সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: ১২৮/৭ (ওয়ার্নার-৩৭)
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ৪৮/৩ (৫.২/৬ ওভার)
৭ উইকেটে জয়ী কেকেআর
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তীব্র গরমে যখন কলকাতাবাসীর প্রাণ ওষ্ঠাগত, তখন বেঙ্গালুরুতে প্রায় টানা তিন ঘণ্টা বৃষ্টি হল। আর সেই বৃষ্টিতেই ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেল দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের রুদ্ধশ্বাস লড়াই। খেলার ফলাফল না জেনেই মাথায় বৃষ্টি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হল চিন্নাস্বামীতে উপস্থিত দর্শকদের। কিন্তু কলকাতার ভাগ্য জানান জন্য যে সমর্থকরা রাত জেগে বসেছিলেন, তারা শেষমেশ হাসি মুখে ঘুমোতে গেলেন। কারণ বৃষ্টির চোখ রাঙানিকে তোয়াক্কা না করেই ফাইনালে পৌঁছনোর একটি বাধা টপকে গেল গম্ভীর অ্যান্ড কোম্পানি। আর এবারের মতো টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিল গতবারের চ্যাম্পিয়ন হায়দরাবাদ।
চিন্নাস্বামীর উইকেট নিয়ে বিশেষজ্ঞরা যেমনটা আন্দাজ করেছিলেন, বাস্তবেও তেমনটাই হল। বাউন্সি পিচে বোলাররাই বেশি সুবিধে পেলেন। এবং টসে জিতে সেই সুবিধার সম্পূর্ণ লাভও তুললেন উমেশ যাদব, ট্রেন্ট বোল্ডরা। শিখর ধাওয়ান (১১), কেন উইলিয়ামসন (২৪), যুবরাজ সিংকে (৯) ক্রিজে খুব বেশিক্ষণ টিকতেই দিলেন না নাইট পেসার ও স্পিনাররা। নাথান কোল্টার নাইল তিনটি ও উমেশ দুটি করে উইকেট নেন। তবে কলকাতার পথের সবচেয়ে বড় কাঁটা ছিলেন ওয়ার্নার। নাইটদের যাবতীয় দুশ্চিন্তা ছিল তাঁকে ঘিরেই। একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন অজি তারকা। এদিনও হায়দরাবাদের হয়ে তিনি একাই লড়াই দিলেন। তাঁর ৩৭ রানের ইনিংস শেষ করেন পীয়ূষ চাওলা। বিজয় শঙ্কর অবশ্য স্কোরবোর্ডে আরও কিছু রান যোগ করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। তবে ২২ রানে আউট হন তিনি।
হায়দরাবাদের ইনিংস পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু তারপরই ঘটল অঘটন। যাতে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়ে গিয়েছিল ম্যাচের ভবিষ্যৎ নিয়ে। কেকেআর ব্যাটসম্যানরা মাঠে নামার আগেই আকাশ কালো করে নামে বৃষ্টি। গ্যালারিতে চিন্তিত মুখে তখন দাঁড়িয়ে নাইট দলের মালিক কিং খান। কারণ তিনিও জানেন, ম্যাচ শেষমেশ বাতিল হয়ে গেলে বেশি পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকার তিন নম্বরে থাকার দৌলতে জয়ী ঘোষণা করা হবে ওয়ার্নারদেরই। আর বিনা যুদ্ধেই আইপিএল-এর দশম সাম্রাজ্য থেকে বিদায় নিতে হবে কেকেআর-কে।
[মুম্বইকে হারিয়ে আইপিএল-এর ফাইনালে ধোনিরা]
সময় যত গড়ায়, কলকাতার সমর্থকদের কপালের ভাঁজ ততই গভীর হতে থাকে। বৃষ্টি যে থামার নামই নিচ্ছে না। অবশেষে সাড়ে ১২টার পর এল সেই শুভক্ষণ। পিচ পর্যবেক্ষণের পর আম্পায়ার জানালেন, ৬ ওভারের ইনিংস খেলবে কেকেআর। জিততে হলে চাই ৪৮ রান। অর্থাৎ লড়াইয়ের সুযোগ রয়েছে। আর সেই সুযোগকেই কাজে লাগাতে সফল নাইটবাহিনী। কিন্তু বৃষ্টি বিধ্বস্ত মাঠে ব্যাট করা তো আর মুখের কথা নয়। এমন পরিস্থিতিতে সুনীল নারিনকে দিয়ে ওপেন করিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি নেতা গম্ভীর। কিন্তু যাঁদের উপর অধিনায়ক ভরসা রেখেছিলেন,তাঁরাও পরিস্থিতি সামলাতে পারলেন না। শুরুতেই ধাক্কা খেল নাইটদের টপ-ব্যাটিং। ৬ রানে করে ফিরে গেলেন ক্রিস লিন। তারপরই খাতা না খুলেই রান আউট ইউসুফ পাঠান। ১ রান করে ধাওয়ানের হাতে ক্যাচ তুলে ফেরেন রবিন উথাপ্পা। তার উপর এদিন
দলে ছিলেন না মণীশ পাণ্ডেও। এমন অবস্থায় কলকাতার ত্রাতা হয়ে ওঠার দায়িত্ব এসে পড়ে সেই নেতার উপরই। বৃষ্টি ভেজা চিন্নাস্বামীতে দুর্দান্ত ৩২ রানের (অপরাজিত) ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে দিলেন গম্ভীর।
ফাইনালে পৌঁছতে এবার মুম্বই বধই লক্ষ্য কিং খানের দলের। গ্রুপ পর্বে মুম্বইয়ের সঙ্গে দুটি ম্যাচেই পরাস্ত কেকেআর। এলিমিনেটর ম্যাচেই সেই বদলা নিতে বদ্ধপরিকর নাইটবাহিনী।
ছবি সৌজন্যে BCCI
The post বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে হায়দরাবাদকে হারিয়ে মুম্বইয়ের সামনে নাইটবাহিনী appeared first on Sangbad Pratidin.