স্টাফ রিপোর্টার: 'ভূতের ভবিষ্যৎ' সিনেমার কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। খাস কলকাতার একটি পুরনো বহুতলে ঠাঁই নিয়েছিল একদল ভূত। কিন্তু প্রোমোটারের দাপটে ভূতেদের মাথার ছাউনি চলে যেতে বসেছিল।

সিনেমা নিছক রূপক। কিন্তু বাস্তবে কলকাতা পুর এলাকায় এমন বেশ কিছু বাড়ির সন্ধান মিলেছে যেগুলি যে কোনও সময়ে হাতবদল হতে পারে। সবার অলক্ষে অথবা পুরসভার অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের অনুমতি ছাড়া নতুন ফ্ল্যাট গজিয়ে উঠতে পারে। তাই আগাম আশঙ্কা করেই ওই সব জমির মিউটেশন লক করে দিয়েছে পুর অ্যাসেসমেন্ট বিভাগ। ফলে গায়ের জোরে বহুতল আবাসন হলেও বিক্রি তো করাই যাবে না। কারণ গ্রাহক মিউটেশন করতে পারবেন না।
পুরসভার অ্যাসেসমেন্ট ও বিল্ডিং বিভাগের যৌথ সমীক্ষা বলছে অন্তত ৩০টি জমি অথবা বাড়ির মিউটেশন লক করা হয়েছে। অর্থাৎ ওইসব বাড়ির বৈধ উত্তরাধিকারী নেই। অথবা দীর্ঘদিন ধরে পুরকর অনাদায়ী রয়েছে। পুরসভার অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের তথ্য বলছে এই ৩০টি বাড়ির সিংহভাগ উত্তর কলকাতায়। আবার সংযুক্ত এলাকার মেটিয়াবুরুজেও এমন কয়েকটি পুরনো বাড়ির সন্ধান মিলেছে। বাড়িতে কেউ থাকে না। কেয়ারটেকারের হাতে বাড়ি দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে মালিক সম্ভবত ভিনরাজ্যে অথবা পাকাপাকিভাবে বিদেশে চলে গিয়েছেন।
এদিকে বছরের পর বছর বাড়ির সম্পত্তি কর অনাদায়ী রয়ে গিয়েছে। অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের তথ্য বলছে, দ্রুত পুরকর আদায়ের জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি নিয়ে ওয়েভার স্কিম চালু করেছিল। প্রায় ৯০ শতাংশ অনাদায়ী পুরকর জমা পড়েছে পুরসভার ভাঁড়ারে। কিন্তু এত সত্ত্বেও বেশ কয়েকটি বাড়ি যেন 'ভূতের ভবিষ্যৎ!' নোটিস দিয়েও বাড়ির বৈধ উত্তরাধিকারী পাওয়া যায়নি। এদিকে সংস্কারের অভাবে বিপজ্জনক অবস্থায়। সেই সময়ে বিল্ডিং বিভাগ 'বিপজ্জনক বাড়ি' নোটিস দেয়। পাশাপাশি অ্যাসেসমেন্ট বিভাগ বাড়ির মিউটেশন লক করে দেয়। অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের এক কর্তার কথায়, “এই পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে অন্তত সম্পত্তি বেদখল হবে না। ওই বাড়ি ভেঙে নতুন বহুতল করলেও পুরসভার অনুমতি মিলবে না। ফলে প্রোমোটারদের দাপট কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।" ওই পুরকর্তার কথায়, "আইনে সব ব্যবস্থার নিদান আছে। শুধুমাত্র প্রয়োগের অভাব!"