বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: পুরভোটে দলের যেটুকু সাফল্য আসছে তা ব্যক্তিগত, দলের নয়। দাবি প্রদেশ কংগ্রেস (Congress) নেতৃত্বের একাংশের। প্রায় দু’বছর দলের রাজনৈতিক অনুশীলন বন্ধ। তাই প্রাপ্ত ভোট শতাংশ বাড়ছে না বলেও মনে করছেন তাঁরা। পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করে হাইকমান্ডকে অবহিত করার সিদ্ধান্ত নিল প্রদেশ কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী।
লোকসভায় দুই। রাজ্যসভায় এক সাংসদ। বিধানসভায় শূন্য। রাজ্যে অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে প্রদেশ কংগ্রেস। বিধানভবনে বাতি দেওয়ার লোকের অভাব। এরমধ্যেই কলকাতা-সহ পাঁচটি পুরনিগমে হাতেগোনা কয়েকজন প্রার্থী হাত চিহ্নে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেস প্রার্থীদের জয়কে দলের সাফল্য মানতে নারাজ প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury) বিরোধী গোষ্ঠী। তাঁদের যুক্তি, প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেই দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলছে প্রদেশ নেতৃত্ব। প্রার্থীদের সামান্য দলীয় পতাকা বা পোস্টার দিয়ে সাহায্য করা হচ্ছে না। অর্থ দিয়ে সাহায্য করা তো দূরঅস্ত। এমনকি যে ৪-৫ জন হেভিওয়েট নেতা এখনও কংগ্রেসের রয়েছেন হাত গুটিয়ে রয়েছেন তাঁরাও। কলকাতায় বা জেলাতে থাকলেও প্রচারে দেখা মিলছে না তাঁদের।
[আরও পড়ুন: সব্যসাচী নন, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণাই, ঘোষিত বাকি ২ পুরসভার পদাধিকারীদের নামও]
এই পরিস্থিতিতে জয়ী প্রার্থীরা ব্যক্তিগত ‘ক্যারিশমা’য় জয় ছিনিয়ে আনছেন। তাই সাফল্য কখনোই প্রদেশ নেতৃত্বের বলে দাবি করা উচিত নয় বলে মনে করেন অধীর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারা। প্রদেশ কংগ্রেসের (West Bengal Pradesh Congress) এক শীর্ষ নেতার আক্ষেপ, পরিস্থিতির কথা হাইকমান্ড কবে বুঝবে জানা নেই। এখনও বুঝতে পারছে না। বোঝার চেষ্টাও করছে না। হাইকমান্ডের মনোভাবেই তা স্পষ্ট। কারণ বেশ কয়েক মাস আগে রাজ্যের জন্য তামিলনাড়ুর এক সাংসদকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত বঙ্গে তাঁর পায়ের ধুলো পড়েনি। সব জেনেও চুপ দিল্লি।
[আরও পড়ুন: জল্পনার অবসান, ফের তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই]
পরপর দুটি পুরভোটে বামেদের (Left Fornt) প্রাপ্ত ভোট বেড়েছে। কিন্তু কংগ্রেসের বাড়েনি। এরজন্য প্রদেশ কংগ্রেসের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করেছেন বিধানভবনের একাংশ। যেকোনও রাজনৈতিক দল সারাবছর রাজনৈতিক অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে যায়। গত দু’বছর কংগ্রেসে সেই অনুশীলন বন্ধ। কোনও কর্মসূচি হয় না। কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মানুষের কাছে দলকে নিয়ে যেতে হয়। তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বামেরা রাস্তায় রয়েছে। তাই শাসক-বিরোধী ভোট খুব সামান্য হলেও বামেদের ঝুলিতেই যাচ্ছে। গোটা পরিস্থিতি জানিয়ে হাইকমান্ডের কাছে দরবার করার উদ্যোগ নিয়েছে প্রদেশের বিরোধী গোষ্ঠী।