গৌতম ব্রহ্ম: ফেসবুক জুড়ে ছড়িয়েছে রহস্যময় পোস্ট। পড়েছে ব্যানার-হোর্ডিংও। এ কোন যুবরাজ? সোনালিই বা কে? আগের পোস্টেরও পরতে পরতে ছিল রহস্য। ‘ক্রান্তি আনবে শান্তি’। বামপন্থার ঝাঁজালো গন্ধযুক্ত আগমার্কা ‘টিজার’। এ কি বাইশ গজের যুবরাজ? সোনালির পরিচয়টাই বা কী?
[অঙ্গদানের নজির শহরে, মৃত কিশোরীর অঙ্গে প্রাণ পেল ৩ জন]
কল্পনার পারদ চড়িয়ে দুর্গাপুজোর প্রচার শুরু করল ‘বাঘাযতীন বি ও সি ব্লক সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি’। ‘ফ্লাগ অফ’ হল দুই টিজারে। তৈরি হল নতুন ইতিহাস। এই প্রথম বাংলার কোনও পুজো কমিটি ডাক্তারদের সংগঠনের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে পুজোর পরিকল্পনায় নামল। টিজার থেকে থিম, মঞ্চসজ্জা থেকে প্রতিমা, থিম সঙ্গীত থেকে আলোকসজ্জা সবেতেই ডাক্তারদের ‘ইনপুট’। এমনটাই দাবি করলেন পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়।
[ফের রং বদল, শহরের অটো এবার সাজবে নীল-সাদায়]
‘বেঙ্গল অঙ্কোলজি ফাউন্ডেশন’। ডা. গৌতম মুখোপাধ্যায়, ডা. সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্ট অঙ্কোলজস্টিরা মিলে এই ফাউন্ডেশনের জন্ম দিয়েছেন। ক্যানসার সচেতনতা, চিকিৎসায় ইতিমধ্যেই রাজ্যে সাড়া জাগিয়েছে এই ফাউন্ডেশন। বহু মানুষকে ক্যানসারের অভিশাপ থেকে করেছেন মুক্ত। এবার কর্কট রোগের প্রচারে দুর্গাপুজোকেই বেছে নিয়েছেন গৌতমবাবুরা। তাঁদের পর্যবেক্ষণ, এখন থিম পুজোর জমানা। থিম দেখতে প্রচুর মানুষ পুজো পরিক্রমায় বের হন। কোনও মেসেজ দিলে তা সহজেই সংক্রামিত হবে মানুষের মধ্যে। গৌতমবাবু জানালেন, এই বিশ্বাসের জায়গা থেকেই বাঘাযতীনের ওই পুজো কমিটির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ফাউন্ডেশন। পুজোর যাবতীয় প্রচারে থাকছে ফাউন্ডেশনের লোগো-নাম। ১৫ আগস্ট খুঁটিপুজোয় উপস্থিত থেকে সেই বার্তাই দিলেন গৌতমবাবুরা। অংশ নিলেন স্বাস্থ্যশিবির ও রক্তদান শিবিরে।
[ডাক্তারদের লিফটে কেন? রোগীর মাকে ২০ বার ওঠবোস করাল হাসপাতালের কর্মী]
খুশি পুজোর থিম শিল্পী সব্যসাচী পাল। বললেন, ‘‘আমাদের পুজোর থিম ‘কর্কট-ক্রান্তি’। মানে ক্যানসারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। অঙ্কোলজিস্টদের সাহায্য ছাড়া থিমটি ফুটিয়ে তোলা যেত না। তাই এই বন্ধুত্ব।’’ ষাট বছরের পুরনো হলেও ১৯৯৯ থেকে থিমের পুজো শুরু করে বাঘাযতীন বি ও সি ব্লক। গতবছর সব্যসাচী তামাকের অপকারিতা নিয়ে মণ্ডপ বানিয়েছিলেন। থিম ছিল ‘গ্রিন সিগন্যাল’। সেই অর্থে কর্কট ক্রান্তি গ্রিন সিগন্যালের সিক্যুয়াল।
[মঙ্গলবার রাজ্যে আসছে বাজপেয়ীর চিতাভস্ম]
টিজার নিয়েও মুখ খুলেছেন পুজোকর্তারা। জানিয়েছেন, ‘‘ক্যানসারের বিরুদ্ধে মানুষ রুখে দাঁড়াচ্ছে। কর্কটরোগ আর ‘ওয়াকওভার’ পাচ্ছে না। কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপির মতো হাতিয়ার নিয়ে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। তাই প্রথম টিজার ছিল ‘ক্রান্তি আনবে শান্তি’। দ্বিতীয় টিজারে ব্যবহার করা হয়েছে দুই তারকার নাম। যুবরাজ সিং ও সোনালি বেন্দ্রে। যুবরাজ ক্যানসার জয় করে ফের ক্রিকেট মাঠে সগৌরবে ফিরেছেন। ‘সরফরোস’ অভিনেত্রী সোনালি বেন্দ্রে যুবরাজের মতোই লড়াই শুরু করেছেন। কার্যত এই দু’জনকে ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বসাডর’ করেই পুজোর ময়দানে চমক দিতে নেমেছেন সব্যসাচীরা। সঙ্গী হচ্ছেন এক ঝাঁক ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
The post ত্রিশূলে বিদ্ধ ‘কাঁকড়া’, দুর্গাপুজোর থিম ভাবনায় এবার ডাক্তাররা appeared first on Sangbad Pratidin.