অভিরূপ দাস: ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের বঙ্গীয় শাখার নির্বাচন ঘিরে ধুন্ধুমার। শুক্রবার একঝাঁক চিকিৎসক অভিযোগ করলেন, চূড়ান্ত বেআইনিভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন ডাক্তার শান্তনু সেনের গোষ্ঠী। শুধু তাই নয়, ডাক্তার কাজলকৃষ্ণ বণিক, ডাক্তার নারায়ণ চন্দ্র করের অভিযোগ, ‘‘আসন্ন নির্বাচনের জন্য আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় সিবিআইয়ের হাতে পাকড়াও ডা. সন্দীপ ঘোষকে ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে। অথচ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এমন অনেকেই ব্যালট পেপার পাননি।’’ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি চিকিৎসক শান্তনু সেন। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) বেঙ্গলের রাজ্য সম্পাদক পদে এবারও যিনি প্রার্থী। শান্তনু সেনের দাবি, ‘‘আইএমএ বঙ্গীয় শাখার নির্বাচন পরিচালনা করছে নির্বাচন কমিশন। কারও কোনও অভিযোগ থাকলে সেখানে গিয়ে জানান।’’
শুক্রবার পার্কসার্কাসে আইএমএ অফিসের সামনে চিকিৎসকদের একাংশের বিক্ষোভ নিয়ে ডাঃ শান্তনু সেনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘যে গুটিকয়েক চিকিৎসক এসেছিলেন, তাঁরা সকলেই বিশেষ একটি দলের সমর্থক। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ইস্যুতে এরাই রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে নেমেছিলেন। এখন নির্বাচনে গো-হারান হারবেন জেনে মিথ্যে অভিযোগ করছেন।’’ আইএমএ বঙ্গীয় শাখার অফিসের সামনে বুকে পোস্টার এঁকে প্রতিবাদে নামেন কাজল কৃষ্ণ বণিক, উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বাগত মুখোপাধ্যায়রা। যে পোস্টারে লেখা ছিল, ‘‘দুর্নীতি পেশীশক্তিমুক্ত স্বচ্ছ আইএমএ নির্বাচন করতে হবে।’’
এদিনের বিক্ষোভ থেকে একটি দাবিপত্র প্রকাশ করেন বিক্ষোভকারীরা। আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী ডাক্তার সুরজিৎ ঘোষের অভিযোগ, ‘‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের বঙ্গীয় শাখায় গালা দিয়ে সিল করা একটি ব্যালট বক্স রাখা হয়েছে। গণতান্ত্রিক মতে এই ব্যালট বক্স রাখার সময় বিরোধী প্রার্থীদেরও ডাকা উচিৎ ছিল। কাউকে কিছু না জানিয়ে বিশেষ একটি গোষ্ঠী এই ব্যালট বক্স রেখে গিয়েছে। রাখার সময় তা খালি ছিল? না তাতে কিছু ছিল সেটা নিয়ে আমরা সন্দেহ প্রকাশ করছি।’’ ডাঃ নারায়ণচন্দ্র করের বক্তব্য, ‘‘৩ হাজার টাকার পরিবর্তে একটি অসম্পূর্ণ ভোটার লিস্ট দেওয়া হয়েছে। সেখানে কোনও ভোটারের ঠিকানা ফোন নম্বর কিচ্ছু নেই। লিস্টে এমন অনেকের নাম আছে, যাঁরা আদৌ বেঁচে নেই।’’
এই সমস্ত অভিযোগকে পরাজয়ের অজুহাত হিসেবে দাগিয়েছেন ডাঃ শান্তুনু সেন। তাঁর কথায়, ‘‘এঁরা প্রত্যেকে কট্টর বামপন্থী। এঁদেরই দেখা গিয়েছিল দ্রোহের কার্নিভালের নামে জুনিয়র ডাক্তারদের পিছন থেকে মদত দিতে।’’ এদিন শান্তুনু সেন জানিয়েছেন, ‘‘এবারেও আইএমএ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতবেন তৃণমূলপন্থী চিকিৎসকরা। আমার প্যানেলে রয়েছে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর ডাঃ মীনাক্ষি গঙ্গোপাধ্যায়, আছেন বারাসতের কাউন্সিলর ডাঃ বিবর্তন সাহা, রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের দুই সম্পাদক। হার অনিবার্য জেনে বামেরা মিথ্যে অভিযোগের খেলায় নেমেছেন।’’