সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন মুলুকে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জেরে দেশে-বিদেশে চাপে আদানি গোষ্ঠী। দেশে ইতিমধ্যেই বিরোধী শিবির গৌতম আদানির গ্রেপ্তারির দাবিতে সরব। আর বিদেশ থেকে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে চুক্তি বাতিল পর্ব। মার্কিন মুলুকে বিতর্কের জেরে আদানির সংস্থার সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি বাতিল করল কেনিয়া (Kenya Adani Deal)। শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশ সরকারও বিদ্যুত চুক্তি নিয়ে নতুন করে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে কথাবার্তার দাবি জানাতে পারে।
বৃহস্পতিবার গৌতম আদানির বিরুদ্ধে বড়সড় কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনেছে আমেরিকার আদালত। অভিযোগ, ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের বরাত পেতে ভারত সরকারের আধিকারিকদের ২৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। ভারতীয় মুদ্রায় যা ২২০০ কোটি টাকারও বেশি। ওই প্রকল্পের বরাত পেতে মরিয়া আদানি গোষ্ঠী ভারত সরকারের আধিকারিকদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। গৌতম আদানির পাশাপাশি তাঁর ভাইপো সাগরও এই মামলায় অভিযুক্ত। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গৌতম ও সাগর দু’জনের বিরুদ্ধেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আমেরিকার প্রশাসন।
এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরই শনিবার শেয়ার বাজারে ধাক্কা খায় আদানি গোষ্ঠী। একে একে পড়তে থাকে শেয়ারের দাম। আদানি গ্রিন এনার্জির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, আমেরিকায় তাঁদের যে ৬০ কোটি ডলারের বন্ড ছাড়ার কথা ছিল, সেটা আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে। এবার কেনিয়া সরকার আদানিদের সঙ্গে বড়সড় চুক্তি বাতিল করে দিল। জোমো কেনিয়াট্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নত যাত্রী টার্মিনাল নির্মাণ, রানওয়ে রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিমানবন্দরটি আগামী ৩০ বছর ধরে পরিচালনার চুক্তি হয়েছিল আদানি গ্রুপের সঙ্গে। মার্কিন আদালতের নির্দেশের কথা জানতে পেরে আদানি গ্রুপের সঙ্গে মোটা অঙ্কের চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেনিয়া। সেদেশের প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন তৈরিতে আদানি গ্রুপের সঙ্গে প্রস্তাবিত চুক্তি বাতিল করা হচ্ছে। আসলে এই চুক্তি নিয়ে কেনিয়াতে এমনিতেই প্রবল বিক্ষোভ ছিল। বহু কেনিয়াবাসীর তাতে আপত্তিও ছিল। আদানিরা সামান্য বিপাকে পড়তেই সুযোগ বুঝে সেই চুক্তি বাতিল করে দিল কেনিয়া।
কেনিয়ার চুক্তি বাতিলের পর এবার নজর বাংলাদেশের দিকেও। ওপার বাংলার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মার্কিন মুলুকে বিতর্কের পর আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে পারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারও। সে দেশের এক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞের দাবি, "হাসিনা সরকারের সঙ্গে আদানিদের চুক্তি নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার আগেও চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা চেয়েছে। এবার সম্ভবত দামদরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চাপ আরও বাড়াবে।"