নিজস্ব সংবাদদাতা, কালনা: ফক্স হক থেকে ফ্রেঞ্চ ক্রপ, বাজ-টু থেকে অ্যাফ্রো। সব আধুনিক ছাঁটের কেশসজ্জার নাম এখন পড়ুয়াদের মুখে-মুখে। শুধু তাই নয়, লাল ও বাদামি রঙের নানা ছাঁটে চুল কেটে স্কুলে আসছে পড়ুয়ারা! ছাত্র হয়েও ছাত্রসুলভ কেশসজ্জা ও বেশভূষা না হওয়ায় চিন্তিত শিক্ষকরা। ছাত্রদের কেশসজ্জায় লাগাম টানতে অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক করল পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পারুলিয়া কুলকামিনী উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানে ডাকা হয় এলাকার নাপিতদেরও।
পারুলিয়া কুলকামিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমানে তিন হাজারেরও বেশি পড়ুয়া রয়েছে। ২০১৩ সালে স্কুলের এক পড়ুয়া রাজ্যে মাধ্যমিকে প্রথম হয়। ২০১৭ সালে এই স্কুল রাজ্যের সেরা স্কুলের স্বীকৃতি পায়। এছাড়াও খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে এই স্কুলের সুনাম রয়েছে। এই স্কুলেই বৃহস্পতিবার সভা মঞ্চ করে 'অভিভাবক সভা' করা হয়। এর আগেও অভিভাবক ও নাপিতদের নিয়ে বৈঠকে বিসদৃশ কেশবিন্যাসের কথা উল্লেখ করে তা যাতে না হয়, সেই বিষয়ে স্কুলের পক্ষ থেকে আগেও সচেতন করা হয়। স্কুলের এই উদ্যোগকে প্রশংসা করেছেন অধিকাংশ অভিভাবকই।
এদিনের সভা শেষে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, স্কুল মানেই শুধু ইংরেজি-অঙ্ক শেখা নয়, দু-চারপাতা বই পড়া নয়। পড়ুয়াদের আচার-আচরণ, শিষ্টাচার, নিয়ম শৃঙ্খলা, রুচিশীলতা তৈরিতেও স্কুলের শিক্ষকদের ভূমিকা থাকে। সেই কথাকে মাথায় রেখে বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন, পড়ুয়াদের শিষ্টাচার, স্কুলের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই এদিনের এই বিশাল আয়োজন করা হয়। ছাত্রসুলভ চুল কেটে পড়ুয়ারা যাতে স্কুলে আসে সেই বিষয়টিকেও তুলে ধরা হয়। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক সুব্রত সামন্ত-সহ পঞ্চম থেকে অষ্টম, শ্রেণির পড়ুয়াদের প্রায় দেড় হাজার অভিভাবক ও প্রায় ত্রিশ জন নাপিত।
ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক বলেন, "স্কুলের সার্বিক উন্নয়ন, পঠনপাঠন, পড়ুয়াদের শৃঙ্খলা নিয়ে এদিন সভা করা হয়। অভিভাবক ও নাপিতদের ডাকা হয়। এছাড়াও এদিন কালাজ্বরের প্রতিষেধক আবিষ্কারক, বিজ্ঞানী উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারীর জন্মের দেড়শো বছর পূর্তি উপলক্ষে তাঁকে স্মরণ করা হয়।" তিনি আরও জানান, জানুয়ারি মাসে এই এলাকার দুই কৃতী সন্তান সাহিত্যিক অক্ষয়কুমার দত্ত ও উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারীর স্মরণে বিজ্ঞানমেলা, চারুকলা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।