shono
Advertisement

বিহারে পালিয়েও রেহাই নয়, কলকাতায় ফের কাজ করতে এসে হাতেনাতে ধৃত দুর্ঘটনায় দায়ী ‘চালক’

অনিচ্ছাকৃত খুন-সহ একাধিক ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু।
Posted: 10:11 PM Sep 26, 2021Updated: 10:11 PM Sep 26, 2021

অর্ণব আইচ: গাড়ির চালক ছুটিতে। গাড়ির লাইসেন্সের বালাই নেই। তবু বেশি ভাড়ার লোভে স্টিয়ারিং ধরেছিল হেল্পার। গত ডিসেম্বরে এজেসি বোস রোডের উপর উলটে গিয়েছিল লোকবোঝাই মালবাহী গাড়ি। এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল চারজনের। আহত হয়েছিলেন প্রায় ২৫ জন। দুর্ঘটনার পর বিহারে (Bihar) পালিয়েছিল ‘চালক’। ন’মাস পর ফের কলকাতায় আসার ছক কষতেই চালক বিক্রম কুমার ধরা পড়ে গেল পুলিশের হাতে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৩ ডিসেম্বর ঘটেছিল এই দুর্ঘটনাটি। দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ এলাকার বামনপাড়ার বাসিন্দা গোলাপি মাহালির মৃত্যুর পর তাঁর শ্রাদ্ধের আগে ঘাটের কাজ করতে বাবুঘাটে যান পরিবার, পরিজন ও পাড়ার লোকেরা। একটি মালবাহী গাড়িতে রওনা হন তাঁরা। কাজের শেষে বাবুঘাট থেকে এজেসি বোস রোড ফ্লাইওভার ধরে প্রায় ৩৫ জন মালবাহী গাড়ি করেই বিকেলে বাড়িতে ফিরছিলেন। ফ্লাইওভারের উপরই বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের কাছাকাছি মালবাহী গাড়িটির চাকা পিছলে গিয়ে সেটি উলটে যায়। ছিটকে রাস্তায় গিয়ে পড়েন গাড়ির আরোহীরা। তাঁদের কারও মাথা, কারও কানের পাশে, আবার কারও হাত এবং পায়ে আঘাত লাগে। অনেকেরই আঘাত গুরুতর হয়। ২৯ জনকে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে পরিবারের রিনা মাহালি, প্রতিবেশী রঞ্জিৎ রায়, সন্তু দাস ও বর্ধমানের বাসিন্দা আরও এক মহিলার মৃত্যু হয়। এখনও পরিবারের আহত কয়েকজনের চিকিৎসা চলছে। দুর্ঘটনার পর থেকেই চালক বিক্রম কুমার পলাতক। তিলজলার বালিগঞ্জ রেলওয়ে সাইডিংয়ে তল্লাশি চালিয়েও তার সন্ধান মেলেনি।

[আরও পড়ুন: ‘ডান্সিং ড্রাগন, মৃতদেহের উপর উঠে নাচে’, অসমের ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপিকে আক্রমণ মমতার]

ট্রাফিক বিভাগের ফ্যাটাল স্কোয়াডের আধিকারিকরা তদন্ত করে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে পান। জানা যায়, বিক্রম নামে ওই পলাতক যুবক আদৌ চালকই নয়। সে হেল্পার বা ক্লিনার মাত্র। চালকের সঙ্গে থাকতে থাকতে শিখে নিয়েছে ড্রাইভিং। কিন্তু গাড়ির লাইসেন্স ছিল না তার। গত ২৩ ডিসেম্বর ছুটি ছিল গাড়ির চালকের। মাহালি পরিবার বাবুঘাটে যাওয়ার জন্য গাড়িটি চাইলে বেশি ভাড়ার লোভে গাড়ি চালাতে রাজি হয়ে যায় বিক্রম। বেআইনিভাবেই মালবাহী গাড়িতে অতিরিক্ত সংখ্যক মানুষ বহন করে সে। তার অপটু হাত ফ্লাইওভারের উপর গাড়ি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ি উল্টে গিয়ে ঘটে দুর্ঘটনা। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে কড়েয়া থানায় অনিচ্ছাকৃত খুন, অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা, বেপরোয়া গাড়ি চালানোর মামলা রুজু হয়।

পলাতক বিক্রমের সন্ধানে তিলজলার পর বিহারের ঈশ্বরপুরে পুলিশ তল্লাশি চালায়। কিন্তু মোবাইল বন্ধ করেই পালায় সে। দিন কয়েক আগে সে কলকাতায় এক আত্মীয়কে ফোন করে জিজ্ঞাসা করে, পুলিশ তার সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে কি না। সেই তথ্য পুলিশের কাছে আসে। এর পর অনেকটা নিশ্চিত হয়েই সে ফের পেশার জন্যই কলকাতায় ফিরে আসে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ফাঁদ পাতেন ট্রাফিক বিভাগের আধিকারিকরা। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বেরিয়ে শপিং মলের সামনে আসামাত্রই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তাকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। জেলের ভিতর তার টিআই প্যারেড হবে। এর পর পুলিশ তাকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানাতে পারে। ধৃতকে জেরা করে আরও কিছু তথ্য জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: WB By-Election: ভবানীপুর থেকে ‘নতুন করে খেলা হবে’, উপনির্বাচনের শেষ প্রচারে লড়াইয়ের বার্তা মমতার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement