মলয় কুণ্ডু: রাজ্যের মহিলাদের উপর অত্যাচারের কোনও ঘটনা ঘটলেই পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সরাসরি কারও নাম না করলেও মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন, বিরোধীরা রাজ্যেক বদনাম করতে চক্রান্ত করতে পারে। তাই সব সময় এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, “তফশিলি, আদিবাসী মা-বোনেদের উপর অত্যাচার হলে ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনও ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকেও নজর দিতে হবে। কারণ, শকুনিরা চারিদিকে চক্রান্ত করবেই। আমাদের অ্যালার্ট থাকতে হবে।” এরপরই রাজ্যের ডিজি বীরেন্দ্রকে তাঁর নির্দেশ, “কোনও অ্যাট্রেসিটিস হলে, এনকোয়ারি করে যদি দেখেন এটা সত্যি তাহলে স্ট্রং অ্যাকশন নেবেন। আমার কাউকে বাঁচানোর কোনও ব্যাপার নেই।”
বুধবার নবান্নে (Nabanna) সিডিউল কাস্ট অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তফশিলি জাতিদের উন্নয়নে কিভাবে দলীয় বিধায়করা কাজ করবেন, তার রূপরেখাও ঠিক করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। তাঁর অনুরোধে মুখ্যমন্ত্রী বলাগড়ে দিলত সাহিত্য অ্যাকাডেমির শাখা করারও নির্দেশ দেন। সাঁওতালি, লেপচা, গোর্খা অ্যাকাডেমি মুখ্যমন্ত্রীর অনেকগুলি বই অনুবাদ করেছে। দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমিকেও তা করার জন্য মনোরঞ্জনবাবুকে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: বাড়ল বাজেট, চাকরিতে সংরক্ষণ, তফসিলি জাতির উন্নয়নে বড় ঘোষণা Mamata Banerjee’র]
তাঁর পরামর্শ, করোনা পরিস্থিতি (Covid Situation) আরও ভাল হলে নভেম্বর কিংবা ডিসেম্বর মাসে রাজ্যে দলিত সাহিত্য সম্মেলন করার। তার খরচও দেবে রাজ্য সরকার। সেখানে প্রতিটি রাজ্য থেকে ৫ জন করে দলিত সাহিত্যিককে আমন্ত্রণ করার কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী। মনোরঞ্জনবাবুর ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আপনি যে কত রিক্সা চালিয়েছেন, কত রান্না করেছেন, তার মধ্যে দিয়েও সাহিত্য দিয়েছেন, কত বড় কাজ করেছেন বলুন তো। সমাজের কোথা থেকে উঠে এসে আপনি এই জায়গায় এসেছেন। আপনার মতো মানুষের খুব অভাব। আপনার মতো মানুষের জন্য আমরা গর্বিত।” অ্যাকাডেমির লোগোও তিনি এঁকে দিয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
জাতি শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্প থেকে। কোনওভাবেই যাতে তা ভুয়ো না হয়, তার জন্য কড়া নজর দিতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তফশিলি জাতি বা এসসি, এসটি প্রমাণের কোনও কাগজ নেই, এমন প্রায় ৭ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। মতুয়াদের নাগরিকত্ব ইস্যু নিয়ে বিধানসভা ভোটের (Assembly Election 2021) আগে বিজেপির (BJP) অবস্থানর কড়া সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেউ তো কিছু করে না। ইলেকশনের সময় আসে আর মিথ্যে কথা বলে। কাজটা যা করার কিন্তু আমরাই করেছি। ঠাকুরবাড়িতে আমি ছাড়া কে যেত? কেউ যেত না। বড়মাকে ২০-৩০ বছর ধরে কে দেখেছে? এরা এখন বড় বড় কথা বলে সব। বাইরের লোক এসে হঠাৎ ইলেকশনের আগে চলে যাচ্ছে। সার্টিফিকেট দেব! কিসের সার্টিফিকেট দেবে? তারা ভোটার নয়, তারা স্কুলে পড়ে না। কলেজে যায় না চাকরি করে না। জমিজমা নেই। শুধু মিথ্যে কথা।”