নব্যেন্দু হাজরা: অনুদানের নামে লকডাউনের পর নিজেরাই ভাড়া বাড়িয়ে নিয়েছিল বাসমালিকরা (Bus)। এক লাফে সাত টাকার ভাড়া ১০, নয়ের ভাড়া ১৫, ১১-র ভাড়া ২০ টাকা হয়ে ১২-র ভাড়া ২৫ করে নেওয়া হচ্ছিল। যা নিয়ে প্রায় নিত্যই যাত্রীদের সঙ্গে কন্ডাক্টরদের বচসা বাঁধত। পরিবহণ দপ্তরের কাছে অভিযোগও আসছিল প্রায়দিনই। পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও ভাড়া কমাননি মালিকরা।
আর তারপরই ভাড়া নিয়ন্ত্রণে চলন্ত বাসে হানা দেওয়া শুরু করেন মোটর ভেহিক্যালস ইন্সপেক্টর বা এমভিআইরা। তাতেই নড়ে টনক। বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগে প্রায় পঁচিশটি রুটের বাসমালিককে শোকজের চিঠি পাঠিয়েছে পরিবহণ দপ্তর। গতমাসের ৩০ তারিখ এবং ৪ অক্টোবর সোমবার পরিবহণ দপ্তরে অভিযুক্ত বাসমালিকদের হাজিরা দিতে হয়েছিল। বাড়তি ভাড়া নেওয়ার কারণের জন্য তাঁদের জবাবদিহি করতে হয়।
[আরও পড়ুন: বিধায়ক পদে মমতার শপথ নিয়েও রাজ্যের সঙ্গে কোন্দলে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়]
৩সি/১, ২৪০, গড়িয়া—বিবাদি বাগ রুটের মিনিবাস, ২৫৯, ১২ সি/ওয়ান, ১২ সি, ১২—র মতো রুটের মালিককে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁদেরকে সাবধান করে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে বাড়তি ভাড়া নেওয়া চললে বাতিল করা হবে পারমিট।এবিষয়ে সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, “দু’তিন টাকা স্টেজপ্রতি যে বাড়ানো হয়েছে, সেটা নেওয়া হোক। কিন্তু তার থেকে বেশি নেওয়া হলে তা সমর্থনযোগ্য নয়।”
লকডাউনের পর বাস চালু হলেই এক ধাক্কায় অনেকটাই বাসের ভাড়া বাড়িয়ে নিয়েছিল কন্ডাক্টররা। যা নিয়ে নিত্য বাসে যাত্রীদের সঙ্গে কন্ডাক্টরদের বচসা লেগেই থাকতো। সর্বনিম্ন ভাড়া হয়ে গিয়েছিল সাতের বদলে ১০ টাকা। তারপরের ধাপগুলোয় চলতো যেমন খুশি ভাড়া নেওয়া।
[আরও পড়ুন: ৯ ঘণ্টা পরও দাউদাউ করে জ্বলছে বড়বাজারের গুদাম, ফোনে পরিস্থিতির খোঁজ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী]
সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা ভেবে রাজ্য সরকারের তরফে ভাড়াবৃদ্ধি করেনি সরকার। তা সত্ত্বেও ডিজেলের দামবৃদ্ধি এবং যাত্রী কম হওয়ার অজুহাতকে এই ভাড়া বাড়ানোর হাতিয়ার করেছিল বেসরকারি বাসমালিকরা। ফলে বাড়তি ভাড়াই গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়ে ভাড়া নিয়ন্ত্রণে নজরদারি শুরু করে এমভিআইরা। যেখানেই এই বাড়তি ভাড়ার টিকিট পেয়েছে, সেই সব বাস এ মিনিবাসের মালিককে শোকজের চিঠি পাঠানো হয় গত মাসেই। তাঁরা হাজিরা দিলে সতর্ক করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, ফের বাড়তি ভাড়া নেওয়া হলে পারমিট বাতিল করা হবে। এই নজরদারি চলবে বলেই পরিবহণ দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে। বাসমালিকদের দাবি, ডিজেলের যে পরিমাণ দাম বেড়েছে তাতে পুরনো ভাড়ায় বাস চালানো অসম্ভব। তাই অনুদান হিসাবে কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।