অর্ণব আইচ: শেষপর্যন্ত ভাইয়ের স্ত্রীকে খুন (Murder) করার কথা স্বীকার করল ‘তান্ত্রিক’ নীলাঞ্জন। খুনের পর যে দেহ খণ্ডিত করেছে, জেরায় তাও জানিয়েছে ধৃত। এবার তদন্তের অংশ হিসেবে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করবে পুলিশ। তবে পুলিশের মতে, এখনও খুনের ‘মোটিভ’ ঘিরে বেশ কিছু প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। সেই ধোঁয়াশা কাটাতে তদন্ত আরও জোরদার করা হয়েছে। পুনর্নির্মাণের (Reconstruction) মধ্যে দিয়ে সেই উত্তর খুঁজবেন তদন্তকারীরা।
ওয়াটগঞ্জে (Watgunge) গৃহবধূ দুর্গা সরখেল খুনের পর দেহ খণ্ডবিখণ্ড করার ঘটনায় নতুন মোড়। এই ঘটনার পর দুর্গার ভাসুর শুদ্ধ নীলাঞ্জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রথম থেকেই পুলিশের জেরার মুখে অভিযুক্ত শুদ্ধ নীলাঞ্জন সরখেল দাবি করেছিল, সে কিছু জানে না। আর তাতেই অনড় ছিল নীলাঞ্জন। কিন্তু জেরার মুখে ক্রমে মুখ খুলতে শুরু করে সে। তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া করাত ও অন্য বস্তুগুলি তার সামনে এনে রেখে পুলিশ আধিকারিকরা জেরা করেন। একাধিক সিসিটিভির (CCTV Footage)) ফুটেজ, যেখানে সে দুর্গার দেহের অংশগুলি সাইকেলে করে নিয়ে যাচ্ছে, সেগুলিও তার সামনে রাখা হয়। এছাড়াও তার তন্ত্রসাধানার বিষয়গুলিও তুলে ধরা হয়।
[আরও পড়ুন: ‘গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে কমিশন’, রাজভবন থেকে বেরিয়ে তোপ অভিষেকের]
এসব দেখে পুলিশের জেরার মুখে নীলাঞ্জন স্বীকার করে, ভাইয়ের স্ত্রী দুর্গা সরখেলকে সে গত সপ্তাহের সোমবার গভীর রাতে খুন করে। এর পর করাত দিয়ে দেহ খণ্ড খণ্ড করে দেহের অংশ ফেলে আসে দু দফায়। খুন ও দেহ খণ্ড করার বিষয়টি শুদ্ধ নীলাঞ্জন স্বীকার করলেও খুনের কারণ বা মোটিভ সম্পর্কে এখনও বেশ কিছু ধোঁয়াশা রয়েছে। এখন কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) নীলাঞ্জনকে সঙ্গে নিয়েই পুরো ঘটনার পুনর্নির্মাণ করছে। একটি দফায় ওয়াটগঞ্জের বাড়িতে গিয়ে কীভাবে ঠাকুরঘরের লাগোয়া ঘরে দুর্গার গলা কেটে খুন ও তার পর দেহটি খণ্ডিত করা হয়, পুলিশ তা দেখবে। একই সঙ্গে যে যে রাস্তাগুলি দিয়ে সাইকেলে করে ঘুরে দু’দফায় সিআইএসএফের (CISF) পরিত্যক্ত আবাসন চত্বর ও চটকল ঘাটের কাছে দেহাংশ রেখে গিয়েছে, পুনর্নির্মাণে তা-ও দেখা হবে।
[আরও পড়ুন: কংগ্রেসের পর সিপিএম, ভোটের আগে প্রায় ৫ কোটি টাকা ফ্রিজ আয়কর দপ্তরের]
এদিকে, খুনের পর যে মহিলার শব বা রক্তাক্ত দেহ নিয়ে তন্ত্রসাধনা হয়েছিল বলে পুলিশের সন্দেহ। দ্বিতীয়বারের জন্য গঙ্গার চটকল ঘাটের কাছ থেকে মহিলার দেহের যে বাকি অংশ উদ্ধার হয়, সেখানেই একটি কালো প্লাস্টিকে মাটির মালসায় পাওয়া গিয়েছে ধুনির ছাই ও তন্ত্রসাধনা তথা পুজোর অন্যান্য উপকরণ। যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও হাতের তালু ও পায়ের পাতা উদ্ধার হয়নি। দেহের ওই অংশ সে তন্ত্রসাধনার কোনও উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করার ছক কষেছিল কি না, সেই তথ্য জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।