দীপঙ্কর মণ্ডল: ‘কুমারীত্ব’ নিয়ে অধ্যাপক কনক সরকারের পোস্ট ঘিরে এখনও ফুঁসছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়৷ বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে মঙ্গলবারই তাঁর ক্লাস বয়কট করেছিলেন পড়ুয়ারা৷ বুধবার আর বয়কট নয়৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তে আপাতত আর কোনও ক্লাস নিতে পারবেন না বিতর্কিত অধ্যাপক৷ বুধবার ছাত্রছাত্রী এবং অধ্যাপকরা একটি বৈঠক করেন৷ ওই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ তাঁর বিরুদ্ধে নেওয়া হতে পারে আইনি ব্যবস্থাও, ইঙ্গিত উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের৷
[কনক সরকারকে বরখাস্তের দাবিতে উত্তাল যাদবপুর, ক্লাস বয়কট করে মিছিলে ছাত্রীরা]
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক কনক সরকার৷ গত ৯ নভেম্বর ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন তিনি৷ ‘কুমারীত্ব’ প্রসঙ্গে ওই পোস্টে তিনি লেখেন ‘আজকালকার ছেলেরা বোকাই রয়ে গেল। তারা জানেই না, ভার্জিন মেয়েদের বিয়ে করার কত সুবিধা। একজন ভার্জিন মেয়ে অনেকটা সিলড বোতল বা সিলড প্যাকেটের মতো। আপনি কি টাকা দিয়ে সিলভাঙা কোল্ড ড্রিংকের বোতল কিনবেন? নিশ্চয়ই খোলা বিস্কুটের প্যাকেট কিনবেন না। একটি মেয়ে সতীত্ব নিয়েই জন্মগ্রহণ করে। যতদিন তার সতীত্ব নষ্ট না হয়, ততদিনই সে পবিত্র থাকে। সেই সঙ্গে অনেক গুণ থাকে তার। যৌন স্বাস্থ্যের নিরিখে কুমারী মেয়ে বিয়ে করাই ভাল।’ ফেসবুকে তাঁর এই পোস্টের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় আছড়ে পড়ে৷ সকলেই নিন্দায় সরব হন৷ এই পোস্টের বিরোধিতায় অধ্যাপকের বিরুদ্ধে রীতিমতো আন্দোলনে নামেন পড়ুয়ারা৷ মঙ্গলবার ক্লাস বয়কট করেন ছাত্রছাত্রীরা৷ বুধবার অধ্যাপকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পড়ুয়ারা৷ ওই বৈঠকে ছাত্রছাত্রীরা জানান, শুধু ফেসবুকে নয় ক্লাসেও নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করতেন ওই অধ্যাপক৷ কনক সরকার পড়ানোর অযোগ্য বলেও অভিযোগ করেন পড়ুয়ারা৷ তারই পরিপ্রেক্ষিতে আপাতত আর কোনও ক্লাস নিতে পারবেন না কনক সরকার৷ এছাড়াও পড়ুয়াদের দাবি, বিশিষ্টজনদের দিয়ে ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হোক৷ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ওমপ্রকাশ মিশ্র জানান, পড়ুয়াদের দাবি উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে জানানো হয়েছে৷ এই রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকারের কাছেও৷ সবদিক খতিয়ে দেখেই অধ্যাপক কনক সরকারের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে ব্যবস্থা৷
[মহিলাদের সতীত্ব নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য, বিতর্কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক]
‘কুমারীত্ব’ প্রসঙ্গে অধ্যাপক কনক সরকারের এই পোস্টের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় কালিমালিপ্ত হয়েছে বলেই দাবি উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের৷ তিনি জানান, ওই অধ্যাপক ক্লাসেও নারীবিদ্বেষী নানা মন্তব্য করতেন কিনা, সে বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ অভিযোগ প্রমাণিত হলে, অধ্যাপকের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা৷
The post বিতর্কিত ফেসবুক পোস্টের জের, আর ক্লাস নিতে পারবেন না কনক সরকার appeared first on Sangbad Pratidin.