shono
Advertisement

আয়ুশ নিয়ে কেন্দ্রের নয়া নীতির বিরুদ্ধে ধর্মঘট IMA’র, পালটা বাড়তি কর্মোদ্যোগ আয়ুর্বেদ কলেজে

দেশজুড়ে IMA'র ডাকা ধর্মঘটের তেমন প্রভাব নেই এ রাজ্যে।
Posted: 12:48 PM Dec 11, 2020Updated: 12:50 PM Dec 11, 2020

গৌতম ব্রহ্ম: আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ৫৮টি অস্ত্রোপচারকে মান্যতা দিয়েছে কেন্দ্র। এই নীতির প্রতিবাদে আজ দেশজুড়ে ধর্মঘটে শামিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (IMA) প্রায় ৪৫ হাজার চিকিৎসক, বিশেষত শল্য চিকিৎসকরা। আর ঠিক এই দিনেই আইএমএ-র পালটায় পরিষেবা চালু রেখে তো বটেই, গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনের মাধ্যমে প্রতীকী প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বাংলার আয়ুর্বেদ (Ayurved) চিকিৎসকরা। রাজ্যে এই ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব পড়েছে। কোথাও কোথাও জরুরি বিভাগ ছাড়া আউটডোরে রোগী দেখা বন্ধ শুক্রবার। আবার কোথাও উলটো ছবি। যেমন শ্যামবাজার জেবি রায় আয়ুর্বেদ কলেজ। সেখানে আজই চলছে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচার।

Advertisement

গত ১৭ নভেম্বর আয়ুর্বেদ চিকিৎসার আওতায় ৫৮টি সার্জারিকে (Surgery) এনে নয়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। আয়ুর্বেদ চিকিৎসা নিয়ে যাঁরা পড়াশোনা করছেন, তাঁদের এসব সার্জারি প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসে শেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের বেশিরভাগ শল্য চিকিৎসক। যদিও বাংলার চিকিৎসকদের বক্তব্য, আয়ুর্বেদ চিকিৎসার বিরুদ্ধে তাঁরা কেউ নন। তবে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের নতুন বিলে তাঁদের আপত্তি আছে। অন্যদিকে, রাজ্যের আয়ুর্বেদ কলেজগুলিতে এদিন অতিরিক্ত কর্মোদ্যোগ লক্ষ্য করা গেল। শ্যামবাজারের জেবি রায় আয়ুর্বেদ কলেজের অপারেশন থিয়েটারে চূড়ান্ত তৎপরতা। দুটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন চলছে সেখানে। সোনারপুর এবং ভদ্রেশ্বরের দুই তরুণের জটিল অস্ত্রোপচারের দায়িত্বের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার অর্ণব রায়। তাঁর বক্তব্য, ”আমাদের এখানে অপারেশন নতুন কিছু নয়। প্রতি সপ্তাহেই ৭, ৮টি করে অস্ত্রোপচার হয়। তবে আজকের মতো গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন কম হয়।”

[আরও পড়ুন: নেতা ও মন্ত্রীদের কন্ঠস্বর নকল করে ফোন! টাকা আদায়ের চেষ্টা, গ্রেপ্তার যুবক]

কেন্দ্রীয় নীতিকে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলছেন, ”বরাবরই আয়ুর্বেদ চিকিৎসার একটা অঙ্গ অস্ত্রোপচার। যদিও শল্যচিকিৎসকদের একটা বড় অংশ তা মানতে চাইতেন না। ফলে আয়ুর্বেদে অস্ত্রোপচার সেভাবে প্রচারে উঠে আসেনি। কিন্তু কেন্দ্রের নয়া নীতিতে আমাদের সুবিধা হল অনেকটা।” এই জেবি রায় কলেজে বরাবর শল্য চিকিৎসা হয়ে থাকে। বছর বারো আগেও এখানে প্রসূতি বিভাগে ডেলিভারি হত। সাহায্য করতেন আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞ মহলের একটা বড় অংশের ধারণা, আজকের দিনেই আয়ুর্বেদ কলেজে গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনের সিদ্ধান্ত বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।

[আরও পড়ুন: শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি, তবে এখনও সংকটজনক বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য]

ইতিহাস বলছে, আয়ুর্বেদশাস্ত্র অন্তত ৫ হাজার বছরের পুরনো চিকিৎসা পদ্ধতি। এর প্রতিষ্ঠাতা সুশ্রুত ঋষি নিজে শল্য চিকিৎসার উল্লেখ করেছেন তাঁর ‘সুশ্রুত সংহিতা’য়। সেখানে রাইনোসার্জারি বলে এক অপারেশনের উল্লেখ রয়েছে, যা আদতে আজকের দিনে নাকের প্লাস্টিকসার্জারির মতো বিষয়। এছাড়া ইতিহাসে এও পাওয়া যায় যে সুশ্রুতের দেখানো এই রাইনোসার্জারি প্রয়োগ করেই মাদ্রাজের বিশেষজ্ঞ সেসময় যুদ্ধে কাটা যাওয়া এক সৈনিকের নাক জোড়া লাগিয়েছিলেন। এছাড়া এখনও উত্তর পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে একযোগেই অস্ত্রোপচার করে থাকেন শল্যচিকিৎসক ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা। সেসব দেখেশুনেই কেন্দ্র ৫৮টি সার্জারিকে এর আওতায় এনেছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement