বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: জগদীপ ধনকড়ের পর নতুন রাজ্যপাল পেল বাংলা। রাজ্যের নতুন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে একথা জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু কেরল ক্যাডারের প্রাক্তন আমলাকে রাজ্যপাল নিযুক্ত করেন। বর্তমানে তিনি মেঘালয় সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা ছিলেন। জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar) উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর লা গনেশনকে অস্থায়ী রাজ্যপালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কয়েকদিনের মধ্যেই সি ভি আনন্দ বোস বাংলার রাজ্যপালের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলে জানা গিয়েছে।
সরকারি আমলা থেকে রাজনীতি। বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্য থেকে সরকারের উপদেষ্টা। একাধারে তিনি ইংরাজি, হিন্দি ও মালয়ালি ভাষার কবি, সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক। এছাড়া গৃহ ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ। চারিদিকে ছড়িয়ে সদ্য নিযুক্ত বাংলার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কর্মকাণ্ড। সুবক্তাও। কেরল সরকারের অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের বেশ কয়েকটি মন্ত্রকের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
[আরও পড়ুন: প্রেমিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ভাইরাল হতেই ঘর থেকে উদ্ধার যুবকের দেহ, লজ্জায় আত্মহত্যা?]
শুধু রাজ্য বা দেশ নয়। বিদেশেও কাজ করার কৃতিত্ব রয়েছে। তিনি ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ, জেনেভা এবং ইন্টারন্যাশনাল ফিউশন এনার্জি অর্গানাইজেশন ও ফ্রান্সে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও অ্যাটমিক এনার্জি এডুকেশন সোসাইটির চেয়ারম্যান ছিলেন। জাতিসংঘ তাঁর উদ্যোগকে চারবার ‘গ্লোবাল বেস্ট প্র্যাকটিস’ হিসেবে বেছে নিয়েছে। ভারত সরকার তাঁকে জাতীয় বাসস্থান পুরস্কারে ভূষিত করে।
এখানেই শেষ নয়। তিনি ‘শ্রী পদ্মনাভস্বামী’ মন্দিরের কোষাগার সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটির প্রধান ছিলেন। তবে আনন্দ বোস মালয়ালি হলেও রাজনৈতিক মতাদর্শে বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষমহলের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি, বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব লা গণেশনের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে। বৃহস্পতিবারও রাজ্যপালকে নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তার কয়েক ঘণ্টা কাটতেই নতুন রাজ্যপাল নিয়োগকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক মোটেও মধুর ছিল না। বারবার রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন তিনি। রাজ্য বনাম রাজ্যপালের টুইট, পালটা টুইটে সরগরম ছিল রাজনৈতিক মহল। তবে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্তের পরই বাংলার রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দেন ধনকড়। তারপর লা গণেশন অস্থায়ী রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব সামলান। লা গণেশনের সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক বেশ মধুর। মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ির কালীপুজোয় দেখা গিয়েছে তাঁকে। এমনকী চেন্নাইয়ে লা গণেশনের দাদার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক কেমন হয়, সেটাই এখন দেখার।