স্টাফ রিপোর্টার: টিম-মমতার দুই স্ট্রাইকারের একজন বিধানসভায় সরাসরি রেফারির ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন বৃহস্পতিবার। চারমাস চলা দুই সহকর্মী মন্ত্রী ইন্দ্রনীল-বাবুলের প্রকাশ্যে চলা বাগযুদ্ধ ও টানাপোড়েন থামাতে দরজা বন্ধ করে ‘শান্তি বৈঠক’ করলেন অরূপ বিশ্বাস (Aroop Biswas)। একমাত্র দর্শক নাট্যকার-অভিনেতা-পরিচালক, তিনি ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। বৈঠক নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি। ঘনিষ্ঠ মহলে মমতার ক্রাইসিস-ম্যানেজার অরূপ শুধু সাফল্যের হাসি ছড়িয়ে বলেন, ‘‘মিটে গিয়েছে দুজনের পুরনো ঝগড়া, এখন শুধুই শান্তি।’’
ইন্দ্রনীল-বাবুল ম্যাচে মাস চারেক ধরেই দশ গোলে এগিয়ে আছেন তথ্য-সংস্কৃতি ও পর্যটনমন্ত্রী! বিশেষ করে বাবুলের পর্যটন দপ্তর নিয়ে ইন্দ্রনীলকে শুধু দেওয়া নয়, বিধানসভার (Assembly) মিউজিয়াম উদ্বোধনে এসে ‘দূরের বলাকা’র শিল্পীকে সবার সামনেই দরাজ সার্টিফিকেট দেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘ইন্দ্রনীলের গানের গলা তো এক্সেলেন্ট।’’ হলে বসা বিধায়করা অনেকেই বলে ওঠেন, আরও দশ কদম এগিয়ে গেল ইন্দ্রনীল। এমনই প্রেক্ষাপটে অধিবেশনের শেষ দিনের শুরুতেই চলচ্চিত্র উৎসবে উপেক্ষিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মন্ত্রী বাবুল।
[আরও পড়ুন: টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন: বাতিল মহুয়া মৈত্রর সাংসদ পদ]
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় জিএসটি বিল (GST Bill) নিয়ে আলোচনা চলছিল। পাশাপাশি বসে ছিলেন দুই অভিন্নহৃদয় বন্ধু অরূপ-ইন্দ্রনীল। হঠাৎ দেখা যায়, বাবুল নিজের আসন ছেড়ে অরূপের পাশে। প্রেস গ্যালারি থেকে মনে হল, অরূপকে কিছু অনুযোগের সুরে হাত নেড়ে নেড়ে অভিযোগ করছেন বাবুল। ততক্ষণে পাশে এসে দাঁড়ান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ট্রেজারি বেঞ্চের অনেকের নজর চার মন্ত্রীকে ঘিরে। কথা চলতে চলতে হঠাৎ ‘মুখ্যমন্ত্রীর স্ট্রাইকার’ উঠে দাঁড়ান, বাবুল-ইন্দ্রনীলকে বগলদাবা করে নিজের ঘরে যান। সঙ্গে ব্রাত্যও। আপ্তসহায়কের কাছে নির্দেশে বিদ্যুৎমন্ত্রীর, কেউ যেন ঘরে না ঢোকে। আধঘণ্টা আলোচনায় যখন ঘরের দরজা খোলে, ম্যাচ জয়ের তৃপ্তির হাসি ক্রীড়ামন্ত্রীর মুখে, ইন্দ্রনীল-বাবুল পাশাপাশি ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে।
[আরও পড়ুন: অভিষেকের দপ্তরের হস্তক্ষেপ, দুদিন পর এসএসকেএমে ভর্তি কোচবিহারের রোগিণী]
শত চেষ্টাতেও একটি শব্দও উচ্চারণ করলেন না মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের ‘এক্সেলেন্ট গায়ক’ ইন্দ্রনীল (Indranil Sen)। বাবুলের মোবাইলও বেজে গেল। মন্তব্য এড়িয়ে গেলেন টিম-মমতার ‘দুরন্ত স্টাইকার’ টালিগঞ্জের বিধায়ক। তৃণমূলের খবর, বাবুল কিছুটা অভিমানে ইন্দ্রনীলকে বলেন, ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে কেন একবারের জন্য কাউকে সম্মান জানাতে মঞ্চে ডাকা হল না তাঁকে? বাবুলের (Babul Supriyo) দাবি, অনিল কাপুরের সঙ্গে ৩০ বছর আগে থেকে কাজ করেছেন, সলমনের সঙ্গে দু’বার ‘ওয়ার্ল্ড টুর’ করেছেন। অথচ জুনিয়র অভিনেত্রীকে দু’বার মঞ্চে তুলে সম্মান দিতে ডাকা হয়। ইন্দ্রনীল সেই বক্তব্য খণ্ডন করে জানিয়ে দেন, কে কখন কাকে সম্মান জানাতে উঠবেন, তিনি ঠিক করেননি। সমর্থন জানান ‘টলিউডের অভিভাবক’ অরূপ বিশ্বাস। কী ফর্মুলায় ‘দ্বন্দ্ব’ মেটালেন? নিষ্পাপ হাসি ছড়িয়ে অরূপের উত্তর, “কীসের দ্বন্দ্ব? আড্ডা দিচ্ছিলাম আমরা চারজন।”