shono
Advertisement

উধাও লক্ষাধিক টাকার জলের মিটার! চুরি ঠেকাতে নয়া পন্থা KMC’র

কী বলছেন মেয়র?
Posted: 01:37 PM Dec 10, 2023Updated: 01:37 PM Dec 10, 2023

অভিরূপ দাস: জলের অপচয় ঠেকাতে যা লাগানো হয়েছিল বাড়িতে বাড়িতে। চুরি হয়ে গেল তা-ই। কলকাতা পুরসভার পাটুলি এলাকা থেকে বেমালুম উধাও লক্ষাধিক টাকার কয়েকশো জলের মিটার। যা শুনে স্তম্ভিত কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মেয়র জানিয়েছেন, চুরি ঠেকাতে হবে। এমনটা চলতে থাকলে তো পুরসভার কোষাগার খালি হয়ে যাবে।

Advertisement

কলকাতায় ৫১৫ মিলিয়ন গ্যালন পরিশুদ্ধ জল তৈরি করার পরেও পাচ্ছেন না শহরের সব বাসিন্দা। মাস খানেক আগে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে পুরসভা জানায়, কেউ কেউ জলের অপচয় করছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যে সমস্ত এলাকায় জলের অপচয় বেশি সেখানে জলের মিটার বসানো হবে। তবেই জানা যাবে, কোন বাড়িতে জল কতটা অপচয় হচ্ছে। সেইমতো কাশীপুর-বেলগাছিয়া অঞ্চলের এক থেকে ছ’নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি জলের মিটার বসিয়েছিল পুরসভা। জলের মিটার বসানো হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার পাটুলি এলাকাতেও৷ তাতে অনেকটাই কমেছিল অপচয়। কিন্তু শুরু হতেই বিপাকে প্রোজেক্ট। এদিন বৈষ্ণবঘাটা পাটুলি এলাকা থেকে কলকাতা পুরসভায় অভিযোগ আসে প্রায় চারশো বাড়িতে জলের মিটার চুরি হয়ে গিয়েছে। এ ৫৬ বৈষ্ণবঘাটা পাটুলি এলাকার বাসিন্দা জয়দীপ দাস জানিয়েছেন, শীতের বেলায় সন্ধ্যে নামছে তাড়াতাড়ি। রাস্তাঘাট শুনশান হয়ে যাচ্ছে। সেই সুযোগে কে বা কারা জলের মিটার চুরি করছে।

[আরও পড়ুন: চলন্ত ট্রেনে মহিলা যাত্রীর ‘শ্লীলতাহানি’, প্রশ্নের মুখে নিরাপত্তা]

জয়দীপবাবুর অভিযোগ, “আমার এলাকায় ৮০ শতাংশ বাড়ির মিটার চুরি হয়ে গিয়েছে।” কেইআইআইপি-র সঙ্গে যৌথভাবে এই জলের মিটার বসিয়েছিল পুরসভা। কেইআইআইপি-র প্রাক্তন আধিকারিক সৌম্য গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এক একটা জলের মিটারের দাম প্রায় ৫ হাজার টাকা। সে হিসেবে চারশো বাড়ির মিটার চুরি মানে ২০ লক্ষ টাকা উধাও। যা শুনে স্তম্ভিত মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। খবর পেয়েই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন মেয়র। জল সরবরাহ বিভাগের ডিজির সঙ্গে আলোচনায় বসেন। কাশীপুর এলাকায় ১৮ হাজারের উপর বাড়িতে জলের মিটার বসানো হয়েছে। তাতে ফলও মিলেছে হাতেনাতে। সাশ্রয় হচ্ছে জল। মেয়রের আশঙ্কা, “আজ পাটুলিতে মিটার চুরি হচ্ছে কাল যে কাশীপুরে হবে না তার নিশ্চয়তা নেই।”

অবিলম্বে এই চুরি ঠেকাতে জলের মিটার বসানোর প্রক্রিয়াটাই বদলানোর কথা ভাবছে পুরসভা। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে মিটার বসানোর পর, এবার থেকে তা ধাতব কভার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হবে। দেওয়া হবে তালা-চাবি। এই তালার একটি চাবি থাকবে যে বাড়িতে মিটার বসানো হচ্ছে সে বাড়ির মালিকের হাতে। অন্য চাবি থাকবে পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগে। মেয়রের পরামর্শ, “ধাতব ঢাকনাও চুরি হতে পারে। প্রয়োজনে ফেরুল বসানোর কায়দায় মাটির তলায় মিটার বসাতে হবে। সেক্ষেত্রে চুরি ঠেকানো যেতে পারে।” উল্লেখ্য ইতিমধ্যেই পাটুলি থানায় জলের মিটার চুরির তিনটে অভিযোগ জমা পড়েছে। যে সমস্ত বাড়িতে মিটার চুরি হয়েছে সেখানে নতুন প্রক্রিয়ায় মিটার বসানো হবে শীঘ্রই। কারা চুরি করছে এই মিটার? পুরসভার আধিকারিকদের অনুমান, যারা ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি করে বিক্রি করে, সে ধরণের নেশাগ্রস্তরাই এই কাজ করছে। মিটারের মধ্যে কয়েল রয়েছে। তা বেচে নেশার-দ্রব্য কিনছে অসাধু চক্র। ইতিমধ্যেই জলের অপচয় ঠেকাতে ভিজিলেন্স টিম তৈরি করছে পুরসভা। এদিন মেয়র জানিয়েছেন, চুরি না ঠেকালে কলকাতা জুড়ে জলের মিটার বসানো কোনওদিন সম্ভব হবে না।

[আরও পড়ুন: কলকাতা ছুঁয়ে দার্জিলিংয়ে সাইবেরিয়ার জোড়া বাঘ! বিনিময়ে বিদেশ পাড়ি রেড পান্ডার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement