ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দেশ আর এই রাজ্যেও প্রধান শত্রু বিজেপি। সেটা মাথায় রেখে লড়াইয়ের মাঠে নেমে পড়ুন। দল বাঁচাতে হল ঠাণ্ডা ঘরে বসে থাকলে হবে না– প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারকে পাশে নিয়ে দলের পদাধিকারীদের এই বার্তা দিয়ে গেলেন এআইসিসি নেতা ও রাজ্যের পর্যবেক্ষক গুমাল মীর। সূত্রের খবর, সঙ্গে তিনি এও স্পষ্ট করে দেন যে, ‘জোটের কথা ভাবতে হবে না। একা লড়াই করে দলের সংগঠন মজবুত করুন।’
২০১৪ সালে কাশ্মীরে বিধায়ক হিসাবে শেষবার জিতেছিলেন মীর। আবার জিতলেন ২০২৪-এ, ১০ বছর পর। বিধান ভবনে মীর তাঁর এই ১০ বছরের লড়াইয়ের কথা তুলে আনেন রবিবারের বৈঠকে। বলেন, ‘আমি যখনই সময় সুযোগ পেতাম কাশ্মীর চলে যেতাম। মাঝে যে ক'বছর পেরেছি নির্বাচনী লড়াই না থাকলেও এলাকায় গিয়ে পড়ে থাকতাম। বাংলাতেও সেটা করতে হবে। নিচু তলায় কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে হবে। কাদের হাত ধরে ভোটে যাওয়া হবে, আদৌ কারও হাত ধরা হবে কিনা, সেসব ভাবতে হবে না। আপনারা সংগঠন মজবুত করুন। মনে রাখবেন দেশে এবং বাংলায় প্রধান শত্রু বিজেপি। তাদের রুখতেই হবে।’
বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মীরের এই বার্তাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে দল। তবে সূত্রের খবর, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই জেলা সফর শুরু করবেন প্রদেশ সভাপতি। তার পর জেলাস্তরে কমিটি নতুন করে তৈরির কাজ শুরু হবে। তার আগে দলকে ‘ভোকাল টনিক’ দিতেই মীরের এই প্রাক-কমিটি গঠন সফর বলে মনে করা হচ্ছে। দল এবং রাজনৈতিক মহলের কাছে এর মধ্যে সব থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হয়েছে মীরের ‘প্রধান শত্রু বিজেপি’ এই কথায়। কারণ এতদিন অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিপিএমকে সঙ্গী করেছিল প্রদেশ কংগ্রেস। এবার মীর দলের লাইন স্পষ্ট করে দিলেন বিজেপিকে মূল শত্রু চিনিয়ে একলা লড়াইয়ের কথা বলে দিয়ে। আগের দিন দলের লাইন নিয়ে আলোচনায় কে কী চান তা জানতে ‘চিরকুট’ দিতে বলেছিলেন মীর। এদিন আরও একধাপ এগিয়ে বিধানসভা ভোটে কারা প্রার্থী হতে চান, হাত তুলে তা জানাতে বলেন। অনেকেই হাত তুলে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন।
উল্লেখযোগ্য হল, এদিন মীরের সঙ্গে বৈঠকে দলের সম্পাদকমন্ডলীকে ডাকা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে দলের এক রাজ্য সম্পাদক ও মুখপাত্র সুমন রায় চৌধুরী বলছেন, "১০ বছর পর প্রদেশ সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের নেতৃত্বে এই ধরনের কোনও বৈঠকে ডাক পেলাম। তবে এর আগে দলের কর্মসমিতির এক বিদায়ী সভায় আমাদের ডেকেছিলেন প্রাক্তন সভাপতি অধীর চৌধুরী।"