সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আজ শহরের বড্ড মন খারাপ। তিলোত্তমা বিদায় জানাবে তার প্রিয় উস্তাদ রাশিদ খানকে (Ustad Rashid Khan)। তবে শুধুই কলকাতা নয়, রাশিদ খানকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ।
রাশিদ খানের প্রয়াণের সংবাদ পেয়ে ভেঙে পড়েছেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কবিতা কৃষ্ণমূর্তি। সোশাল মিডিয়ায় কবিতা লিখলেন, ”আমি শোকাহত। অপূর্ব শিল্পী ছিলেন রাশিদ খান। বরাবরই আমি তাঁর সঙ্গীতের অনুরাগী। রাশিদ খানের কণ্ঠ সারাজীবন আমার হৃদয়ে থেকে যাবে। শিল্পীর পরিবারের জন্য সমবেদনা রইল। এবার ঈশ্বরকে খুশি রাখুন। ”
‘মৌসম’ ছবিতে সঙ্গীত পরিচালক প্রীতম সুরে গান গেয়েছিলেন রাশিদ খান। শিল্পীর প্রয়াণের খবর পেয়ে নস্ট্যালজিয়ায় ভাসলেন প্রীতম। তিনি লিখলেন, ” রাশিদ খানের চলে যাওয়া বিশ্ব সঙ্গীতে এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি তাঁর সঙ্গীত শিষ্য ছিলাম। আমার সন্তানরা তাঁর অ্যাকাডেমির ছাত্র। মৌসম ছবিতে আমার সুরে রাশিদ খান গান গেয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গীত মনে থাকে যাবে। ”
[আরও পড়ুন: ‘আগের রাতেও পরিবারের সঙ্গে গল্প-আড্ডা চলেছে, হঠাৎ…’, রাশিদ প্রয়াণে শোকাহত রুদ্রনীল]
উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁতে জন্ম রাশিদ খানের। কিন্তু ছোটবেলাতেই কলকাতায় চলে এসেছিলেন। তার পর থেকে এই বাংলাকেই নিজের কর্মভূমি হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন শিল্পী। ছোটবেলা থেকেই তাঁর তালিম শুরু হয়েছিল। মাত্র ১০- ১১ বছর দিল্লির কনসার্টে গান গেয়েছিলেন রাশিদ খান। প্রায় পাঁচ-ছহাজার দর্শকের মাঝে গাইতে একটু ভয়ই পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই বয়সেই তাঁর বন্দিশ শ্রোতাদের মুগ্ধ করে।
রামপুর-সহসওয়ান গায়কির শিল্পী ছিলেন উস্তাদ রাশিদ খান। এই ঘরানারই শিল্পী উস্তাদ নিসার হুসেনের কাছে তালিম নেন। পণ্ডিত ভীমসেন জোশীর খুবই কাছের মানুষ ছিলেন রাশিদ। তাঁকে দেশের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ভবিষ্যৎ বলেছিলেন পণ্ডিতজি। নিয়মিত তাঁদের মধ্যে সঙ্গীত নিয়ে চর্চা হতো।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ভিত হলেও বলিউড ও টলিউডের একাধিক সিনেমায় গান গেয়েছেন উস্তাদ রাশিদ খান। ‘জব উই মেট’ সিনেমায় ‘আওগে যব তুম সজনা’ গানের মাধ্যমে সারা দেশের মন জয় করে নেন তিনি। শাহরুখ খানের ‘মাই নেম ইজ খান’ সিনেমায় ‘আল্লা হ্যায় রহেম’ গানটি গেয়েছেন শিল্পী। ‘মান্টো’র ‘বোল কে লব আজাদ হ্যায়’ থেকে ‘মিতিন মাসি’র ‘বরসাত সাওয়ান’— প্রত্যেক গানে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন শিল্পী। ২০০৬ সালে পদ্মশ্রী পেয়েছিলেন উস্তাদ রাশিদ খান। সেবছরই সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার পান তিনি।
ক্যানসারের সঙ্গে বহুদিন ধরে লড়ছিলেন শিল্পী। তার মধ্যেই স্ট্রোক। অবশেষে থামল লড়াই। যদিও উস্তাদ রাশিদ খানের মতো শিল্পীদের মৃত্যু নেই। কারণ তাঁরা সুরের আকাশের উজ্জ্বল শুকতারা। তাঁদের কণ্ঠ থেকে যাবে আপামর ভক্ত শ্রোতার হৃদয়ে চিরভাস্বর হয়ে। বুধবার বেলা ১ টায় শিল্পীকে গান স্যালুট দেওয়া হবে।