সুকুমার সরকার, ঢাকা: উৎসবের মরশুমে ভাঙা হয়েছে মন্দির। পুড়েছে হিন্দুদের বাড়ি। ভাঙচুর হয়েছে দোকানে। সাম্প্রদায়িক অশান্তির আগুনে তপ্ত বাংলাদেশ (Bangladesh)। আসল চক্রান্তকারীকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। তবে ওপার বাংলার বর্তমান পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত সেদেশের বাসিন্দারা। তার জেরে মাগুরায় প্রায় শতবর্ষের ঐতিহ্যবিজড়িত কাত্যায়নী পুজো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজধানী ঢাকা থেকে পৌনে দু’শো কিলোমিটার দূরের পশ্চিমের জেলা শহর মাগুরা। শতবর্ষেরও বেশি সময় ধরে মাগুরায় কাত্যায়নী পুজো হয়ে আসছে। এটি মাগুরার অন্যতম একটি উৎসব ও ঐতিহ্য। দুর্গাপুজোর ঠিক এক মাস পর ব্যাপক জাঁকজমকপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পুজো অনুষ্ঠিত হয়। দূরদুরান্তের বহু মানুষ ভিড় জমান মাগুরায়। তবে এবার দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুজোমণ্ডপ ও হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের প্রতিবাদে মাগুরায় কাত্যায়নী পুজো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত। মণ্ডপে আনা হবে না প্রতিমা। মণ্ডপসজ্জার দিকেও দেওয়া হবে না বিশেষ নজর। তবে নিয়মরক্ষায় মন্দিরের ভিতরে ঘটপুজো করা হবে।
[আরও পড়ুন: পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে বিপত্তি, দুর্যোগে ঘরবন্দি পায়েল-দ্বৈপায়ন]
মঙ্গলবার মাগুরা জেলা শহরের জামরুলতলা পুজোমণ্ডপ কার্যালয়ে জেলা কাত্যায়নী পুজো উদযাপন কমিটির এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জামরুলতলা কাত্যায়নী পুজো উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মাগুরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পঙ্কজ কুমার কুণ্ডুর সভাপতিত্বে ওই সভায় জেলা সদরের প্রায় সব পুজো কমিটির প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদ মাগুরা জেলা শাখার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন পুজোমণ্ডপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতামতের ভিত্তিতে এবার মাগুরা জেলার কোথাও কাত্যায়নী পুজো না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ উপলক্ষে আমরা শুধু মন্দিরে ঘটপুজো করব। মণ্ডপ, আলোকসজ্জা করা হবে না। কাত্যায়নী পুজোকে কেন্দ্র করে মেলাও বসবে না। বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদ মাগুরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব কুণ্ডু বলেন, “কুমিল্লা-সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি যে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমাদের মন ভেঙে গিয়েছে। তা ছাড়া নিরাপত্তার আশঙ্কাও রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোনও উৎসব করা যায় না।”