নব্যেন্দু হাজরা: হলুদ ট্যাক্সির অসুখে আক্রান্ত বাইক ট্যাক্সি (Bike Taxi)। দেদার যাত্রী প্রত্যাখ্যান তো চলছেই, সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে বাড়তি ভাড়ার চাহিদা। অ্যাপে বাইক বুকিং-এর সময় যে টাকা দেখাচ্ছে, যাত্রীকে তোলার সময় চালক বাড়তি আরও ৩০-৪০ টাকা চাইছেন বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। বিশেষত একটু রাত বাড়লেই যেমন খুশি ভাড়া চাইছেন চালকরা। ১০০ টাকার কম ভাড়া দেখলে ট্রিপ নিচ্ছেন না, বাতিল করে দিচ্ছেন। ফলে যাত্রীরা পড়ছেন সমস্যায়। আপে ঢুকে বাইকের হদিশ পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে। যেহেতু সরকারের এখনও কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই বাইক ট্যাক্সির উপর তাই আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছেন চালকরা। মিটার ট্যাক্সিতে যেমন মিটার বন্ধ রেখে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা চেয়ে গন্তব্যে পৌঁছন চালকরা, ঠিক তেমনি বাইক ট্যাক্সিতেও একই অসুখ দেখা দিয়েছে। অ্যাপ বন্ধ রেখে রাস্তার ধারে অপেক্ষারত যাত্রীদের গন্তব্যে নিয়ে যেতে যেমন খুশি ভাড়া চাইছেন তাঁরা।
তবে পরিবহণ দপ্তরসূত্রে খবর, শীঘ্রই এই বাইক ট্যাক্সি নিয়ন্ত্রণে আইন আনা হবে। সে সংক্রান্ত নতুন গাইডলাইনও বের করবে পরিবহণ দপ্তর। ইতিমধ্যেই বাইক ট্যাক্সি নামানোর জন্য সার্ভিস প্রোভাইডার বা এগ্রিগেটরদের আবেদন করতে বলা হয়েছে। বর্তমানে ওলা (Ola), উবের (Uber) এবং রেপিডোতে (Rapido) প্রায় ৪০ হাজারের বেশি বাইক চলে। এবং চলে চালকদের মর্জিমতো। আর তাই যাত্রীদের অভিযোগ পেয়ে রোজই হচ্ছে ঝুড়ি ঝুড়ি চালকের আইডি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। দিন সাতেক পর আবার তা খুলছে।
[আরও পড়ুন: ফের অনুব্রত মণ্ডলকে নোটিস সিবিআইয়ের, বুধবার নিজাম প্যালেসে হাজিরার নির্দেশ]
পার্ট টাইমেও অনেকে এই কাজ করেন। র্যাপিডো, ওলা, উবেরের মতো সার্ভিস প্রোভাইডার সংস্থার অ্যাপ ডাউনলোড করলে নিজের গাড়ির নম্বর তাতে এন্ট্রি করিয়ে নেন। ফলে বুকিং পান। কিন্তু এই পুরো প্রক্রিয়াটাই বেআইনি। কারণ এতে না আছে সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ, না যাত্রী কোনও সমস্যায় পড়লে তার দায় এগ্রিগেটর নেয়। এই ধরনের বাইকের বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের কোনও রেজিস্ট্রেশন যেমন নেই, তেমনই বহু চালক আবার বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে অ্যাপ-নির্ভর এই বাইক-ট্যাক্সিগুলি চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ পুলিশের। বহু চালক নিজের লাইসেন্সও দেখাতে পারেন না বলে দাবি ট্র্যাফিক আধিকারিকদের।
[আরও পড়ুন: জীবনযাপনে অস্বচ্ছতা দেখলেই কড়া ব্যবস্থা নেবে দল, জেলা নেতৃত্বকে বার্তা অভিষেকের]
তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাইক ট্যাক্সির ভাড়ার পরিমাণ অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে অ্যাপ সংস্থাগুলো। যাত্রীরাও পড়ছেন সমস্যায়। বাইক আরোহীদের দাবি, একেকজন চালকের দিনে ছয় থেকে সাতশো টাকা রোজগার। নিয়ম অনুযায়ী একটি ট্রিপের ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ টাকা অ্যাপ সংস্থাকে দিতে হয়। আর বাকি টাকা পায় চালক। সঙ্গে প্রতি ট্রিপেই বলতে গেলে বাড়তি টাকা চান চালকরা। সিটু পরিচালিত বাইক ট্যাক্সি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ মানু বলেন, “কম খরচে যাতায়াতের একটা মাধ্যম বাইক ট্যাক্সি। তবে অনেক সময় মানুষ অসুবিধায় পড়ে বাইক বুক করেন। তাই আমরা চালকদের অনুরোধ করব তাঁরা যেন কোনওভাবেই ট্রিপ ক্যানসেল না করেন।”