সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বছর দেড়েক আগে গুয়াহাটিতে গবেষণারত এক ছাত্রের সঙ্গে রেজিস্ট্রি বিয়ে করেন পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের জুনিয়র চিকিৎসক মানসী। কিন্তু সেই বিয়ের কথা জানত না তাঁর পরিবার। লকডাউনের সময় বাড়ি আসায় বিষয়টি জানতে পারেন তাঁর বাবা-মা। প্রথমে তাঁর পরিবার মেনে নিতে পারেনি। পরে ওই সম্পর্ককে মেনে নেন তাঁরা। তবে সামাজিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন তাঁর বাবা-মা। কিন্তু তা আবার মেনে নিতে পারেননি বছর ছাব্বিশের মানসী। সামাজিক বিয়ে নিয়ে পরিবারের সঙ্গে টানাপোড়েন চলছিল। তাই মানসিক অবসাদে কলকাতার আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের হস্টেলেই আত্মঘাতী হন তিনি। এন্টালি থানার পুলিশ তদন্তে নেমে এই আত্মহত্যার নেপথ্যে মানসিক অবসাদের কথাই বলছে। এছাড়াও উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে বিয়ে এবং বাবা, মাকে নিয়ে কিছু কথা লেখা আছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে নিহত জুনিয়র চিকিৎসক মানসীর ভাই শৌভিক মণ্ডল বলেন, “দিদি গত দেড় বছর আগে রেজিস্ট্রি বিয়ে করেছিল। আমরা কিছু জানতাম না। লকডাউনের সময় দিদি বাড়ি আসে। তখনই আমরা জানতে পারি। পরের দিকে বাড়িতে সবাই মেনে নিয়েছিল।” মানসীর স্বামী লকডাউনের সময় তাঁর রঘুনাথপুরের বাড়িতেও এসেছিলেন। রঘুনাথপুর পুর শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মানসী মণ্ডল কলকাতার ওই ডেন্টাল কলেজে এমডিএস-র দ্বিতীয় বর্ষে পাঠরতা ছিলেন। রঘুনাথপুরের চেলিয়ামা রোডের বারিক বাঁধ এলাকার বাসিন্দা তন্ময় মণ্ডলের সঙ্গে রেজিস্ট্রি বিয়ে করেন। বর্তমানে তন্ময় অসমের গুয়াহাটিতে রসায়ন বিভাগে পিএইচডি করছেন।
[আরও পড়ুন: শুক্রবার রাত থেকে ৩ দিন বন্ধ থাকছে ঢাকুরিয়া ব্রিজ, বিকল্প রুট জেনে নিন]
মানসীর এই অকাল মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়েছে তাঁর পরিবার। শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। রঘুনাথপুরের এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সামাজিকভাবে বিয়ে নিয়ে যে এমন সমস্যা হচ্ছে তা যদি আগে জানতে পারতাম তাহলে এই ঘটনা ঘটতো না। মানসী মেধাবী ছাত্রী ছিল। ওর জন্য আমরা গর্ব করতাম। সব শেষ হয়ে গেল।”
[আরও পড়ুন: করোনাতঙ্কে কাজে আসছে না কর্মীরা, ১৫টি নতুন ভেন্টিলেটর এলেও লাগানো হয়নি মেডিক্যালে]
The post বাড়িতে না জানিয়েই কেন রেজিস্ট্রি বিয়ে? জুনিয়র চিকিৎসকের আত্মহত্যায় দানা বাঁধছে রহস্য appeared first on Sangbad Pratidin.