রাহুল রায়: সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় প্রধান বিচারপতির নির্দেশের পুনর্বিবেচনার আরজি জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ রাজ্যের তিন মন্ত্রী। ফিরহাদ হাকিম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং অরূপ রায় নির্দেশ পুনর্বিবেচনার দাবি জানান। গত সপ্তাহে সম্পত্তি বৃদ্ধি সংক্রান্ত মামলায় ইডিকে পক্ষ বা পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সেই নির্দেশেরই পুনর্বিবেচনার আরজি রাজ্যের মন্ত্রীদের।
বিপ্লব কুমার চৌধুরী ও অনিন্দ্য সুন্দর দাস নামে দুই ব্যক্তি হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। মামলার মূল বিষয় ছিল, ২০১১ সাল থেকে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তির হিসেবনিকেশ করে দেখা গিয়েছে, একেকজনের সম্পত্তির (Assets) পরিমাণ বেড়েছে হাজার গুণ পর্যন্ত। জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচনী হলফনামায় সম্পত্তির যে পরিমাণ দেখানো হয়েছিল, পরবর্তী ৫ বছরে তা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। কীভাবে এই বৃদ্ধি? এই প্রশ্ন তুলে ২০১৭ সালে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। নাম রয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মলয় ঘটক, গৌতম দেব, ইকবাল আহমেদ, ফিরহাদ হাকিম, স্বর্ণকমল সাহা, ব্রাত্য বসু, জাভেদ খান, অরূপ রায়, আবদুর রেজ্জাক মোল্লা, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, শিউলি সাহা ও বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
যেহেতু বিষয়টি সম্পত্তি নিয়ে তাই এই মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে (ED) পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় প্রধান বিচারপতির নির্দেশের পুনর্বিবেচনার আরজি জানিয়ে শুক্রবার পালটা হাই কোর্টের দ্বারস্থ রাজ্যের তিন মন্ত্রী। ফিরহাদ হাকিম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং অরূপ রায় নির্দেশ পুনর্বিবেচনার দাবি জানান তাঁরা।
[আরও পড়ুন: ভোটব্যাংকে বামেদের ভরসা পাড়া কমিটি, নিচুস্তরের কর্মীদের সক্রিয় করার পথে আলিমুদ্দিন]
উল্লেখ্য, এর আগে বুধবার বিধানসভা থেকে ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মলয় ঘটক, শিউলি সাহা, অরূপ রায় একসঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলা প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দেন ব্রাত্য-ফিরহাদরা। তৃণমূলকে একপেশে আক্রমণের অভিযোগ তুলে ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) বলেন, “নির্বাচনী হলফনামায় আয়-ব্যয়ের সব হিসাব দিয়েছি। আয়কর দপ্তর কোনও পদক্ষেপ করেনি। রোজগার করা, সম্পত্তি বাড়ানো অন্যায় নয়। এটা জনস্বার্থ মামলা নয়। রাজনৈতিক স্বার্থে করা মামলা। বিজেপির বি টিম হয়ে কংগ্রেস-সিপিএম আক্রমণ করছে। অর্ধেক তথ্য প্রকাশ করছেন কেন?” পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তারির প্রসঙ্গে উল্লেখ করে ফিরহাদের দাবি, “পার্থ যা করেছেন, তাতে আমরা লজ্জিত। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে, তৃণমূলের সবাই চোর।”
ব্রাত্য বসু দাবি করেন, ভোটে হেরে গিয়ে কুৎসার রাজনীতি করছে বিরোধীরা। তার কুপ্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) আরও দাবি, সম্পত্তি বৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে অধীররঞ্জন চৌধুরী, সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোক ভট্টাচার্য, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, আবু হেনা, ফণীভূষণ মাহাতো, ধীরেন বাগদি, রূপরানি মণ্ডল, তরুণকান্তি ঘোষ, চন্দন সাহা, নেপাল মাহাতো, মোহিত সেনগুপ্তর মতো রাজনৈতিক নেতৃত্বেরও। তাঁর কথায়, “আমরা সিপিএম, কংগ্রেস বা অন্য দল নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। কুৎসার বিকল্প কুৎসা হতে পারে না। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেব।”