সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘পটল তুললে ১০০ টাকা!’ শসা ৮০, টমেটো ২০০, কাঁচালঙ্কা ৩০০ টাকা। বাজারদর অগ্নিমূল্য। তাতেই ভাটা পড়ছে খাদ্যরসিকদের আহারে। পাত থেকে স্যালাড প্রায় উধাও হতেই বসেছে। খদ্দেরদের ফ্রি স্যালাড দিতে বিপাকে পড়ছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। ফলে বাঙালির অতি প্রিয় বিরিয়ানির পাতও স্যালাডহীন। এবং মনমরা খাদ্যরসিকরা।
বাজারে এই যদি দাম হয়, তাহলে আর ফ্রি-তে স্যালাড দেব কী করে! তাই বাধ্য হয়েই মেনুতে স্যালাড বাদ পড়েছে। সবজির দাম কমলে আবার পাওয়া যাবে।
সোমবার দুপুরে অফিসপাড়ায় প্লেটে বিরিয়ানি দেওয়ার ফাঁকে খদ্দেরের উদ্দেশে কথাগুলো বলছিলেন সুকান্ত ঘোষ। দীর্ঘদিন ধরেই অফিসবাবুদের পেট ভরান সুকান্তবাবু। বিরিয়ানি, ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন, আর চাউমিন। এই থাকে মেনুতে। তবে সবের সঙ্গেই ফ্রিতে থাকে স্যালাড আর সস। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরেই ‘গরিবের বিরিয়ানিতে’(৮০-১০০ টাকা) বাদ পড়েছে স্যালাড। চাইলে বড়জোর মিলছে পিঁয়াজ।
[আরও পড়ুন: শোভনের নামেই সিঁদুর পরেন, কিন্তু বিয়েটা কবে? ফাঁস করলেন বৈশাখী]
অন্যদিকে, রবিবার ছিল বিরিয়ানি ডে। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে তা জেনে অনেকেই ছুটেছিলেন বিরিয়ানি কিনে ‘দিবস’পালন করতে। কিন্তু অধিকাংশ ছোট দোকান থেকেই ফ্রি-তে যে স্যালাড দেওয়া হত তা এদিন মেলেনি। ব্যবসায়ীদের দাবি, শসা থেকে টম্যাটো, গাজর– সব কিছুর রাতারাতি যা দাম বেড়েছে, ফ্রি-তে দেব কী করে! ফলে বেশিরভাগের বিরিয়ানিই এদিন বিকিয়েছে স্যালাডলেস হয়ে। বড় রেস্তরাঁয় অবশ্য যে কোনও কিছুর সঙ্গেই স্যালাড কিনে খেতে হয়। ফ্রি-তে মেলে না। কিন্তু সেখানেও স্যালাডের প্লেটে এখন পিঁয়াজের পরিমাণই বেশি। কোনও কোনও জায়গায় তো টম্যাটো, শশা থাকছে নামমাত্র। খদ্দের প্রশ্ন করলেই উত্তর একই। যা দাম বেড়েছে!
একইরকম অবস্থা রাস্তার ধারের যে ছোট ফাস্ট ফুড সেন্টারগুলো রয়েছে সেগুলোরও। সেখানেও চাউমিন, চিকেন পকোড়ার সঙ্গে শুধু পিঁয়াজ মিলছে ফ্রিতে। এগরোলেও শশার দেখা নেই। রাস্তার ধারের হোটেলগুলোও সবজি ভাত খাওয়াতে গিয়ে দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে না ফ্রি-তে পিঁয়াজ, লেবুর সঙ্গে কাঁচালঙ্কা।
[আরও পড়ুন: Loreto College: বাংলা মাধ্যমের ছাত্রদের ভরতিতে না! লরেটো কলেজের নির্দেশিকা নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক]
শিয়ালদহের এক পাইস হোটেলের মালিকের কথায়, নিরামিষ সবজি ভাত ৩৫ থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা করতে হয়েছে। উপায় নেই। যেদিকে যাচ্ছে, তাতে ডিম-ভাতের থেকে সবজি-ভাতের এবার দাম বেশি হয়ে যাবে মনে হচ্ছে। মাছ-ভাত আর সবজি-ভাতের দেখব একই দাম। দিনে কয়েক লাখ মানুষের পেট ভরে শহরের এই রাস্তার ধারের হোটেলের খাওয়ার খেয়ে। তাঁরাও অবশ্য এই দামবৃদ্ধি মেনেই নিচ্ছেন। ডালহৌসি চত্বরে বেসরকারি সংস্থার কাজ করে সুব্রত সাহা। অনেক সকালে অফিসে আসেন। তাই রাস্তার ধারের হোটেলেই দুপুরে পেট ভরান। বলেন, ‘‘হোটেলের মালিককে বলে আর কী হবে! রবিবার বাজার গিয়ে তো বুঝতে পেরেছি, জিনিসের কী দাম বেড়েছে। গরিব মানুষ তো এবার না খেয়ে মরবে।’’