সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অস্ত্রোপচার শেষ। টিউমারটি এবার ওজন করা হল। দেখা গেল ওজন ঠিক ৬ কেজি! অর্থাৎ বুকের বামদিকের স্তনে যে টিউমার তিল তিল করে বড় হচ্ছিল তার ওজন ঠিক ৬ কেজি!
কয়েকদিন আগে খাস কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারির অধ্যাপক ডা.উৎপল দে মহিলার স্তনের টিউমার অপারেশন করেছেন। অপারেশন বললে ভুল বলা হবে, বছর ৪৫-এর ওই মহিলার জীবন বাঁচাতে বুকের বা দিকের স্তন তো বটেই বুকের ওই অংশের হাড় পর্যন্ত চেঁচে বাদ দেওয়া হয়েছে। উৎপল বাবুর কথায়, "শত্রুর শেষ রাখতে নেই। বিশেষ করে এমন দৈত্যকার টিউমার এতদিনের ডাক্তারি জীবনে দেখিনি।" এন আর এস মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা.ইন্দিরা দে জানিয়েছেন রামপুরহাটের পাকুড় এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা যখন হাসপাতালের আউটডোরে দেখাতে আসেন রীতিমত হতবাক হয়ে যান কর্মরত ডাক্তার নার্সরা। ডা. উৎপল দে বলেছেন, "অসহনীয় যন্ত্রণায় কাতরাছিলেন। আর দেরি না করে দ্রুত ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।"
ঘটনা হল, অস্ত্রোপচারের আগে এম আর আই করে দেখা হয় যে টিউমার থেকে ক্যানসার হওয়ার কোনও আশঙ্কা রয়েছে কী না? কিন্তু এমন দৈত্যাকার টিউমার যে এম আর আই করাই সম্ভব হয়নি। শেষপর্যন্ত সিটি স্ক্যান করা হয়। যে আশঙ্কা করা হয়েছিল তাই হল। সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট দেখে বোঝা গেল ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আর দেরি করা হয় নি। প্রায় পাঁচ ঘন্টার অপারেশনের পর বেডে দেওয়া হয় ওই মহিলাকে।
তবে এটাই প্রথম অপারেশন নয়। এর আগে আরোও দুবার একই জায়গায় অপারেশন করা হয়েছিল। সেই রিপোর্ট দেখেই এন আর এসের ডাক্তারবাবুদের বক্তব্য, এর আগে দুবার অপারেশন হয়েছিল। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে ফের টিউমার তৈরি হত। তাই এবার স্তন তো বটেই প্রাণ বাঁচানোর জন্য বুকের বা দিকের হাড় বাদ দেওয়া হয়েছে। শরীরের অন্য অংশ থেকে মাংস নিয়ে ওই জায়গায় বসানো হয়েছে। আপাতত সুস্থ। পাকুড়ে নিজের বাড়ি ফিরে গিয়েছেন মহিলা। তবে বায়োপসি রিপোর্ট এখনও হাতে আসেনি। তবে অধ্যাপক ডা. উৎপল দে আশা প্রকাশ করেছেন, এমনভাবে অপারেশন করা হয়েছে যে আর সেই ব্যথা সহ্য করতে হবে না। আগামী দিনগুলো ভালোভাবেই কাটবে তাঁর।