নব্যেন্দু হাজরা: শহরে আসার চার বছরের মাথায় অবশেষে যাত্রী নিয়ে ছোটা শুরু করল চিনের ডালিয়ান রেক। শুক্রবার বিকেলে দমদম স্টেশন থেকে এই রেক (এমআর ৫০১) ছোটা শুরু করে। এদিন যাত্রীদের সঙ্গে এই মেট্রোতে চড়েই দমদম থেকে পার্ক স্ট্রিট আসেন মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার অরুণ অরোরা। মাস চারেকের মধ্যে আরও চারটি ডালিয়ান রেক কলকাতা মেট্রো পেতে চলেছে বলে জানান তিনি।
তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ধাপে ধাপে মোট ১৪টি রেক আসবে চিন থেকে। চারটি রেক এখন আসার অপেক্ষায় আছে। একেকটি রেক বানাতে খরচ পড়েছে ৮৫ কোটি টাকা। এই রেকগুলোতে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য অনেক বেশি। অনেক বেশি যাত্রী উঠতে পারবেন ট্রেনে।’’
[আরও পড়ুন: ডিএ আন্দোলনকারীদের পাশে নওশাদ সিদ্দিকি, ধর্মতলার মঞ্চে যোগ দিয়ে অনশনের হুঁশিয়ারি]
২০১৯ সালে ৭ মার্চ এই রেকটিকে আনা হয়েছিল নোয়াপাড়া কারশেডে। চিন থেকে জাহাজে করে এসেছিল মেট্রোটি (Kolkata Metro)। তারপর পেরিয়ে গিয়েছে অনেক সময়। বারবার নানা জটিলতায় থমকে গিয়েছিল রেকের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ফলে কিছুতেই যাত্রী নিয়ে ছোটার ছাড়পত্র পাচ্ছিল না চিনা এই রেক। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হতে না হতেই অতিমারি এসে পড়ায় সব কাজ থমকে গিয়েছিল।
নির্মাণ সংস্থার চিনা আধিকারিকেরাও দেশে ফিরে যান। মাঝের সময়ে দু’বছর ওই রেকের প্রায় কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যায়নি। মেট্রো সূত্রের খবর, নতুন রেক এসে পৌঁছনোর পরে রেলের মানক সংস্থা ‘রিসার্চ, ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অর্গানাইজেশন’ (আরডিএসও)-এর নির্দেশ মেনে ৩২ রকমের পরীক্ষা করতে হয়। সব পরীক্ষার ফল খতিয়ে দেখে কোথাও সমস্যা থাকলে তা মেরামত করতে হয়। যাবতীয় ফল ইতিবাচক হলে তার পরেই রেক ব্যবহারের ছাড়পত্র মেলে।
[আরও পড়ুন: অনুব্রতহীন বীরভূমের দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নিলেন মমতা, দায়িত্ব বাড়ল সিদ্দিকুল্লা-অরূপের]
জিএমের কথায়, দিন কয়েক আগে আরডিএসও ছাড়পত্র এসে পৌঁছতেই যাত্রী নিয়ে মেট্রো ছোটার দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। অরুণ অরোরা জানান, শেষ চার-পঁাচ মাস খুব দ্রুততার সঙ্গে যাবতীয় কাজ হয়েছে। যাত্রীচাপ যা বাড়ছে, তাতে পর্যাপ্ত রেকের দরকার। এই মেট্রোগুলো আসা শুরু করলে কোনও সমস্যা হবে না। এদিকে নিউ গড়িয়া থেকে রুবি পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবাও দ্রুতই শুরু হয়ে যাবে বলে জানান জিএম। বলেন, ‘‘আমরা সবদিক থেকে প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী এবং রেলমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। তঁারা দিনক্ষণ জানালেই উদ্বোধনের দিন ঠিক হয়ে যাবে। তারপরই ওই লাইন দিয়ে যাত্রী নিয়ে মেট্রো ছোটা শুরু হবে।’’
নতুন এই রেকের সবথেকে বড় সুবিধা যাত্রীরা জার্কিং অনুভব করবেন না। দরজাগুলো অনেক বড়। বসার সিটের সংখ্যাও বেশি। গোটা ট্রেনটিই সিসিটিভিতে মোড়া। এসির ঠান্ডাও পুরনো রেকের তুলনায় বেশ বেশি। পেইন্ট ফ্রি স্টেইঅনলেস স্টিলের বডি রেকের। এমনকি হুইল চেয়ার পার্কিং ফেসিলিটিও রয়েছে নয়া মেট্রোতে। অনেকদিন ধরেই কলকাতা মেট্রোয় আর নন এসি রেক চলে না। এখন সবকটি এসি রেকই চলে। সেই তালিকায় শুক্রবার থেকে জায়গা করে নিল ডালিয়ান।