সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিকিৎসার জন্য লন্ডন পৌঁছালেন বিএনপির চেয়ারপার্সন তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। বিমানবন্দরে মাকে আলিঙ্গন করেন পুত্র তারেক রহমান। দীর্ঘ ৭ বছর পর দেশের বাইরে পা রেখেছেন খালেদা। চিকিৎসার জন্য তাঁকে কতদিন লন্ডনে থাকতে হবে তা এখনও জানা যায়নি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, চেয়ারপার্সনের অনুপস্থিতিতে এবার বিএনপির কর্মসূচি কী হবে? নির্বাচন নিয়ে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের উপর যে লাগাতার চাপ বাড়াচ্ছে তারা, তা কি খানিক থিতিয়ে যাবে? নাকি এই সুযোগকে কাজ লাগিয়ে ইউনুস সরকারের উপর আরও প্রভাব খাটাবে জামাত।
বেশ কয়েক বছর ধরেই লিভার সিরোসিস, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি-সহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন ৮০ ছুঁইছুঁই খালেদা। কয়েকদিন আগেও অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। তাঁর বিদেশে চিকিৎসা করানোর বিষয়টি আটকে দেওয়া নিয়ে তৎকালীন হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বহুবার অভিযোগ জানিয়েছে বিএনপি। কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর অনেক কিছু বদলে গিয়েছে। বিভিন্ন মামলা থেকে মুক্তি পেয়েছেন খালেদা। অবশেষে তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশের মাটিতে পা রাখলেন। আজ বুধবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫ মিনিটে বিএনপি নেত্রীর বিমান হিথরো বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
জানা গিয়েছে, এদিন মাকে স্বাগত জানানোর জন্য বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন খালেদার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদ-সহ অনেক নেতা-কর্মী। ছিলেন ব্রিটেনে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হজরত আলি খান। তিনি ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি নেত্রীকে। তিনি সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডন সফরে গিয়েছিলেন। এরপর তাঁর আর কোনও বিদেশ সফর হয়নি। এই ৭ বছরে ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গেও তাঁর সরাসরি দেখা হয়নি। এদিকে, বিএনপির পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছে, খালেদা জিয়াকে ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ ভর্তি করা হবে। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসার পর আমেরিকার মেরিল্যান্ডের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলবে।
এবার প্রশ্ন নেত্রীর অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপির কৌশল কীভাবে? বিভিন্ন সূত্রে খবর, মায়ের সঙ্গেই দেশে ফিরতে পারেন তারেক রহমান। তাঁর নেতৃত্বে হারানো জমি ফিরে পেতে নয়া কৌশল নিতে পারে বিএনপি। এদিকে, খালেদার অনুপস্থিতিতে এখন খানিক স্বস্তিতে থাকবে ইউনুস সরকার। কারণ তারা জানে হাসিনার আওয়ামিকে টক্কর দিতে পারে বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দলই। তাই তারা সংস্কারের দোহাই দিয়ে নির্বাচন পিছিয়ে দিচ্ছে। আবার খালেদার না থাকার সুযোগকেই কাজে লাগাতে পারে পাকপন্থী জামাত। ময়াদানে টিকে থাকতে ইউনুস সরকারের উপর আরও প্রভাব বিস্তার করতে পারে তারা।