গোটা অ্য়াপার্টমেন্টকে কার্যত দূর্গে পরিণত করেছিল তারা। ঘিরে দেওয়া হয় লোহার ব্যারিকেড দিয়ে। জেরা চলাকালীন সাংবাদিকদের ফ্ল্যাটের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। আদালতের নির্দেশ মাথায় রেখে ২ ঘণ্টা জেরা করে পুলিশ। তবে বেলা বারোটা নাগাদ জেরা করে বেরনোর সময় তদন্তকারী আধিকারিক বা অন্য আধিকারিকরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
[আরও পড়ুন: ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি, যাদবপুরের সমাবর্তনে রাজ্যপালের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ SFI-এর]
জেরার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন চৈতালির স্বামী তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “জেরার নামে চৈতালি তেওয়ারিকে মানসিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। আর এটা পুলিশ করেছে তৃণমূলকে খুশি করতে। আজ কিছু তৃণমূল নেতা দুটো করে বেশি রুটি খাবেন।” তাঁর আরও দাবি, “হাই কোর্ট একমাত্র এই মামলার তদন্তকারী অফিসার বা আইওকে জেরা করার কথা বলেছিল। কিন্তু এদিন সাতজন আধিকারিক আমার ঘরে চৈতালিকে জেরা করেছে। যা হওয়া উচিত ছিল না।”
জিতেন্দ্রর প্রশ্ন, “হাই কোর্ট ২ ঘন্টা জেরা করার কথা বলেছিল, তা বলে ২ ঘন্টাই জেরা করতেই হবে? একটু কম সময় জেরা করা যেত না? একজন মহিলাকে এভাবে জেরা করা যায়? চৈতালি তো আপরাধী নয়?” তিনি আরও বলেন, “জেরার পরে চৈতালি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। জানি না, আর পুলিশ জেরা করতে আসবে কি না। তবে হাই কোর্টের নির্দেশ মতো সোমবার ২ ঘন্টা পুলিশ জেরা করতে আসতে পারে।”
[আরও পড়ুন: মক্কেল এত ভিআইপি! গর্ব হওয়া উচিত’, অনুব্রতর আইনজীবীর সঙ্গে মশকরা বিচারপতির]
প্রসঙ্গত, ১৪ ডিসেম্বর আসানসোল পুরনিগমের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের রেলপারের রামকৃষ্ণ ডাঙালে শিবচর্চা ও মেগা কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠান ছিল। বকলমে এই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ছিলেন আসানসোল পুরনিগমের বিরোধী দলনেত্রী চৈতালি তেওয়ারি। এই ঘটনায় পদপিষ্ট হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। মৃত ঝালি বাউরির ছেলে সুখেন বাউরি পরের দিন আসানসোল উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অনিচ্ছাকৃত খুন-সহ তিনটি ধারায় এফআইআর হয়।