রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে কলকাতা সফরে এসেছেন অমিত শাহ। 'ব্রাত্য' প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের মান ভাঙাতে খোদ আসরে নেমেছেন তিনি। বুধবার সাংসদ-বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে বৈঠক করেন শাহ। সেখানেও ডাক পেয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। শোনা যাচ্ছে, তাঁকে ফের সক্রিয় করার পরিকল্পনাতেই এই বৈঠক। বেরিয়ে এবিষয়ে মুখ খুললেন দিলীপ ঘোষ।
সোমবার রাতে কলকাতা সফরে এসেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। উদ্দেশ্য নেতা-কর্মীদের ছাব্বিশের রোডম্যাপ বুঝিয়ে দেওয়া। আজ, বুধবার সকালে কলকাতার একটি হোটেলে দলের সাংসদ-বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এরপর বাছাই করা কয়েকজনের সঙ্গে আরেকটি বৈঠকে বসেন শাহ। সেখানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের পাশাপাশি ডাক পেয়েছিলেন দিলীপ ঘোষও। দীর্ঘ বৈঠকের পর শাহের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজও সারেন তাঁরা। স্বাভাবিকভাবেই বৈঠক শেষ হতেই এবার সক্রিয় ভূমিকায় তাঁকে দেখা যাবে কি না তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন দিলীপ। তিনি এবিষয়ে বলেন, "আমায় ডেকেছিল তাই এসেছি। বাকি যা বলার দল বলবে।" সূত্রের খবর, এই বৈঠকে জনসংযোগে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শাহ।
প্রসঙ্গত, দিলীপ ঘোষ যে বঙ্গ বিজেপির সফলতম রাজ্য সভাপতি তা বলাই বাহুল্য। তিনি দায়িত্বে থাকাকালীনই বাংলায় বিজেপির শিকড় মজবুত হয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলার ১৮টি আসনে বিজেপির জয়ের নেপথ্যে দিলীপ ঘোষের অবদান অনস্বীকার্য। এখানেই শেষ নয়, তিনি রাজ্য সভাপতি থাকাকালীনই ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির আসন সংখ্যা ৩ থেকে বেড়ে ৭৭ হয়। তবে পরবর্তীতে দলে নতুন মুখ এসেছে। একদিকে নতুনদের দায়িত্ব বেড়েছে, অন্যদিকে পুরনোদের একাংশের সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সেই তালিকায় ছিলেন দাবাং নেতা দিলীপ ঘোষও। চব্বিশের লোকসভায় নিজের গড় মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে বর্ধমান পূর্ব থেকে প্রার্থী করা হয় তাঁকে। যেখানে কীর্তি আজাদের কাছে পরাস্ত হন তিনি। এরপর সময় যত এগিয়েছে, দিলীপ তত বেশি করে কোণঠাসা হয়েছেন! চলতি বছরেই মোদি ও শাহ কলকাতা সফরে এসেছেন, সভা করেছেন কিন্তু সেখানে ডাক পাননি তিনি। তা নিয়ে অভিমানও উগরে দিয়েছেন। এদিকে দিলীপ ‘ব্রাত্য’ হওয়ার পর একের পর এক নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, দিলীপ-সহ পুরনো মুখ ফিরলেই বিজেপি আবারও পায়ের নিচের মাটি শক্ত করতে পারবেন। মনে করা হচ্ছে, হারানো জমি ফিরে পেতে দিলীপকে প্রয়োজন, তা অনুভব করেছেন দলের সদস্যরাও। সেই কারণেই ছাব্বিশকে টার্গেট করে দিলীপের মান ভাঙাতে ময়দানে খোদ শাহ।
