অভিরূপ দাস: রাস্তা হয়ে গিয়েছে গাড়ির গ্যারেজ। যার জেরে ফ্যাসাদে আমজনতা থেকে প্রশাসন। কলকাতার একাধিক সরু গলি, সড়ক জুড়ে রাতভর ঠায় দাঁড়িয়ে একের পর এক গাড়ি। কোথাও তা বুস্টার পাম্পিং স্টেশনের সামনে। কোথাও বা পুকুর পারে। অবস্থা এমনই বেআইনি গাড়ি পার্কিংয়ের জেরে জলের গাড়ি ঢুকতে পারছে না এলাকায়। এমনকী আগুন লাগলে আটকে পড়ছে দমকলের শকটও। এ সমস্যা সবচেয়ে বেশি ৯০ থেকে ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে। সেলিমপুর, ঢাকুরিয়া, যাদবপুর, নাকতলা, বাঁশদ্রোণী, গড়ফা, বাঘাযতীন, গড়িয়া এলাকায় বেআইনী পার্কিং এতোটাই ময়লা পরিস্কার করতেও বেগ পেতে হয় পুর-কর্মীদের।
কিন্তু নাইট পার্কিং চালু রয়েছে পুর এলাকায়। তার জন্য নির্দিষ্ট টাকা দিতে হয় পুরসভাকে। তবু কেন সাড়ছে না বেআইনি পার্কিং রোগ ? পুরসভার অধিবেশনে নাইট পার্কিং নিয়ে প্রস্তাব রাখেন কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্য, শহরে রাস্তা থাকা উচিৎ ১৭ থেকে ২০ শতাংশ। তা নেই।
[আরও পড়ুন: ‘কোথায় হুকিং হচ্ছে জানেন কাউন্সিলররা’, চুপচাপ বিদ্যুৎ চোর ধরার নির্দেশ মেয়রের]
৯৫ এবং ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডে বুস্টার পাম্পিং স্টেশনে জলের গাড়ি ঢুকতে পারছে না বেআইনি পার্কিংয়ের জন্য। মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার এদিন বলেছেন, “সমস্যা অন্য। ১৮ ফুটের নিচে ছোটও রাস্তায় পার্কিং করা বেআইনি। সেখানে পার্কিং করলেই জল কিম্বা দমকলের গাড়ি চলাচলে সমস্যা। আর কলোনি এলাকার একাধিক রাস্তা ১৮ ফুটের নিচে। সেখানে পার্কিং করতে গিয়েই বাড়ছে গণ্ডগোল।” বাম বোর্ডের আমলে কলোনি এলাকার সরু সরু রাস্তায় উঠেছে একের পর এক বহুতল। কলোনি এলাকায় সেসব ফ্ল্যাটের দাম কম। স্বাভাবিক ভাবেই অনেকে সস্তায় ফ্ল্যাট কিনেছেন।
মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, সেখানকার বাসিন্দাদের ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে। এখন গাড়িও কিনছেন। কিন্তু গাড়ি রাখার জায়গা নেই। রাস্তাতেই রাখছেন। মেয়র পারিষদের নির্দেশ, কাউন্সিলরদের দায়িত্ব ১৮ ফুটের নিচে প্রস্থ এমন কোন-কোন রাস্তায় রাতে গাড়ি রাখা হচ্ছে তা দেখার। বেআইনি পার্কিং ধরতে প্রত্যেক সপ্তাহে তিনদিন করে টহল দেয় পুরসভার পার্কিং বিভাগ। মেয়র পারিষদ জানিয়েছেন কোথায় বেআইনি পার্কিং হচ্ছে তার খবর দিক কাউন্সিলররা। পুরসভা গিয়ে চাকায় কাটা লাগাবে। তবে এখানেও সমস্যা।
[আরও পড়ুন: টিফিন টাইমে মিটিং-মিছিলে যোগ দিলেই ‘অনুপস্থিত’, কড়া নির্দেশিকা নবান্নের]
সূত্রের খবর, একাধিক ক্ষেত্রে চাকায় কাটা লাগে কাউন্সিলররাই গাড়ির মালিকের হয়ে তদ্বির করেন। ‘‘ওকে ছেড়ে দিন।’’ মেয়র পারিষদের বক্তব্য, ‘‘বেআইনি পার্কিং ঠেকানোর সদিচ্ছা থাকলে জানান। ১ মাসের মধ্যে সমস্ত জায়গায় ড্রাইভ হবে। তারপর ফোন করে অনুরোধ করবেন না।’’ এবছর নাইট পার্কিং বাবদ প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে পুরসভার।