স্টাফ রিপোর্টার: শুক্রবার বিকেল তিনটে। এসএসকেএম হাসপাতালের (SSKM Hospital) বাইরে যাচ্ছে ফুলে, ফুলে সাজানো একটি শববাহী গাড়ি। ভিতরে শায়িত ভদ্রলোকের নাম জগদীশ মণ্ডল। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ডেথ সার্টিফিকেটে বয়স মাত্র ৪৮ বছর। এখন তাঁর অঙ্গ নিয়ে নতুন করে বাঁচার লড়াই শুরু করলেন আরও তিনজন। ফের অঙ্গদানে নজির গড়ল শহর কলকাতা (Kolkata)।
এঁদের মধ্যে একজনের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে জগদীশের একটি কিডনি (Kidney) আর লিভার (Lever)। দ্বিতীয় কিডনি পেয়েছেন আরও একজন, এবং তৃতীয় ব্যক্তি পেলেন হার্ট। তিনজনের প্রতিস্থাপন শেষ হয়েছে মাঝরাতে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অঙ্গ প্রতিস্থাপন সফল হয়েছে। এসএসকে এম কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, একই ব্যক্তির দেহে পরপর দুটি কিডনি ও লিভার প্রতিস্থাপনের নজির নেই বললেই চলে। আর সেই কাজটা সফলভাবে হয়েছে জগদীশ মণ্ডলের অঙ্গ থেকে। এখানেই শেষ নয়। জগদীশ মণ্ডলের দুটি কর্নিয়া ও ত্বকও দান করেছে তাঁর পরিবার। অঙ্গদান অনেকেই করতে রাজি হয়। কিন্তু ত্বক দান করতে রাজি হয়েছে এমন নজির নেই বললেই চলে। জগদীশ মণ্ডলের স্ত্রী সেই অনুমতিও দিয়েছেন। তাই চিরবিদায় দিতে হাসপাতালের তিন চিকিৎসক চলে আসেন। জগদীশ মণ্ডলের কিডনি ও লিভার পেয়েছেন অমিত কুমার (৩৪) নামে এক তরুণ। তিনি বিহারের (Bihar)বাসিন্দা।
[আরও পড়ুন: প্রথম ছবিতেই বাজিমাত, হলের বাইরে ভিড় দেখে মনে হচ্ছে ‘শোলে’, মদন বলছেন ‘ওহ লাভলি’]
শুক্রবার সকাল থেকে জগদীশ মণ্ডলের শরীর থেকে একটা একটা করে কিডনি, লিভার, হৃদযন্ত্র তুলে নেওয়া হয়। প্রতিস্থাপন করা হয় তিন রোগীর দেহে। এর মধ্যে হার্ট পেয়েছেন বেসরকারি হাসপাতাল মেডিকার এক রোগী। দুটি কর্নিয়া পিজি হাসপাতালে রাখা হয়েছে। দ্রুত প্রতিস্থাপন হবে। জগদীশ মণ্ডলের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের ফিফা পঞ্চায়েত এলাকায়। বাড়িতে স্ত্রী, এক মেয়ে, এক ছেলে। দক্ষিণ কলকাতার কালীঘাট বাজার এলাকায় মুরগির দোকানে কাজ করতেন। ওঁর ভাই সুব্রত মণ্ডলের কথায়, “অভাবের সংসার। তাই এক-দেড় মাস অন্তর বাড়ি আসতেন।” গত সোমবার বেলা তিনটে নাগাদ হোটেলে খাওয়ার জন্য রাস্তা পার হচ্ছিলেন। তীব্র গতিতে একটা বাইক ধাক্কা মেরে চলে যায়। ফুটবলের মতো দলা পাকিয়ে রাস্তায় পড়ে যান।