রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পার্টি চিঠির পর এবার সিপিএমের এরিয়া সম্মেলনের প্রতিবেদনেও উঠে এল 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার' প্রকল্পের প্রসঙ্গ। রাজ্য সরকারের সর্বাধিক জনপ্রিয় সামাজিক প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ নিয়ে এতদিন কটাক্ষের শেষ ছিল না সিপিএমের। নির্বাচনী আবহে প্রকল্পকে ‘উৎকোচ’ বলে মন্তব্য করেছিলেন একাধিক সিপিএম নেতা-কর্মী। সেটা যে ভুল ছিল এবং বুমেরাং হয়েছে, তা স্পষ্ট হয়েছে ভোটের ফলাফলে। আর তাই 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে'র ধাক্কায় নির্বাচনে পার্টি যে কুপোকাৎ, তা এরিয়া কমিটির সম্মেলনগুলিতেই স্বীকার করে নিচ্ছে সিপিএম।
রাজ্যজুড়ে সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্মেলন এখন প্রায় শেষের মুখে। কিন্তু বিভিন্ন এরিয়া কমিটির সম্মেলনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বিষয়টি। আলোচনাতেও উঠে আসছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্পের কথা। সম্মেলনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী - এই সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে গরিব মানুষ। আর গরিব মানুষের সমর্থনও তাই তৃণমূলের উপর অটুট রয়েছে। আবার সাংগঠনিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিটিং-মিছিলে যে সংখ্যক লোক থাকছে, আর সেই বুথে দেখা যাচ্ছে নির্বাচনের সময় তার থেকেও কম ভোট পাচ্ছে সিপিএম প্রার্থী। এ প্রসঙ্গে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘সিপিএম পার্টিতেই সম্মেলনে সদস্যরা তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা বলেন। তৃণমূল ভোটের জন্য কিছু প্রকল্পকে যে ব্যবহার করছে, সেই মতও উঠে আসছে।’’
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার' এখন সারা দেশেই মডেল। বিভিন্ন রাজ্যে এই ধরনের প্রকল্প চালু করেছে সেখানকার সরকার। আবার এ রাজ্যে বিজেপিকেও মেনে নিতে হয়েছে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের সাফল্যের কথা। সম্প্রতি পার্টির চিঠিতেও তৃণমূল সরকারের জনমুখী প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর সমালোচনা যে ঠিক ছিল না, সেটা স্বীকার করে নিয়ে বলা হয়েছিল, “জনগণের মধ্যে, বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে তৃণমূলের প্রতি সমর্থনের অন্যতম উপাদান হল লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো কিছু প্রকল্প ও জনকল্যাণমূলক ব্যবস্থা। কিছু পার্টি ইউনিট বা কর্মীদের ভ্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই সব প্রকল্পকে উৎকোচ বা ‘ডোল’ বলে চিহ্নিত করার প্রবণতা রয়েছে। যা গরিব মানুষকে আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।”